স্টাফ রিপোর্টার : জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিহত রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যা মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন তার বাবা মকবুল হোসেন। বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরী নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ তার সাক্ষ্যগ্রহণ করেন।

ট্রাইব্যুনালের অন্য সদস্যরা হলেন- অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মঞ্জুরুল বাছিদ এবং জেলা ও দায়রা জজ নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর।

ট্রাইব্যুনালে আবু সাঈদের বাবা বলেন, ১৬ জুলাই মাঠে কাজ করে বাড়ি এসে শুনি ছেলে গুলি খেয়েছে। পরে শুনি মারা গেছে আবু সাঈদ। এটা শুনে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে।

তিনি বলেন, ছেলের পুরো বুক গুলিতে ঝাঁঝরা, শরীরে রক্ত মাখা। মাথার পেছন দিকেও রক্ত। শুনেছি আমির আলী ও সুজন গুলি করছে।

মৃত্যুর আগে ছেলে হত্যার বিচার দেখে যেতে চান বলে ট্রাইব্যুনালে আকুতি জানান আবু সাঈদের বাবা। এসময় তিনি কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।

মকবুল হোসেনের সাক্ষ্যগ্রহণের মধ্য দিয়ে আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ৩০ আসামির বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে আজ। বেচে থাকতে ছেলে হত্যার বিচার দেখে যেতে চান বলে আকুতি জানান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে।

সাক্ষীতে তিনি জানান, তার ছেলে মেধাবী ছিল। পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণিতে বৃত্তি পেয়েছে, এসএসসিতে গোল্ডেন পেয়েছে। রোকেয়া ভার্সিটিতে ইংলিশে পড়তো।

জবানবন্দিতে তিনি আরও বলেন, হাসপাতালে যাওয়ার পর প্রথমে পুলিশ তাদের মরদেহ দেখতে দেয় না। ওইদিন রাত ৩টায় মরদেহ বাড়ি আনি। প্রশাসন রাতেই দাফন করতে বলে। রাজি হইনি। পরদিন দুই জানাজা শেষে বাড়ির কবরস্থানে দাফন করি।

তিনি বলেন, ছেলের মরদেহটা ১ বার দেখি। মাথার পেছন দিয়ে রক্ত। পুরা বুকটা গুলিতে ঝাঁঝরা, রক্ত দিয়ে মাখা। শুনেছি আমির আলী ও সুজন গুলি করছে। এর কয়েক দিন আগে ছাত্রলীগ নেতা পোমেল বড়ুয়া আমার ছেলেকে গলা চেপে ধরে মেরেছে। আমার ছেলে শহীদ হয়েছ। ওইদিনের ঘটনায় ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ জড়িতদের কঠোর শাস্তি চাই। বাবা হিসেবে এই হত্যার সঙ্গে জড়িতেদর কঠোর শাস্তি চাই।

(ওএস/এএস/আগস্ট ২৮, ২০২৫)