ধামরাইয়ে ২০২টি মন্দিরে শারদীয় দুর্গোৎসবের প্রস্তুতি চলছে

দীপক চন্দ্র পাল, ধামরাই : আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর মহা পঞ্চমীর মধ্য দিয়ে শুরু হবে হিন্দু সম্প্রদায়েরর অন্যতম প্রধান ধর্মীয় শারদীয়া উৎসব। ধর্মীয় রীতি মতে এবার “দেবীর গজে আগমন ও দেবীর দোলায় গমন”। ২৮ সেপ্টেম্বর ষষ্টী পুজা হবে। এবার ধামরাই উপজেলার একটি পৌর সভা ও ১৬টি ইউপির বিভিন্ন স্থানে ২০২টি স্থায়ী ও অস্থায়ী মন্দিরে শারদীয়া উৎসবের আয়োজনে শিল্পী-পূজারীরা প্রতিমা গড়ার কাজে এখন মহা ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।
বাঁশ দিয়ে অবকামো তৈরী, প্রতিমা শিল্পীরা তাদের সহ কর্মীদের দিয়ে মাটি নরম ও তৈরী করার পর প্রয়োজনীয় সকল প্রস্তুতি ও মূর্তি গড়ার কাজও শেষ পর্যায়ে এনেছেন। দ্রুতই শুরু হবে রং তুলির কাজ। দু-একটি প্রতিমা রং তুলির কাজ হয়েছে। আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর আগে সকল প্রকার সাজ-সজ্জার কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে জানালেন আয়োজক পূজারী বৃন্দ। সার্বজনীন এই উৎসব সকলের সার্বিক সহযোগিতায় অনূষ্ঠিত হয়ে থাকে। মূতিতে রংয়ের কাজ শুরু হবে।
এবার আয়োজন বর্ধিত কলেবরে হবে বলে জানান দুই শত বছর ধরে পূজার আয়োজন কারী পরিবারের সদস্য পূজারী প্রকাশ বণিক। তিনি বলেন প্রতিমা গড়ার কাজ চলছে ও শোকানোর কাজও শেষে রং তুলির কাজ শুরু হবে বলে জানান তিনি।
পূজারী শ্রী জগদিশ সরকার বলেন, আমাদের মন্দিরে পূর্তি গড়ার কাজ শেষ হয়েছে কাল ষেকে রংতুলির কাজ শুরু হবে।আমাদের প্রত্যাশা সুন্দর ও নিরাপদেই পুজা উৎসব শেষ হবে বলেন। তিনি সকলকে শারদীয় উৎসব উপভোগ করা আমন্ত্রন জানান।
ধামরাই ইসলামপুর উত্তর পুজা মন্ডপের কর্মকর্তা পুজারী চন্দন সরকার বলেন, আমাদের আয়োজন প্রায় সম্পন্ন হয়েছে। মুর্তি গড়া ও শোকানো শেষ হয়েছে। প্রতিমা শিল্পী দু একদিনের মধ্যে রংতুলির কাজ শুরু করবেন।
তিনি আশংকা প্রকাশ করে বলেন, এবার যে বৃষ্টি হচ্ছে,এ অবস্থা থাকলে ভক্ত দর্শনার্থীদের আগমনে সমস্যা হবে। আমরা বিষ্টি যাতে সমস্যা না হয় সে ব্যবস্থা রেখেছি।
ধামরাইয়ের বিশ্বকর্মা পুজারীদের অন্যতম নেতা ও শিল্পী সুকান্ত বণিক বলেন, শিল্পীরা সুক্ষ সুক্ষ কাজগুলি করছে। পুজা উৎসবকে কেন্দ্র করে ঘরে ঘরে উৎসব আমেজ বিরাজ করছে বলেন। ঢাকার পাশেই ধামরাই একটি ঐতিহ্যবাহী অতি প্রাচীন জনপদ। এখানে প্রায়ই বিদেশী পর্যটকরা ভ্রমনে আসেন। অথচ এখানকার প্রধান সড়কটিই দিনে দিনে দখল হয়ে ক্ষিনকায় রূপ নিচ্ছে। রাস্তার উপর বসে হাঠ।
বিদেশী পর্যটক রথ ও বিভিন্ন এলাকা ঘুরছেন। চলাচলের ক্ষেত্রে দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তিনি জানান, বিগত দশ বছর ধরে এই কারু শিল্পী নিজেই সহ কর্মীদের নিয়ে তামা, পিতল সহ অষ্ট ধাতু দিয়ে দূর্গা প্রতিমা তৈরী করে, বছর বছর এই প্রতিমা দিয়ে পুজার আয়োজন রছেন বলে জানান। সুন্দর এই পুজা অনুষ্ঠান দেখতে ভক্ত র্বন্দের ঢল নামে তার গৃহে। গৃহ কর্র্তী মউলি বণিক মানুষী বলেন প্রতি বছর আমাদের এই মন্ডপে পুজার সময় আগত ভক্তদের মাঝে প্রসাদ বিতরনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে বলে জানান।
মাধব মন্দির ও ধামরাই ঢাকাজেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সাধারন সম্পাদক পুজারী নন্দ গোপাল সেন বলেন ২৭ সেপ্টেম্বর মহা পঞ্চমীর মধ্য দিয়ে শুরু হবে হিন্দু সম্প্রদায়েরর অন্যতম প্রধান ধর্মীয় শারদীয়া উৎসব।ধর্মীয় রীতি মতে এবার “দেবীর গজে আগমন ও দেবীর দোলায় গমন” হবে।বাংলাদেশের উপজেলা গুলির মধ্যে ধামরাই উপজেলায় স্থায়ী ও অস্থায়ী মন্দিরে এ পূজার আয়োজন সব চেয়ে বেশী। এবার ধামরাইয়ে ২০২টি দূর্গা মন্দিরে শারদীয়া উৎসবের আয়োজন হচ্ছে। প্রশাসন থেকে সার্বিক আইন-শৃংখলা পরিবেশ নিয়ন্ত্রনে রাখতে পুজারী নের্তৃবৃন্দদের সাথে পুলিশ প্রশাসনের উধ্বতন কর্মর্তার মতবিনিময় করেছেন। পৌর এলাকার বিভিন্ন মন্দিরে ৪২টি পূজার আয়োজন রয়েছে। রংতুলির কাজ শুরু হবে কাল থেকে।
এব্যাপারে ধামরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্ম মামনুন আহাম্মেদ অনীক বলেন, হিন্দু সম্প্রদায়ে সব চেয়ে বড় উৎসব শারদীয়া দূর্গা পূজা। এই পূজা উপলক্ষে প্রশাসনিক প্রয়োজনী সকল ব্যবস্থা গ্রহর করা হবে। তিনি এ বিষয়ে সকলের সার্বিক সহযোগিা প্রত্যাশা করেন।পুজায় সরকারী অনুদান ধামরাইয়ের প্রতি মন্দিরের জন্য ৫০০ কেজি করে চাল এসেছে। সকল পূজারীবৃন্দদের মাঝে বুঝিয়ে দেওয়া হবে বলে জানান।
তিনি বলেন, প্রতি বারের মতই এবারো আইন শৃংখলা বিষয়ে পুলিশ, গ্রাম পুলিশ, আনসার সার্ব ক্ষণিক প্রহরায় থাকবে। প্রতি মন্দিরে সিসি ক্যামেরা লাগাবে, অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা রাখতে বলা হয়েছে।পৃলিশ টহল জোড়দার থাখবে। ঢৃলিভীটায় আগত ভক্তদের নিরাপত্তার স্বার্থে সিসি ক্যামরে লাগানো হবে।পুজা উলক্ষ্যে পুজারী নেতাদের নিয়ে আইন শৃংখলা বিষয়ে মত বিনিময় সভা হয়েছে। তিনি আশা করেন প্রতিবারের মতই এবারো সুন্দর পরিবশে হিন্দু সম্প্রদায়ের এ উৎসব সুন্দর মত সমাপ্ত হবে।
ধামরাই থানার অফিসার্স ইনচার্জ মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম বলেন, শারদীয়া দূর্গা পূজা উপলক্ষে প্রশাসনিক প্রয়োজনী ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে। ধামরাই উপজেলায় এবার ২০২ টি মন্দিরে এবার পুজা হবে। তিন স্তরের আইন শৃংখলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি পূজায় সকলের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন। প্রতি বারের মতো এবারো শান্তিপূর্ন ভাবে পূজা উৎসব সম্পন্ন হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন ।
(ডিসিপি/এসপি/সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২৫)