সরদার শুকুর আহমেদ, বাগেরহাট : বাগেরহাট জেলার চারটি সংসদীয় আসন বহাল করতে কেন নির্দেশনা দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একই সাথে বাগেরহাটের চারটি আসন থেকে একটি কমিয়ে তিনটি আসন করে দেয় নির্বাচন কমিশনের গেজেটও কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, সে বিষয়টিও রুলে জানতে চাওয়া হয়েছে। নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্টদের আগামী ১০ দিনের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলেছে হাইকোর্ট। 

আজ মঙ্গলবার বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চ শুনানী শেষে এ রুল জারি করেন।

রিট পিটিশনার বাগেরহাট প্রেসক্লাবসহ অন্যন্যদের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার শেখ মুহাম্মদ জাকির হোসেন বাগেরহাট জেলার চারটি সংসদীয় আসন বহাল নিয়ে হাইকোর্টে রুল জারি বিষয়টি নিশ্চিত করে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মোবাইল ফোনে জানান, আমরা রিট পিটিশন করেছি। শুনানিতে আদালত আমাদের কথা শুনেছেন। বাগেরহাট জেলার চারটি সংসদীয় আসন বহাল করতে কেন নির্দেশনা দেওয়া হবে না, একই সাথে বাগেরহাটের চারটি আসন থেকে একটি কমিয়ে তিনটি আসন করে দেয় নির্বাচন কমিশনের গেজেটও কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে রুল জারি করে নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্টদের আগামী ১০ দিনের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলেছে হাইকোর্ট। আশা করি আদালতে আমরা ন্যায় বিচার পাবো। বাগেরহাটের চারটি আসনই বহাল থাকবে।

উল্লেখ্য, নির্বাচন কমিশন গত ৩০ জুলাই দুপুরে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাগেরহাট জেলার চারটি সংসদীয় আসনের মধ্যে একটি আসন কমিয়ে তিনটি আসন করার প্রাথমিক প্রস্তাব দেয়। এরপর থেকেই বাগেরহাটবাসী জেলার চারটি সংসদীয় আসন বহারের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে। বিএনপি জামায়তসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল লিখিত আপত্তি জানিয়ে নির্বাচন কমিশনের শুনানিতে অংশ গ্রহণ করেন। পরে ৪ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশন তাদের প্রস্তাবিত সীমানা পরিবর্তন করে বাগেরহাট জেলাকে তিনটি সংসদীয় তিনটি আসনে ভাগ করে চুড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করে।

বাগেরহাটের এই সংসদীয় আসন নিয়ে ইসির চুড়ান্ত গেজেট প্রকাশের পরই প্রতিবাদে ফুঁসে ওঠে জেলাবাসী। গণমানুষের দাবিকে উপেক্ষিত হওয়ায় বিএনপি জামায়াতসহ সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির ব্যানারে শুরু হয় হরতাল, মহাসড়ক অবরোধ, নির্বাচন অফিসসহ জেলার সব সরকারি অফিস ঘেরাও ও অবরোধের লাগাতর কর্মসূচি।

স্বাধীনতার পর থেকে বাগেরহাট জেলায় চারটি বাগেরহাট-১ (মোল্লাহাট-ফকিরহাট-চিতলমারী), বাগেরহাট-২ (বাগেরহাট সদর-কচুয়া), বাগেরহাট-৩ (রামপাল-মোংলা) বাগেরহাট-৪ (মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা) সংসদীয় আসন ছিল।

বর্তমানে ইসির চুড়ান্ত গেজেটে একটি আসন কমিয়ে বাগেরহাট জেলাকে তিনটি সংসদীয় তিনটি আসনে বাগেরহাট-১ (বাগেরহাট সদর-চিতলমারী-মোল্লাহাট), বাগেরহাট-২ (ফকিরহাট-রামপাল-মোংলা) ও বাগেরহাট-৩(কচুয়া-মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা) ভাগ করে চুড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করে।

(এস/এসপি/সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৫)