স্টাফ রিপোর্টার : মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের পদে পেশাদার কূটনীতিক ব্রেন্ট টি. ক্রিস্টেনসেনকে মনোনীত করেছেন।

হোয়াইট হাউজ এই মনোনয়নের বিষয়টি মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) দেশের সিনেটে শুনানির জন্য পাঠিয়েছে বলে জানিয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র বিভাগ।

ক্রিস্টেনসেনের দীর্ঘ কূটনৈতিক ও প্রশাসনিক অভিজ্ঞতা রয়েছে। ২০২৫ সালের ২০ জানুয়ারি তাকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ ও আন্তর্জাতিক নিরাপত্তাবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারির দায়িত্বে নিযুক্ত জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা হিসেবে মনোনীত করেন।

২০২২ সালের আগস্ট থেকে ২০২৫ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত তিনি যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত কমান্ডারের পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এ সময় তিনি কমান্ডারের কাছে ইউএসএস ট্র্যাটকমের বৈশ্বিক কৌশলগত প্রতিরোধ মিশনের পররাষ্ট্রনীতিগত প্রভাব সম্পর্কে পরামর্শ দিতেন।

সিনিয়র ফরেন সার্ভিস কর্মকর্তা হিসেবে ক্রিস্টেনসেন ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কাউন্সেলর হিসেবে ২০১৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের পলিটিক্যাল-মিলিটারি অ্যাফেয়ার্স ব্যুরোর আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও অস্ত্র হস্তান্তর অফিসের ডেপুটি ডিরেক্টর এবং হাউস ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটির এশিয়া ও প্যাসিফিক সাবকমিটির সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের স্টাফে পারসন ফেলো হিসেবেও কাজ করেছেন।

এর বাইরে তিনি বিশেষ প্রতিনিধির (উত্তর কোরিয়া নীতি) বিশেষ সহকারী, ইস্ট এশিয়া ও প্যাসিফিক অ্যাফেয়ার্স ব্যুরোর সাইবার কো-অর্ডিনেটর, ম্যানিলায় মার্কিন দূতাবাসে অর্থনীতিবিষয়ক ডেপুটি কাউন্সেলর, সান সালভাদরে মার্কিন দূতাবাসে ডেপুটি ইকোনমিক কাউন্সেলর, পররাষ্ট্র দপ্তরের পাকিস্তান ও বাংলাদেশ বিষয়ক অফিসে বাংলাদেশ কান্ট্রি অফিসার, রিয়াদে মার্কিন দূতাবাসে অর্থনৈতিক কর্মকর্তা এবং হো চি মিন সিটিতে মার্কিন কনস্যুলেট জেনারেলের ভাইস কনসাল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

পররাষ্ট্র দপ্তরের দায়িত্ব ছাড়াও ২০১৮ থেকে ২০২১ পর্যন্ত ক্রিস্টেনসেন মার্কিন ফেডারেল লেবার রিলেশনস অথরিটির অধীনে ফরেন সার্ভিস ইমপাসেস ডিসপিউটস প্যানেলের একজন ক্যারিয়ার ফরেন সার্ভিস সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ন্যাশনাল ওয়ার কলেজ থেকে ডিস্টিংগুইশড গ্র্যাজুয়েট হিসেবে শিক্ষা সম্পন্ন করেছেন এবং ২০২২ সালে ন্যাশনাল সিকিউরিটি স্ট্র্যাটেজিতে সায়েন্সে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেছেন।

এছাড়া তিনি টেক্সাস এ অ্যান্ড এম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পরিসংখ্যান এবং রাইস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতি ও ম্যানেজারিয়াল স্টাডিজে ব্যাচেলর অব আর্টস ডিগ্রি লাভ করেছেন।

ভাষাগত দক্ষতায় ক্রিস্টেনসেন স্প্যানিশ, জার্মান ও ভিয়েতনামের ভাষায় কথা বলতে পারেন এবং ফরাসি, জাপানি ও পর্তুগিজ ভাষা শিখেছেন। ২০০২ সালে ফরেন সার্ভিসে যোগ দেওয়ার আগে তিনি হিউস্টন ও নিউইয়র্ক সিটিতে ম্যানেজমেন্ট কনসালট্যান্ট হিসেবে কাজ করতেন।

ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের সর্বশেষ রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন পিটার হাস। তিনি ছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের ১৭তম রাষ্ট্রদূত। ২০২২ সালের মার্চ মাসে তিনি দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং প্রায় দুই বছর পর ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে এ দায়িত্ব থেকে বিদায় নেন।

কূটনৈতিক মহলে পেশাদার কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত পিটার হাস তার মেয়াদকালে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের বিভিন্ন দিক নিয়ে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। বিশেষ করে বাণিজ্য, মানবাধিকার, নির্বাচন এবং নিরাপত্তা ইস্যুতে তিনি প্রায়শই আলোচনায় ছিলেন।

২৪২৪ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ফরেন সার্ভিস থেকে অবসর গ্রহণ করেন। তার বিদায়ের পর থেকে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসে রাষ্ট্রদূতের পদটি শূন্য রয়েছে। তবে ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন বর্তমানে ঢাকায় অবস্থিত মার্কিন দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

(ওএস/এএস/সেপ্টেম্বর ০৩, ২০২৫)