মানবিকতার পথে নীরব সমাজসেবক শক্তি ডি গুপ্তা

রিয়াজুল রিয়াজ ও দিলীপ চন্দ, ফরিদপুর : ফরিদপুর শহর পেরিয়ে সদর উপজেলা এলাকায় প্রতিটি অলিগলির প্রায় প্রতিটি গণমানুষের কাছে খুবই পরিচিত একটি নাম শক্তি ডি গুপ্তা। মানবিকতা ও সমাজসেবায় তিনি ফরিদপুরের মানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছেন মুলতঃ মানুষের প্রতি তাঁর শ্রদ্ধাবোধ ও নিখুঁত ভালোবাসার কারণে।
সুফী শেখ ফরিদের জেলা ফরিদপুরে সমাজসেবক বা দানবীরের অভাব নেই, অনেকেই তাঁদের কাছে গিয়ে সমস্যার কথা খুলে বললে তাঁদের থেকে সাহায্য সহযোগিতাও পেয়ে থাকেন বটে। কিন্তু ওসব দানবীর থেকে সহজেই শক্তি ডি গুপ্তাকে আলাদা করা যায়! কারণ, শক্তি ডি গুপ্তা সত্যিকার অর্থে যে, অনেকের থেকে একটু ব্যতিক্রমভাবে মায়া মমতা সহকারে ভালোবাসতে পারেন প্রতিটি শ্রেনী পেশার মানুষকে। ছোটবেলা থেকেই তিনি এমন একজন মানবিক গুণাবলী সম্পন্ন দানশীল ব্যক্তি যার নিকট এসে কোনো অহসায় ব্যক্তিকে আবেদন করতে হয় না বরং তিনি কোনো মানুষের অসুবিধার কথা কোনোভাবে জানতে পারা মাত্রই, নিজেই ছুটে যান তাঁর কাছে। অতঃপর প্রিয়জন বা স্বজনের মতো করে পরম মায়া, মমতা ও ভালোবাসায় তাঁর সমস্যা সমাধান করে চলে এসেছেন নীরবে নিবৃতে। সাথে নিয়ে এসেছেন ওই ব্যক্তির কৃতজ্ঞতা মাখা এখটুখানি নির্ভেজাল হাসি। এমন কাজ তিনি পৃথিবীর যে প্রান্তেই থাকেন না কেনো, ফরিদপুরের মানুষের জন্য তা বাধা হয়নি কখনোই। অনেক সময় দেখা গেছে- তিনি কোনো কাজে দেশের বাইরে আছেন, কোনো এক গরীব অসহায় পরিবারের একটি প্রতিবন্ধী শিশুর একটি হুইল চেয়ারের অভাবে ভুগছেন এমন খনর তিনি গণমাধ্যম বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বরাতে জানতে পেরেছেন। তিনি তৎক্ষনাৎ তাঁর স্বেচ্ছাসেবক টিম পাঠিয়ে ওই শিশুর সুবিধামতো হুইল চেয়ারের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। এভাবে ফরিদপুরের ব্যক্তি থেকে ব্যক্তি, অলিগলিতে অসহায়দের পাশে থাকতে থাকতে নিজের অজান্তেই ফরিদপুরের অসহায় জনতার মানবতার ফেরিওয়ালা হয়ে উঠেছেন যে যুবক, তিনিই তো ওই গণমানুষের সুহৃদ শক্তি ডি গুপ্তা ওরফে শক্তি দা।
এমন হাজারো মানুষের প্রতি মানবপ্রেম ও এলাকার অহসায় মানুষের পাশে থাকার আনন্দ এবং তাদের পরিতৃপ্তি পুর্ণতার হাসিমাখা মুখগুলোর দেখে মনের প্রশান্তির নেশাটুকু পুরোপুরি পেয়ে বসে তাঁকে। যার ফলশ্রুতিতে একজন সাধারণ যুবক শক্তি ডি গুপ্তা কখন যে ফরিদপুরের অন্যতম সমাজসেবক হয়ে উঠেন, তা তিনি নিজেও বুঝতে পারেন না।
তাইতো, মানবপ্রেমের বিনা সূতায় অদৃশ্য বাধনে আবদ্ধ হয়ে শক্তি ডি গুপ্তা ২০২৩ সাল থেকে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেন, তিনি ফরিদপুরের মানুষের জন্য এ মানবিক কাজগুলো বৃহৎ পরিসরে আমৃত্যু করে যাবেন। সেই ভাবনা থেকে কাজ শুরু করে মানবতার নতুন পথ সাজান তিনি। এসময় তাঁর সমমনা বন্ধু-বান্ধব নিয়ে গঠন করেন একটি সুবিশাল স্বেচ্ছাবসক টিম। অসহায় মানুষের অকৃত্রিম সেবার ব্রত নিয়ে তাঁদের স্বেচ্ছাসেবক টিমকে তথ্যানুসন্ধানের মাধ্যমে খুঁজে বের করতে বললেন কিছু অসহায় নারী-পুরুষকে, যাদের সবাইকে তিনি সাহায্য করবেন। এ কাজে তাঁরা দরিদ্র অসহায় মানুষের পাশাপাশি এমন কিছু মানুষকে খুঁজে বের করলেন, যারা কেউ একটি সেলাই মেশিন হলে নিজে উপার্জন করতে সক্ষম, কেউ একটি ভ্যান বা রিক্সা হলে পরিবারের হাল ধরতে পারবেন, কেউ সামান্য কিছু টাকা হলে চায়ের দোকান দিতে পারবেন এমন কিছু ব্যক্তিদের। তিনি তাঁদের সবাইকে সাহায্য করলেন, তদারকি বা খোঁজখবর নিলেন। কিছুদিন পর তারা স্বাবলম্বী হলেন, হাসলেন তৃপ্তির হাসি। আর ওই হাসিটুকুর নেশাই যে শক্তি ডি গুপ্তার একান্ত কামনা, মানুষের সুখে যে খুঁজে পেয়েছেন নিজের মনোমন্দিরের প্রকৃত সুখ। এমন শতশত মানুষের ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতাবোধের গভীর মায়ার টান, আজকের ফরিদপুরের মানুষের আপনের চেয়েও আপনজন, প্রিয় থেকে প্রিয়জনে পরিনত করেছে শক্তি ডি গুপ্তাকে।
সম্পুর্ণ অসাম্প্রদায়িক চেতনার বিশ্বাসী এই ব্যক্তিটি কখনোই তাঁর মানবিক কাজে ধর্ম,বর্ণ জাত, কুল দেখেননি। তাঁর নিকট ব্যক্তি, মানুষ ও মানবতাই প্রধান্য পেয়েছে সব সময়। তাইতো, শক্তি ডি গুপ্তা তাঁর স্বেচ্ছাসেবক টিম নিয়ে প্রবিত্র মাহে রমজানে গরীব অসহায় ও পথের মানুষের মাঝে ইফতার বিতরণ করে গেছেন প্রায় সারা রমজান মাস জুড়ে। অসহায় দরিদ্র মানুষের মাঝে ঈদের আনন্দ বিলিয়ে দিতে তাদের ঈদ উপহার হিসেবে দিয়েছেম নতুন জামা- কাপড় ও সেই সাথে তাদের পরিবারে পৌঁছে দিয়েছেন ঈদ বাজার। প্রচার বিমুখ এই সমাজসেবক এসব বিতরণের ক্ষেত্রে কখনোই দান বা অনুদান হিসেবে মনে করেন নাই কোনোদিনও, বরং তা ''ঈদ উপহার'' হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন সব সময়। মনের গভীর থেকে নির্ঘাত মানবতা অনুধাবন করে সততা ও মমতার সাথে প্রকৃত অসহায়দের মাঝে একইভাবে হাসি ফুটিয়ে যাচ্ছেন এখনও।
এছাড়া হিন্দু সম্প্রদায়ের বিভিন্ন পূজা, কীর্তন সহ নানা ধরণের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে নিয়মিত সাহায্য সহযোগিতা করে যাচ্ছেন সমান তালে।
এরই ধারাবাহিকতায় গত ২১ সেপ্টেম্বর বিকেলে ফরিদপুর পৌর মহাশ্মশান ঘাটে ভক্ত-সেবায় প্রসাদ গ্রহণের জন্য বসার ব্যবস্থা করে দেন শক্তি দা। তিনি পূরণ করেন তাদের বহুদিনের আকাঙ্ক্ষা ও চাওয়া। এ উদ্যোগকে ঘিরে ভক্তবৃন্দের মধ্যে সৃষ্টি হয় আনন্দের জোয়ার। স্থানীয়রা মনে করেন, এটি কেবল বসার জায়গা নয়—বরং এটি এক মহৎ হৃদয়ের মানুষের ভালোবাসা ও মানুষের প্রতি তাঁর দায়বদ্ধতার বহিঃপ্রকাশ।
এসময় শ্মশান উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণ কমিটি জানায়, “দীর্ঘদিন ধরে ভক্তদের জন্য এ ধরনের উদ্যোগের প্রয়োজন ছিল। শক্তি ডি গুপ্তা সেই দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন। এর মাধ্যমে তিনি আবারও প্রমাণ করেছেন যে, তিনি সত্যিই একজন নিরহংকারী সমাজসেবক।'
এছাড়া এই গুণী সমাজসেবক এবারের আসন্ন শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে ২ হাজার ৫০০ গরীব ও অসহায় পরিবারের মাঝে পুজার উপহার বিতরণ করেছেন।
তাছাড়া, ফরিদপুরের মানুষের মাঝে মামবিকতার এক উজ্জল দৃষ্টান্ত স্থাপন করা সমাজসেবক শক্তি ডি গুপ্তা জেলায় বিভিন্ন শিক্ষা, ধর্মীয় ও সামাজিক কর্মকাণ্ডেও সক্রিয় ভূমিকা রেখে চলেছেন । তার আন্তরিকতা, শ্রম ও সহযোগিতায় অনেক মানুষের যাপিত জীবনের এসেছে আমুল পরিবর্তন।
ফরিদপুরের সকল শ্রেনী পেশার জনগণের একান্ত আপনজন, অকৃত্রিম ভালোবাসার মানুষ ও বিশিষ্ট সমাজসেবক তাঁর মানবিক গুণাবলীর আলোয় আলোকিত করতে চান পুরো ফরিদপুর সদরের জনগণকে। ফরিদপুরের সকল শ্রেনী পেশার মানুষকে আপন করে নিতে চান তিনি। সবার জন্য কাজ করতে চান আরও বৃহৎ কোনো পরিসরে, বড় মঞ্চে।
শক্তি ডি গুপ্তা তাঁর এমন ইচ্ছের কথা উত্তরাধিকার ৭১ নিউজকে জানিয়ে বলেন, 'সমাজের সর্বশ্রেণীর মানুষের সেবা করার ইচ্ছে হয় খুব। কিন্তু তা পুরণ করতে যে তাঁদের ই স্বীকৃত সেবা দাস হতে হয়! সেক্ষেত্রে সবার সহযোগিতা ও সমর্থনের প্রয়োজন হয়।' ’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'হ্যাঁ আপনি ঠিকই ধরেছেন, আমি মানব সেবার ব্রত নিয়ে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনগণের প্রার্থী হতে চাই। জনগণ ভোট দিলে আমি শতভাগ সততার সাথে বৃহৎ পরিসরে তাঁদের প্রাণখুলে সেবা করতে চাই।'
তিনি আরও বলেন, 'অনেক সময় ইচ্ছে থাকলেও সীমাবদ্ধতার কারণে সব মানুষকে সব সেবা দিতে পারি না, এজন্য আসলে রাজনৈতিক প্লাটফর্ম বা চেয়ার দরকার হয়। সুযোগ পেলে ফরিদপুর সদরের মানুষের জন্য মানব সেবায় এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে যেতে চাই। গণমানুষের সেবা করে নিজের মনের পরিপূর্ণ প্রশান্তি বা সুখটুকু পেতে চাই। আমি এই বিষয়ে ফরিদপুর সদরের সকল জনসাধারণের একান্ত সহযোগিতা ও সমর্থন কামনা করছি।
(আরআরডিসি/এসপি/সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৫)