বাগেরহাটে একটি আসন কমানোর প্রতিবাদে তিনদিনের হরতালসহ ৫ দিনের কর্মসূচি
.jpg)
সরদার শুকুর আহমেদ, বাগেরহাট : নির্বাচন কমিশন আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাগেরহাটের একটি কমানোসহ তিনটি আসনের সীমানা সম্পূর্ন পাল্টে দেয়ার প্রতিবাদে জেলা সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি ৩ দিনের হরতালসহ আজ (রবিবার) থেকে পাঁচদিনের লাগাতর কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে।
আজ রবিবার দুপুরে বাগেরহাট প্রেসসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে জেলা সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি যুগ্ম আহবায়ক জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এম এ সালাম এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
লাগাতর এই প্রতিবাদ কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে আজ রবিবার বিকালে জেলা ও উপজেলায় বিক্ষোভ, সোমবার মোংলা বন্দরসহ জেলাব্যাপী পূর্ণদিবস হরতাল, মঙ্গলবার জেলা ও উপজেলায় বিক্ষোভ, বুধ ও বৃহস্পতিবার দুইদিন একটানা ৪৮ ঘণ্টা হরতাল পালন।
এদিকে জেলাব্যাপী সোমবারের পূর্নদিবস হরতাল সফল করতে রবিবার বিকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে বিএনপি জামায়াতসহ জেলা সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি বাগেরহাট শহরে ও একই দাবীতে বিভিন্ন উপজেলায় বিক্ষোভ মিছিল ও লিফলেট বিতরণ করে।
দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, নির্বাচন কমিশন (ইসি) গত ৩০ জুলাই আসন পুনঃনির্ধারণের খসড়ায় বাগেরহাটের চার আসন থেকে একটি বাদ দিয়ে তিন আসনের প্রস্তাব করা হয়। এ প্রস্তাবে জেলাবাসী তব্রি ক্ষোভ প্রকাশ করে আন্দোলন শুরু করে। আন্দোলনের পাশাপাশি সব রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনগুলো একত্রিত হয়ে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি গঠন করে নির্বাচন কমিশনে চারটি আসন বহালের দাবি জানিয়ে লিখিত সুপারিশও দাখিল করে। নির্বাচন কমিশনের শুনানি ইসি জনমতের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে চারটি আসন বহাল রাখবে, এমন প্রত্যাশায় আন্দোলন থেকে সরে এসেছিল বাগেরহাটবাসী। কিন্তু ইসি গত ৪ সেপ্টেম্বর প্রজ্ঞাপন জারি করে বাগেরহাটের চারটি আসন কমিয়ে তিনটি আসনে নামিয়ে আনে। পাশাপাশি তিনটি আসনেই নতুন নতুন উপজেলা সংযুক্ত করে সীমানা সম্পূর্ন পাল্টে দেয়। এতে জেলার প্রায় ১৮ লক্ষাধিক মানুষের হৃদয় বিদীর্ণ দেয়। ইসির এই এমন হটকারি সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক ও বেআইনি। জনমতের প্রতি কোনো শ্রদ্ধা না দেখিয়ে ইসি জেলাবাসীর ন্যায্য দাবি উপেক্ষা করেছে। এর প্রতিবাদে এবং চারটি আসন বহালের দাবিতে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি পাঁচ দিনব্যাপী ধারাবাহিক কর্মসূচি ঘোষণা করা হয় সংবাদ সম্মেলন থেকে।
সংবাদ সম্মেলনে বাগেরহাট জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এম এ সালাম, বিএনপির সাবেক এমপি শেখ মুজিবর রহমান, জেলা বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক শেখ কামরুল ইসলাম গোরা, খাদেম নিয়ামুন নাসির আলাপ, ব্যারিষ্টার শেখ জাকির হোসেন, খান মনিরুল ইসলাম, ফকির তারিকুল ইসলাম, সৈয়দ নাসির আহমেদ মালেক, জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা রেজাউল করিম, জেলা জামায়াতের সেক্রেটারী সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির সদস্য সচিব শেখ মুহাম্মদ ইউনুস, জেলা জামায়াত নেতা এস এম মঞ্জুরুল হক রাহাতসহ জেলার বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, নির্বাচন কমিশনের গেজেটে বাগেরহাট জেলার চারটি সংসদীয় আসন থেকে একটি কমানোর পাশাপাশি বাগেরহাট-১ (চিতলমারী, ফকিরহাট ও মোল্লাহাট) থেকে ফকিরহাট উপজেলাকে কেটে দিয়ে বাগেরহাট-২ আসনের সাথে বাগেরহাট সদর উপজেলাকে বাগেরহাট- ১ আসনের সাথে।
বাগেরহাট-২ (বাগেরহাট সদর, কচুয়া ও রামপাল) আসন থেকে বাগেরহাট সদর, কচুয়াকে বাদ দিয়ে ফকিরহাট- রামপাল ও মোংলা উপজেলাকে নিয়ে বাগেরহাট- ২ আসন ও বাগেরহাট-৩ (মোরেলগঞ্জ ও শরণখোলা ও মোংলা) আসন থেকে মোংলাকে বাদ দিয়ে কচুয়া উপজেলাকে সংযুক্ত করে বাগেরহাট- ৩ আসন গঠন করেছে। ইসির এমন সিদ্ধান্তের পর বাগেরহাট জেলাজুড়ে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিবাদে বিএনপি, জামায়াতসহ বিভিন্ন দলের সমন্বয় ঐক্য পরিষদ পাঁচদিনের কঠোর এই প্রতিবাদ কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নেমেছে।
(এস/এসপি/সেপ্টেম্বর ০৭, ২০২৫)