তুষার বিশ্বাস, গোপালগঞ্জ : শ্রেণিকক্ষে চলছিল পাঠদান। এরই মধ্যে ছাত্রছাত্রীদের নাকে আসে তীব্র দুর্গন্ধ। এটি ছিল অবিকল কীটনাশকের গন্ধের মতো। আর এতে অসুস্থ হয়ে পড়ে ২০ শিক্ষার্থী। অবস্থা বেগতিক বিবেচনায় তাৎক্ষনিকভাবে বিদ্যালয় ছুটি ঘোষণা করা  হয়। স্থানীয়ভাবে ১২ শিক্ষার্থীকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। এছাড়া অসুস্থ্য ৮ শিক্ষার্থীকে কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে হয়েছে।

আজ বুধবার সকালের দিকে এ ঘটনা ঘটে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার নারকেল বাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ে। এতে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা আতংকিত হয়ে পড়েন।

হাসপাতালে ভর্তি শিক্ষার্থীরা হল- নারকেল বাড়ি গ্রামের রিপন বৈদ্যের মেয়ে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী ঝিলিক বৈদ্য (১৪), রফিকুল ইসলামের ছেলে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র আব্দুল্লাহ খন্দকার (১২), সুরঞ্জন বৈদ্যের মেয়ে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী স্মৃতি (৯), বদরতলা গ্রামের অবির বাড়ৈর মেয়ে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী ঝুমা বাড়ৈ (১৩), হাজরাবাড়ি গ্রামের মাখন লালের মেয়ে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী রোদেলা (১৪), ভূতের বাড়ি গ্রামের লুৎফর মীরের মেয়ে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী রিয়ান্তা মীর (১৬) ও অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী রিতা হালদার (১৪)।

ওই বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী সুপ্রিয়া খানম (১২) বলে, নতুন ভবনের দ্বিতীয় তলায় ১ম ক্লাস শেষে ২য় ক্লাসে গণিত পড়ানো হচ্ছিল। ক্লাস শুরু ১০ থেকে ১৫ মিনিট পর হঠাৎ করে জানালা দিয়ে একটা বিষাক্ত গন্ধ আসে। এতে দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল। সবাই শ্বাসকষ্টে আতঙ্কিত হয়ে দ্রুত ২য় তলা থেকে নিচে নেমে স্কুল মাঠে চলে আসি। এরই মধ্যে কয়েকজন অসুস্থ হয়ে পড়ে।

নারকেল বাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মেরী দেবারতী বলেন, আমি পাশের ভবনে রাউন্ডে ছিলাম। হঠাৎ হৈ চৈ শুনে ছুটে আসি। দেখি সবাই ছোটাছুটি করছে। অনেকে শ্বাসকষ্টে অসুস্থ হয়ে পড়ে। স্থানীয়ভাবে ১২ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। অসুস্থ্য ৮ জনকে কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক দুলাল মধু বলেন, জানালা দিয়ে শ্রেণিকক্ষে কীটনাশকের মতো গন্ধ আসে। শিক্ষার্থীদের শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। সব শিক্ষার্থী শ্রেণী কক্ষ থেকে বাইরে বের হয়ে আসে। শিক্ষার্থীদের আত্মচিৎকারে বিদ্যালয় ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। তাৎক্ষণিকভাবে বিদ্যালয়ের চারিদিকে অনুসন্ধান করেও দুর্গন্ধের কোন উৎস খুঁজে পাওয়া যায়নি। সাথে সাথে প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয় ছুটি ঘোষণা করেন।

কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.কুমার মৃদুল দাস বলেন শিক্ষার্থীরা শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে আসে। আমারা প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাদের অবজারবেশনে রাখার এক ঘন্টা পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। দুর্গদ্ধে হয়তোবা আতংকিত হয়ে শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়ে। তবে এতে ভয়ের কোন কারণ নেই বলে জানান ওই স্বাস্থ্য কর্মকর্তা।

(টিবি/এসপি/আগস্ট ২৭, ২০২৫)