সরদার শুকুর আহমেদ, বাগেরহাট : বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার বারুইখালী ইউনিয়নের পশ্চিম বারুখালী গ্রামে ঘটে গেছে হৃদয়বিদারক এক ঘটনা। সম্পত্তি লিখে না দেওয়ায় দুই ছেলের নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ৭০ বছরের বৃদ্ধ বাবা শেখ আব্দুল হক। রাতভর পিটিয়ে ঘরে আটকে রাখার পর প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে গিয়ে শেষ পর্যন্ত আশ্রয় নিয়েছেন হাসপাতালে।

বর্তমানে বাগেরহাট জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আব্দুল হক কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমি তো সারাজীবন ছেলেদের জন্যই খেটেছি। এখন তারা আমাকে মেরে ফেলতে চায়, শুধু সম্পত্তির জন্য।

তিনি বলেন, আমার মেঝো ছেলে সোহাগ শেখ দীর্ঘদিন কুয়েতে ছিলেন। দেশে ফিরে এসে আমাকে বাড়িঘর ও জমি লিখে দেওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে। অপরদিকে ছোট ছেলে মানিক শেখ মাদকাসক্ত। গত বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকালে মানিক মসজিদের নামে দান করা জায়গা ও দোকানঘর নিজের নামে লিখে দিতে জোরাজুরি করে। এতে অস্বীকৃতি জানালে সে হাতুড়ি দিয়ে আমার মাথায় আঘাত করে। একপর্যায়ে সোহাগও যোগ দিয়ে আমাকে মারপিট করে গুরুতর আহত করে ঘরের ভেতর আটকে রাখে। মৃত্যুভয়ে রাত ৩টার দিকে দ্বিতীয় স্ত্রী জাহানুর বেগমের সহায়তায় বাড়ী থেকে পাতালে সক্ষম হই। খবর পেয়ে আমার বড় ছেলে জলিল শেখ চট্টগ্রাম থেকে রওনা হয়েছে।

আব্দুল হকের দ্বিতীয় স্ত্রী জাহানুর বেগম বলেন, সেদিন রাত ৩টার দিতে প্রাণভয়ে গোপনে স্বামীকে নিয়ে প্রতিবেশীর বাড়িতে আশ্রয় নিই। পরদিন ফেরিঘাট এলাকায় আত্মগোপন করলেও মানিক আবারও লোকজন নিয়ে হামলা চালায়। শেষ পর্যন্ত শুক্রবার বিকালে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে বাগেরহাট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

অভিযোগের বিষয়ে মানিক শেখকে মুঠোফোনে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি উল্টো ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, আমার বাপ কোথায় আছে আমি খুঁজছি। প্রশ্ন করতে চাইলে আমাদের গ্রামে আসবেন বলে জানান তিনি।

মোরেলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাকিবুল হাসান জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই, এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(এস/এসপি/সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৫)