আশাশুনিতে আওয়ামী লীগ নেতা বিজন দে হত্যা, গ্রেপ্তার ২

রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার বুধহাটা ইউনিয়নের পাইথলী ৮ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের বুধহাটা ইউনিয়নের সভাপতি পাইথলি গ্রামের বিজন কুমার দে হত্যা মামলায় পুলিশ দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে পুলিশ তাদেরকে আশাশুনির চাপড়া ব্রীজ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে বলে দাবি করেছে।
গ্রেপ্তার দেখানো দুই আসামী হলেন, আশাশুনি উপজেলার পাইথলী গ্রামের শওকত আলীর ছেলে আনিছুর রহমান (৩২) ও একই গ্রামের আদর আলী সরদারের ছেলে শরিফুল ইসলাম (৩৫)।
নিহতের স্বজনদের দাবি বিজন হত্যা মামলার মূল হত্যাকারিদের বাঁচানোর চেষ্টা চলছে।
মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা আশাশুনি থানার উপপরিদর্শক আব্দুর রহিম জানান, বুধবার সকালে চুমরিয়া গ্রামের পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধের পাশে বাবলা বাগান থেকে বিজন কুমার দে এর লাশ উদ্ধারের ঘটনায় তার ছেলে প্রণব কুমার দে বাদি হয়ে বৃহস্পতিবার থানায় একটি হত্যা মামলা (জিআর-১৫৩/২৫ আশা) মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় পুলিশ তদন্তে নেমে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে চাপড়া ব্রীজের পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে পাইথলী গ্রামের আনিছুর রহমান ও শরিফুলেেক গ্রেপ্তার করেন। তবে তারা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে কিনা সে বিষয়ে তিনি কোন কথা বলতে রাজী হননি। এমনকি তাদরেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে রিমাণ্ড আবেদন করা হবে কিনা সে প্রশ্নের উত্তর দিতে রাজী হননি ওই পুলিশ কর্মকর্তা।
এদিকে শুক্রবার বিকেল তিনটার দিকে গ্রেপ্তারকৃত আনিছুর রহমান ও শরিফুলকে আদালত চত্বরে আনা হলে সাংবাদিকদের সাথে তারা বলেন, ইউপি সদস্য শিস মোহাম্মদ জেরি পরিচয়ে ও যুবদল নেতা আবু জাহিদ সোহাগ পরিচয়ে বৃহস্পতিবার তাদের বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে রাতে থানায় নিয়ে আসেন। থানায় নেওয়ার আগে তাদেরকে শিখিয়ে দেওয়া হয় যে, বিজন দে তাদের সঙ্গে মাছ চুরি করতে গিয়েছিল মঙ্গলবার রাতে। মাছ চুরির একপর্যায়ে বিজন দে এর হার্ট এ্যাটাক হয়। বিজনকে টানতে টানতে চুমুরিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধের পাশে নিয়ে আসলে রাস্তা দিয়ে যাওয়া কয়েকজন মাছ ধরা লোককে দেখে তাকে ফেলে রেখে চলে যান তারা। বিষয়টি তার ছেলেকে মোবাইাল ফোনে জানালেও সে কোন জবাব দেয়নি। বিজনকে চোর অথবা চোরের থলিদার হিসেবে বলার জন্য তাদেরকে বলা হয়।
তবে নিহতের ভাই নির্মল দে জানান, তার ভাই বিজন দে হত্যার ঘটনাটি পরিকল্পিত। হত্যার সঙ্গে জড়িত মূল আসামীদের বাঁচাতে নতুন করে পরিকল্পনা শুরু হয়েছে।
এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা আদালতের পুৃলিশ পরিদর্শক রামপদ দাস জানান, গ্রেপ্তার দেখানো আনিছুর রহমান ও শরিফুল ইসলামকে জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম প্রথম আদালতের বিচারক নয়ন কুমার বিশ্বাসের মাধ্যমে শুক্রবার বিকেরে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
প্রসঙ্গতঃ গত মঙ্গলবার বিকেল ৫টার দিকে বাড়ি থেকে পাইথলী বাজারে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হন বিজন কুমার দে। রাতে বাড়ি ফেরেননি তিনি। বুধবার সকালে চুমরিয়া গ্রামের পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধের পাশে বাবলা বাগান থেকে স্থানীয়রা তার মরদেহ দেখতে পায়। সকাল ১০টার দিকে পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করে।
(আরকে/এসপি/সেপ্টেম্বর ০৫, ২০২৫)