অটোভ্যান ছিনতাইয়ের জন্য সুমনকে হত্যা, মূল হোতা গ্রেফতার

রূপক মুখার্জি, নড়াইল : নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার লাহুড়িয়া ডহরপাড়া গ্রামের বিল্লাল মোল্যার ছেলে অটোভ্যান চালক কিশোর সুমন মোল্যা (১৫) হত্যা মামলার অন্যতম আসামি শাহাদাৎ হোসেন (১৯) নামে একজন আখের রস বিক্রেতাকে গ্রেফতার করেছে যশোর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
বুধবার (২৭ আগস্ট) বিকালে যশোর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) উপ-পরিদর্শক (এসআই) রতন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) দিবাগত মধ্যরাতে উপজেলার রঘুনাথপুর এলাকায় শাহাদাৎ নামে ওই আখের রস বিক্রেতাকে তার শ্বশুরবাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতার শাহাদৎ হোসেন লোহাগড়া উপজেলার লাহুড়িয়া ইউনিয়নের তালুকপাড়া গ্রামের রমজান শেখের ছেলে।
পিবিআই ও লোহাগড়া থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মামলার বাদী মোছা. সামেলা বেগমের ছেলে কিশোর মো. সুমন মোল্যা (১৫) গত বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) সকালে অটোভ্যান নিয়ে বের হয়, এরপর আর বাড়ি ফেরেনি।
পরের দিন শুক্রবার (২২ আগস্ট) গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী উপজেলার গোপালপুর বাজার থেকে ওই অটোভ্যান উদ্ধার করা হলেও কিশোর সুমনের সন্ধান পাওয়া যায় নাই।
এ ঘটনায় শুক্রবার (২২ আগস্ট) নিখোঁজ কিশোরের মা সামেলা বেগম লোহাগড়া থানায় একটি নিখোঁজ সংক্রান্ত সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
পরে রোববার (২৪ আগস্ট) বিকালে লোহাগড়া উপজেলার কামঠানা এলাকায় বেড়িবাঁধ সংলগ্ন খালের পানিতে ভাসমান অবস্থায় সুমনের লাশ উদ্ধার করে থানা পুলিশ। পরে এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের হলে পিবিআই তথ্যপ্রযুক্তি ও সিসি টিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে শাহাদাৎ হোসেনকে সুমন হত্যার সঙ্গে সম্পৃক্ততা থাকায় গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার আখের রস বিক্রেতা শাহাদাৎ অটোভ্যানচালক সুমন হত্যার কথা স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছে তদন্ত সংস্থাটি।
জিজ্ঞাসাবাদে শাহাদাতের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী আখের ব্যবসায় ক্ষতি হয় তার, পরে দুইদিন রাজমিস্ত্রীর কাজ করে বৃষ্টির জন্য কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এরপর সে পরিকল্পনা করে সুমনের অটোভ্যানটি সে ছিনিয়ে নিবে। এরপর পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘটনার দিন বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) দুপুরে নিহত সুমনের সঙ্গে দেখা হয় শাহাদাতের পরে তাকে ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে নিয়ে যায়।
দিনভর জেলার বিভিন্ন জায়াগায় ঘুরে এদিন রাতে কামঠানা এলাকায় নিয়ে সুমনের কাছে থাকা গামছা গলায় পেঁচিয়ে সুমনকে হত্যা করে শাহাদাৎ। পরে সুমনের অটোভ্যানটি সে গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী উপজেলার গোপালপুর এলাকায় নিয়ে যায় সেখানে অটোভ্যানের চার্জ শেষ হলে অটোভ্যানটি তালা মেরে রেখে চলে আসে শাহাদাৎ। তবে অটোভ্যানের পেছনে থাকা নাম্বারে স্থানীয় লোকজন সুমনের বাড়িতে ফোন দিলে পুলিশ ভ্যানটি উদ্ধার করে সুমনের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে।
যশোর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) উপ-পরিদর্শক (এসআই) রতন বলেন, শাহাদাৎ জামিনে মুক্তি পেলে চিরতরে পলাতক হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত আসামিকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন আদালতে দাখিল করা হয়েছে।
(আরএম/এসপি/আগস্ট ২৮, ২০২৫)