চারটি সংসদীয় আসন বহালের দাবি
বাগেরহাটে দ্বিতীয় দিনেও জেলার সব নির্বাচন অফিসে অবস্থান ধর্মঘট
.jpg)
সরদার শুকুর আহমেদ, বাগেরহাট : বাগেরহাট জেলার চারটি সংসদীয় আসন পুর্ণবহলের দাবিতে দ্বিতীয় দিনেও নয়টা থেকে দুপুর একটা পর্যন্ত আধাবেলা জেলা ও ৯টি উপজেলা নির্বাচন অফিস ঘেরাও করে অবস্থান ধর্মঘট পালন করেছে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি।
আজ বুধবার সকাল ৯টার আগেই বিভিন্ন স্থান থেকে মিছিল নিয়ে বিএনপি জামায়তসহ সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির শতশত নেতাকর্মীরা জেলা ও উপজেলার সব নির্বাচন কার্যালয়ের সামনে এসে জড়ো হয়ে প্রধান গেট ঘিরে রেখে অবস্থান নেয়। এতে করে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অফিসে প্রবেশ করতে পারেনি। দুপুর একটা পর্যন্ত আধাবেলা বন্ধ হয়ে যায় জেলা সব নির্বাচন অফিসের দৈনন্দিক কর্মকান্ডসহ নাগরিক সেবা। এই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে জেলার সব নির্বাচর অফিসে নেয়া হয় পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যাবস্থা। কর্মসূচি পালনকে কেন্দ্র করে বাগেরহাট শহরসহ কোন ৯টি উপজেলায় অপ্রতিকর ঘটনা ঘটেনি।
বৃহস্পতিবারও সকাল নয়টা থেকে দুপুর একটা পর্যন্ত আধাবেলা জেলা ও ৯টি উপজেলা নির্বাচন অফিস ঘেরাও করে অবস্থান ধর্মঘটের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি। দুপুরে জেলা নির্বাচন অফিসের সামনে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির আহবায়ক ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এম এ সালাম বলেন, বৃহস্পতিবারও আধাবেলা জেলা ও ৯টি উপজেলা নির্বাচন অফিস ঘেরাও করে অবস্থান ধর্মঘট পালনের ঘোষনা দিয়ে বলেন, হিন্দু ধর্মালম্বীদের দূর্গাৎসবের কারণে জেলাব্যাপী দুই দিনের অর্ধ দিবস হরতাল, মহাসড়ক অবরোধ কর্মসূচি স্থগিত করা হলেও জেলার সব নির্বাচন অফিস বুহস্পতিবার আধাবেলা অবস্থান ধর্মঘট কর্মসূচি চলবে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আইনি লড়াইয়ের পাশাপাশি রাজপথে আরো কঠোর আন্দোলন চালিয়ে যাওয় হবে।
সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির সদস্য সচিব ও জেলা জামায়েতের সেক্রেটারি শেখ মুহাম্মাদ ইউনুস বলেন, আমাদের দায়ের করা রিট পিটিশনে জেলার চারটি সংসদীয় আসন বহাল রাখার নির্দেশনা কেন দেওয়া হবে না ও একই সাথে বাগেরহাটের চারটি আসন থেকে একটি কমিয়ে তিনটি আসন করে নির্বাচন কমিশনের গেজেটও বাতিল ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্টদের আগামী ১০ দিনের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, দূর্গাৎসবকে সামনে রেখে ব্যবসায়ীদের ক্ষতি ও সাধারণ মানুষের ভোগান্তির কথা মাথায় রেখে আমরা হরতালের মতো কঠোর কর্মসূচি আপাতত স্থগিত করেছি। আমরা আইনি লড়াইয়ের পাশাপাশি যদি পর্যন্ত জেলার চারটি আসন না ফিরে পাব, ততদিন পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষনা দেন এই নেতা।
স্বাধীনতার পর থেকে বাগেরহাট-১(মোল্লাহাট-ফকিরহাট-চিতলমারী), বাগেরহাট-২(বাগেরহাট সদর-কচুয়া), বাগেরহাট-৩ (রামপাল-মোংলা) বাগেরহাট-৪ (মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা) নামে জেলায় চারটি সংসদীয় আসন থাকলেও ৪ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশন বাগেরহাট জেলার চারটি সংসদীয় আসন থেকে একটি আসন কমিয়ে ৩টি করার গ্রেজেট প্রকাশ করে। চুড়ান্ত গেজেট বাগেরহাট-১ (বাগেরহাট সদর-চিতলমারী-মোল্লাহাট), বাগেরহাট-২ (ফকিরহাট-রামপাল-মোংলা)ও বাগেরহাট-৩ (কচুয়া-মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা) নামে তিনটি সংসদীয় আসনে বিন্যাস করা হয়।
নির্বাচন কমিশনের এই গেজেট প্রকাশের পরপরই ক্ষুব্দ বিএনপি, জামায়তসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি গঠন করে বাগেরহাট জেলার চারটি সংসদীয় আসন বহাল রাখার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল, প্রতিবাদ সমাবেশ, সকাল-সন্ধ্য হরতাল, মহাসড়ক আবরোধ, জেলার সব সরকারি অফিস বন্ধ, সব নির্বাচন অফিস ঘেরাও করে অবস্থান ধর্মঘট পালন করে জেলাব্যাপী লাগাতর আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে।
(এস/এসপি/সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২৫)