সোনাতলায় হাইস্কুলের এসেম্বলিতে ‘জয় বাংলা শ্লোগান’, তদন্তে শিক্ষা অফিস

বিকাশ স্বর্নকার, সোনাতলা : বগুড়ার সোনাতলার কর্পূর দ্বিপাক্ষিক উচ্চ বিদ্যালয়ে অ্যাসেম্বলিতে "জয় বাংলা" স্লোগান দেয় কয়েক জন ছাত্র। এরা হলেন, ওই বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণীর ছাত্র সৈকত হোসেন, ইসমাইল হোসেন, রাশেদ ইসলাম ও মইনুদ্দিন। মূহুর্তে ঘটনাটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। কর্পূর বাজারের চা স্টল সহ সর্বত্রই বিষয়টি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।
সরেজমিনে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে গিয়ে জানা যায়, প্রতিদিনের ন্যায় গত ২৭ আগষ্ট (বুধবার) সকালে ছাত্র-ছাত্রীরা স্কুলে আসে। স্কুলে এসে ছাত্রছাত্রীরা নিয়ম অনুযায়ী ক্লাস শুরু পূর্বে অ্যাসেম্বলিতে দাঁড়িয়ে যায়। সেদিনো অ্যাসেম্বলিতে প্রায় ৪ থেকে ৫'শ ছাত্র-ছাত্রী দাড়ায়। এসেম্বলি শেষের দিকে বাংলাদেশ চিরজিবী হোক না বলে, দশম শ্রেণীর লাইনে দাঁড়ানো কয়েকজন শিক্ষার্থী "জয় বাংলা" বলে উচ্চস্বরে ধ্বনী দেয়।
ওই বিদ্যালয়ে শরীরচর্চা শিক্ষক শফিআলম জানান, এসেম্বলি শেষে পিছনের লাইনে দাঁড়ানো ১০ম শ্রেণীর ছাত্র সৈকত হোসেন, ইসমাইল হোসেন, রাশেদ ইসলাম ও মইন উদ্দিন এরা "জয় বাংলা' বলে উচ্চস্বরে ধ্বনী দেয়। এসময় সকল শিক্ষকই উপস্থিত ছিলেন এবং এরকম কর্মকান্ডে আমরা হতভাগ হয়ে পড়ি। পরে তাদের ডেকে আমরা জিজ্ঞেস করলে তারা জানায় এটি ভুলক্রমে হয়েছে।
ওই বিদ্যালয়ের ধর্ম শিক্ষক ছগির আল মাহমুদ জানায়, ছাত্র-ছাত্রীদের উপস্থিতিতে এমন ঘটনায় আমরা বিস্মিত।
জীব বিজ্ঞানের শিক্ষিকা মাধুরী রানী বলেন, এ ধরনের রাষ্ট্র বিরোধী স্লোগান মোটেও কাম্য নয় তবে আমরা তাদেরকে জিজ্ঞাসা করেছি তারা বলেছে ভুলবশত এটি উচ্চারিত হয়েছে।
বিদ্যালয় (ভারপ্রাপ্ত) প্রধান শিক্ষিকা তহমিনা সুলতানা বলেন, এই ঘটনার সাথে জড়িত চারজন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি আমরা গঠন করেছি। তবে ছাত্ররা অনুতপ্ত হয়ে আমাদের লিখিত দিয়েছেন এমন ধরনের স্লোগান তারা আর কখনো দেবে না বা রাষ্ট্রো বিরোধী কর্মকাণ্ডে কখনো আর নিজেদের জড়িত করবে না। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন শিক্ষক জানালেন সৈকত, ইসমাইল, রাশেদ, মইনুদ্দিন, এরা প্রচন্ড বেপরোয়া এবং প্রয়ত স্কুলে এসে নানান ধরনের বিশৃঙ্খলা মুলক কর্মকাণ্ডে নিজেদেরকে জড়াই। সেই সাথে নানান ধরনের গন্ডগোলে লিপ্ত থাকে এরা।
বেশ কিছু ছাত্র ছাত্রীরা জানালেন, এরা লেখাপড়ায় অমনোযোগী এবং অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত তারা। সেই সাথে মাঝে মধ্যেই ছাত্র-ছাত্রীদের নানান ধরনের হুমকি ধামকি ভয়-ভীতি দেখান।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শেখ নাজমুল ইসলাম বলেন, ইউএনও মহোদয়ের মাধ্যমে জেনে বিদ্যালয়ে এসে ওই ছাত্রদের ডাকলে তাঁরা বিষয়টি স্বীকার করে। সেই সাথে তারা অঙ্গীকারনামা দেয়। এতে তারা উল্লেখ করে এটি ভূল ক্রমে হয়েছে। তবে এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত আমরা গ্রহণ করবো।
বিষয়টি জানতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এর ব্যবহৃত মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি ফোনটি রিসিভ করেননি।
(বিএস/এসপি/আগস্ট ২৮, ২০২৫)