রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরার উপকূলীয় উপজেলা শ্যামনগরের নীলডুমুর এলাকায় ১৭ বিজিবি ব্যাটালিয়ন সংলগ্ন নদীর চর হঠাৎ দেবে যাওয়ায় চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে এলাকাবাসীর মধ্যে।

স্থানীয়রা ইউপি সদস্য রবিউল ইসলাম জানান, নদীর চর ভেঙে ও বসে যাওয়ার কারণে আশপাশের কমপক্ষে ১০টি গ্রাম ব্যাপকভাবে প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাছাড়া নদীর পানির চাপ বেড়ে যাওয়ায় চরটির দুর্বল অংশগুলো আরও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ছে।

সরজমিনে আজ বুধবার সকালে যেয়ে দেখা যায় আনুমানিক ৫০০ ফুট যায়গা জুড়ে খোলপাটুয়া নদীর পানি রক্ষা বেড়িবাঁধ সংলগ্ন চর ডেবে গিয়েছে।

বুড়িগোয়ালিনী ভামিয়া গ্রামের মাসুদ মোড়ল সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি করে বলেন, যদি জরুরি ভিত্তিতে চরটি বসে যাওয়া রোধ না করা হয় তবে কয়েকটি গ্রাম তলিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি কয়েক হাজার মানুষের জীবন ও জীবিকা হুমকির মুখে পড়তে পারে। বিশেষ করে কৃষিজমি, বসতবাড়ি এবং বিভিন্ন অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

স্থানীয়রা জানান, গত কয়েকদিন ধরে নদী ভাঙন রোধে দাবি জানানো হলেও এখনো পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তেমন কোনো কার্যকর পদক্ষেপ চোখে পড়েনি। অনেকের ধারণা, সঠিক সময়ে সংস্কার ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা না নিলে একটি ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয় নেমে আসতে পারে, যা দীর্ঘমেয়াদে উপকূলীয় নিরাপত্তার জন্যও হুমকি হতে পারে।

এ ব্যাপারে বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গত কয়েকদিন আগে নীলডুমুর ১৭ বিজিবি ব্যাটালিয়ন সংলগ্ন ৮ নাম্বার ওয়ার্ডের ইউপি সদস্যদের বাড়ির সামনে খোলপাটুয়া নদীর চর ডেবে যাচ্ছে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের জানানো হলেও আজু কোন কাজ হয় নাই।

তিনি আরো বলেন, যদি ডেবে যাওয়া স্থানটিতে জিও ভর্তি বালু বস্তু ডাম্পিং করা না হয় তাহলে আমার ইউনিয়নসহ পার্শ্ববর্তী ইউনিয়ন ও প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাছাড়া এখন মৎস্য ঘেরে মাছ চাষের সিজেন হওয়ায় প্রতিটি ঘেরে প্রচুর পরিমাণ চিংড়ি মাছ রয়েছে, আর এই এলাকা ভেঙে গেলে বহু টাকার লোকসানে পড়তে হবে এই উপকূলের মৎস্য চাষীদের।

এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী বিভাগীয় প্রকৌশলী ইমরান হোসেন এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, খুবই দ্রুত নীলডুমুর খোলপাটুয়া নদীর চর ডেবে যাওয়া স্থানে জিও বস্তা ডাম্পিং করা হবে।

ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ এলাকাবাসী অবিলম্বে পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের জরুরি হস্তক্ষেপ এবং নদীর চর সংস্কারের উদ্যোগ কামনা করেন।

(আরকে/এসপি/আগস্ট ২৭, ২০২৫)