কালিগঞ্জে সুনীল মণ্ডলের জমিতে লুটপাট-ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ, ৭ দিনে কোন গ্রেপ্তার নেই

রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার চম্পাফুল বাজারে সুনীল মণ্ডলের জমিতে লুটপাট, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। গত ৭ দিনেও কোন আসামি গ্রেপ্তার না হওয়ায় হতাশার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন নির্যাতিত পরিবারের সদস্যরা। মামলায় প্রধান আসামিরা হলেন চম্পাফুল গ্রামের বেলায়েত গাজীর ছেলে সামাদ গাজী ও তার ছেলে আলমগীর কবীর।
চম্পাফুল বাজারের সুনীল মণ্ডলের স্ত্রী মাধবী রানী মণ্ডল জানান, একই গ্রামের আব্দুস সামাদ গাজী (৬৫) ও তার ছেলে আলমগীর কবীরের (৪৫) সাথে তাদের জমি নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধ রয়েছে। তিন ভাপোকে হত্যা মামলার অভিযোগে ভাই গফুর গাজীর দায়েরকৃত দুটি মামলা ও স্থানীয় এক হিন্দু গৃহবধূ ধর্ষণ মামলার আসামী আব্দুস সামাদ গাজী। সাইহাটি গ্রামের রোমেছা খাতুন ও তার ছেলে আবু সাঈদকে হত্যার পর লাশ গুমের অভিযোগ রয়েছে সামাদ গাজীর বিরুদ্ধে। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়ায় সামাদ গাজী ও তার ছেলে আলমগীর কবীরের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না।
গত ১৮ আগষ্ট সকাল ৬টা থেকে ২৭ আগষ্ট বিকেল পর্যন্ত সামাদ গাজী ও তার ছেলে আলমগীরের নেতৃত্বে ৪০/৫০ জন ভাড়াটিয়া সশস্ত্র সন্ত্রাসী তাদের দখলীয় ও পৈতৃক জমি জবরদখলের উদ্দেশ্যে জমিতে তাদের (মাধবী) লাগানো নরিকেল, তাল, সুপারী, বেল, আম ও কলাগাছসহ কমপক্ষে ১০ প্রজাতির শতাধিক গাছ কেটে, ফল ও সবজি মিলিয়ে তিন লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুট করা হয়। বাড়ির জিনিসপত্র লুটপাট করে। তুলসী বেদী ভাঙচুর করে। জমির চারিদিক, বাড়ির উঠানসহ বিভিন্ন স্থানে বাঁশের বেড়া দিয়ে জমি জবরদখলের জন্য তাদেরকে অবরুদ্ধ করে ফেলে। শত শত নারী ও পুরুষ ঘটনা দেখলেও প্রভাবশালী ও হিংস্র সামাদ গাজীর ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পায়নি।
গত ২ সেপ্টেম্বর আনুমানিক দিবাগত রাত দেড়টা থেকে দুটোর মধ্যে অর্থাৎ ৩ সেপ্টেম্বর তাকে (মাধবী) ও তার পরিবারের সদস্যরা ঘুমিয়ে থাকাকালিন কে বা কাহারা বসতবাড়ি সংলগ্ন কাঠঘরে আগুন লাগিয়ে দেয়। তার আশঙ্কা পূর্ব বিরোধকে কেন্দ্র করে উচ্ছেদের মামলার (দেঃ ৪৮৮/২১) রায় ঘোষণার আগেই সামাদ গাজী ও আলমগীর কবীরসহ তাদের ভাড়াটিয়া লোকজন রাতের আঁধারে তার কাঠঘরে আগুন লাগিয়ে পরবর্তীতে বসতঘরে শুয়ে থাকা তাকে ও তার পরিবারের সদস্যদের পুড়িয়ে হত্যা করতে চেয়েছিল। এ ঘটনায় তিনি বাদি হয়ে গত ৭ সেপ্টেম্বর থানায় মামলা করেন। মামলায় সামাদ গাজী ও আলমগীর কবীরসহ অজ্ঞাতনামা ৫০ জনকে আসামি শ্রেণীভুক্ত করা হয়। এ ছাড়া লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ কমল মণ্ডল ভূমিকা রেখেছেন মর্মে তিনি বিষয়টি তদন্তকারি কর্মকতাকে অবহিত করেছেন। আসামীরা বাড়িতে অবস্থান করাকালিন ছাড়াও আদালত পাড়াসহ বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়ালও হত ৭ দিনে পুলিশ তাদেরকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা কালিগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক সমীর গাইন জানান, তার অসুস্থ মাকে নিয়ে ঢাকার একটি হাসপাতালে অবস্থান করছেন তিনি। কালিগঞ্জে ফিরেই তিনি পরবর্তী পদক্ষেপ নেবেন।
(আরকে/এসপি/সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২৫)