রূপক মুখার্জি, নড়াইল : শেষ রক্ষা হলো না, ভেস্তে গেল ডিবি পুলিশ পরিচয়ে অপহরণের নাটক। প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে গিয়ে নিজেরাই ফেঁসে গেলেন। এ ঘটনায় কথিত ডিবি পুলিশের  তুলে নেওয়া ইব্রাহিম মোল্লা, তার স্ত্রী ইরানি খাতুন, ইব্রাহিমের ভাই রুহুল আমিন ও চাচা রমজান আলীসহ পুলিশের জালে আটক হলেন ৪ জন। 

আজ শনিবার দুপুরে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ সাজেদুল ইসলাম সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই তথ্য জানান।

পুলিশ জানায়, গত ২ সেপ্টেম্বর নড়াইল সদরের শেখহাটি ইউনিয়নের তপনবাগ গ্রামের ইব্রাহিম মোল্লাকে (৩৮) ৩ জন ডিবি পরিচয় তুলে নিয়ে গেছে এই অভিযোগ করেন ইব্রাহিম মোল্লার স্ত্রী ইরানি খাতুন।

অভিযোগকারী ইরানি খাতুন নড়াইল সদর থানায় উপস্থিত হয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন যে, তার স্বামী ইব্রাহিম মোল্লা (৩৮) ঐদিন রাত অনুমান ৩ টার সময় ৩ জন ব্যক্তি ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে তার স্বামীকে তুলে নিয়ে যায়।

অভিযোগে উল্লেখ করেন যে, তার স্বামীর সাথে একটি জলমহলের ভোগদখল নিয়ে পূর্ব শত্রুতা ও হত্যা মামলা থাকায় প্রতিপক্ষ ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে তার স্বামীকে তুলে নিয়ে গেছে।

সাজানো এই ঘটনার পরে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে উল্টো মানববন্ধন করা সহ প্রতিপক্ষের নামে মিথ্যা মামলা দায়ের ও জিডি করার জন্য বিভিন্নভাবে চাপ প্রয়োগ করে ইব্রাহিম মোল্লার পরিবার।

স্ত্রী ইরানি খাতুন এর আবেদনের প্রেক্ষিতে নড়াইল সদর থানায় একটি জিডিও করা হয়। স্পর্শকাতর এই বিষয়টি নিয়ে নড়াইলের পুলিশ জেলা সাইবার টিম সহ একযোগে কাজ শুরু করে। তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ৫ সেপ্টেম্বর ভোররাতে যশোর কোতোয়ালি থানার বকচর বিহারী কলোনি থেকে ইব্রাহিম মোল্লাকে উদ্ধার করে। ভিকটিম ইব্রাহিম তার ভাইরা ভাই ডালিম হোসেনের বাড়িতে আত্মগোপন করেছিলো।

পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ভিকটিম ইব্রাহিম মোল্লা স্বীকার করে যে, জলমহল নিয়ে বিরোধ থাকায় প্রতিপক্ষকে শায়েস্তা করতে স্ত্রী ও পরিবারের লোকজনের সাথে পরিকল্পনা করে স্বেচ্ছায় আত্মগোপন করে নাটক সাজায়।

পরিকল্পিত এই অপহরণ নাটকের সহযোগী স্ত্রী ইরানি খাতুন সহ জড়িত ইব্রাহিমের ভাই রুহুল আমিন ও চাচা রমজান আলীকে ৫ সেপ্টেম্বর নিজ নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ সাজেদুল ইসলাম জানান, মিথ্যা তথ্যে পুলিশের হয়রানী এবং প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর চেষ্টায় নড়াইল সদর থানা পুলিশের এসআই হায়াত মাহমুদ খান বাদী হয়ে সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন এবং তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে জেল-হাজতে পাঠানো হয়েছে।

(আরএম/এসপি/সেপ্টেম্বর ০৬, ২০২৫)