আন্তর্জাতিক ডেস্ক : আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলের নানগারহার ও কুনার প্রদেশে ভয়াবহ ভূমিকম্পে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৫০০ মানুষ। রবিবার (৩১ আগস্ট) স্থানীয় সময় রাত ১১টা ৪৭ মিনিটে আঘাত হানে ছয় মাত্রার এ ভূকম্পন। এর কেন্দ্রস্থল ছিল জালালাবাদ শহর থেকে প্রায় ২৭ কিলোমিটার দূরে এবং গভীরতা ছিল মাত্র আট কিলোমিটার।

স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দুর্গম এলাকায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ভূমিকম্পের পর একাধিক পরাঘাত অনুভূত হয়েছে। আতঙ্কে শত শত মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে খোলা আকাশের নিচে রাত কাটিয়েছেন। নানগারহারের তরুণ পোলাদ নুরি জানান, তিনি অন্তত ১৩ বার পরাঘাত গুনেছেন। তার ভাষায়, এত শক্তিশালী ভূমিকম্প জীবনে কখনো দেখিনি।

ভূমিকম্পের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ভূমিধসের কারণে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে উদ্ধারকাজ কেবল আকাশপথে চালানো সম্ভব হচ্ছে। হেলিকপ্টারে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের কুনারে পাঠানো হয়েছে, যেখানে তারা আহতদের চিকিৎসা দিচ্ছেন এবং গুরুতর আহতদের অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন। অন্যদিকে নানগারহারের হাসপাতালগুলোতে রক্তের সংকট দেখা দেওয়ায় স্বেচ্ছাসেবীরা দলে দলে রক্তদান করতে আসছেন। তালেবান সরকার আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থাগুলোর কাছে জরুরি সহায়তার আবেদন জানিয়েছে।

আফগানিস্তানের দুর্যোগপীড়িত এই অঞ্চলটি গত সপ্তাহান্তে আঘাত হানা আকস্মিক বন্যার ধকল এখনো সামলে উঠতে পারেনি। তার আগেই বিধ্বস্ত হলো শক্তিশালী ভূমিকম্পে।

স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, শুক্রবার থেকে শনিবারের মধ্যে নানগারহার ও কুনারে বন্যায় অন্তত পাঁচজন নিহত হন। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) হিসাব অনুযায়ী, এতে অন্তত ৪০০ পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

বন্যার কারণে ভূমিধস ও অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, যার ফলে সাময়িকভাবে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যকার যোগাযোগও ব্যাহত হয়। এমন পরিস্থিতিতে একই অঞ্চলে নতুন করে শক্তিশালী ভূমিকম্পে বিপর্যস্ত মানুষের দুর্ভোগ আরও বেড়ে গেলো।
তথ্যসূত্র : বিবিসি, আল-জাজিরা

(ওএস/এএস/সেপ্টেম্বর ০১, ২০২৫)