তুষার বিশ্বাস, গোপালগঞ্জ : গোপালগঞ্জে ভূয়া ডাক্তার মো: রেজাউল করিম শেখকে (৪২) তিন মাসের কারাদন্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমান আদালত। এসময় মুকসুদপুর উপজেলার আদমপুর নতুন বাজারের ওই চিকিৎসকের চেম্বার আল করিম ফার্মেসী সিলগালা করে দেওয়া হয়।  

আজ সোমবার দুপুরে ভ্রাম্যমান আদালতের বিচারক ও গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাহরিয়ার আহমেদ এ আদেশ দেন।

এ সময় মুকসুদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রায়হান ইসলাম শোভন, গোপালগঞ্জের ড্রাগ সুপার বিথী রানী মণ্ডল,পুলিশ ও আনসার-ব্যাটালিয়ন সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সাজাপ্রাপ্ত মো: রেজাউল করিম শেখ মুকসুদপুর উপজেলার আদমপুর গ্রামের আতর আলীর ছেলে। ব্যবস্থাপত্রে তার নামের আগে ডাক্তার লেখা হয়েছে। নামের পরে ডি.এম.এ ঢাকা ডিগ্রি যুক্ত করা হয়েছে। তিনি কোমড়, বাত, হাটু ব্যাথা, চর্ম, এলার্জী, ডায়াবেটিস ,মা ও শিশু স্বাস্থ্য মেডিসিনে অভিজ্ঞ বলে উল্লেখ করেছেন। এছাড়া বিভিন্ন প্রকার অপারেশন ও দাঁত তোলায় বিশেষ অভিজ্ঞ বলেও সেখানে লিখে রেখেছেন।

এ ব্যাপারে মুকসুদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রায়হান ইসলাম শোভন বলেন, মো: রেজাউল করিম শেখের কোন চিকিৎসা সনদ বা প্রশিক্ষণ নেই। তিনি নামের আগে ডাক্তার শব্দ ব্যবহার করেছেন। রোগী দেখে ব্যবস্থাপত্র লিখে দিতেন। তিনি রোগী ভর্তি রেখে অস্ত্রোপচারও করে আসছিলেন। অস্বাস্থ্যকর টিনশেডের চেম্বারে রোগী ভর্তি রাখাতেন। তিনি তার চেম্বারের ফার্মেসীতে লাইসেন্সবিহীন ওষুধ বিক্রি করতেন। এছাড়া তার ফার্মেসীতে বিপুল পরিমাণ মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ মজুত ছিল। স্বাক্ষ্য-প্রমান গ্রহন শেষে ভ্রাম্যমান আদালতের বিচারক তাকে দোষী সাব্যস্ত করে ৩ মাসের কারাদন্ড ও ১ লাখ টাকা জরিমানা করেন। ভ্রাম্যমান আদলতের ফোর্স তাকে গোপালগঞ্জে নিয়ে যায়। পরে তাকে জেলা কারাগারে পাঠোনো হয়েছে বলে জানতে পেরিছি। এছাড়া তিনি চিকিৎসায় অপ্রয়োজনীয় এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করতেন। তার চেম্বারে প্রসূতি মৃত্যু ও অঙ্গহানীর ঘটনাছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করে আসছিলেন। তবে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনার সময় প্রসূতি মৃত্য ও অঙ্গহানীর কোন প্রমান পাওয়া যায়নি বলে জানান ওই কর্মকর্তা।

আদমপুর বাজারের বাসিন্দা তাইজুল হোসেন জানিয়েছেন,রেজাউল করিম ৯ বছর আগে আদমপুর নতুন বাজার মসজিদ এলাকায় আল করিম ফার্মেসী শুরু করেন। পরে তিনি সেখানে চেম্বার খুলে ভূয়াডিগ্রী ব্যবহার করে রোগী দেখে ব্যবস্থাপত্র দেওয়া শুরু করেন। এছাড়া চেম্বারে রোগী ভর্তি করে অস্ত্রপচার করে আসছিলেন। একটি ব্যবস্থাপত্রে তিনি দামি দামি একাধিক এন্টিবায়োটিক লিখতেন ও লাইসেন্সবিহীন ওষুধ বিক্রি করতেন।

(টিবি/এসপি/সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২৫)