প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের যৌন হয়রানির অভিযোগ
অভিযোগ অস্বীকার প্রধান শিক্ষকের, শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদে উত্তেজনা, হামলা

শেখ ইমন, ঝিনাইদহ : টিকা নিতে প্রধান শিক্ষকের কক্ষে যান ষষ্ঠ শ্রেণীর এক শিক্ষার্থী। এসময় শিক্ষক তাকে কাছে ডেকে নেন। পরে মাথায় হাত রাখেন। এরপর ধীরে ধীরে সেই শিক্ষার্থীর শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেওয়ার চেষ্টা করেন। পরে ভয়ে ওই শিক্ষার্থী দ্রুত প্রধান শিক্ষকের কক্ষ থেকে বের হয়ে যান। ঘটনাটি ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার রামচন্দ্রপুর-কিসমতআলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের। গত ২২ সেপ্টেম্বর এ ঘটনা ঘটে। আর যার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ তিনি ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহিদুজ্জামান হীরক। ঘটনা জানাজানি হবার পর বিক্ষোভে নামে স্কুলের শিক্ষার্থীরা। এসময় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। শিক্ষার্থীরা ওই শিক্ষকের পদত্যাগ চেয়ে স্লোগান দিতে থাকে। এসময় বিক্ষোভ বন্ধে প্রধান শিক্ষক বহিরাগতকে ডেকে এনে শিক্ষার্থীদের ভয়ভীতি দেখান। শিক্ষার্থীরা তা না মানলে তাদের ওপর হামলা করা হয়। এসময় ওই বিদ্যালয়ের কয়েক শিক্ষার্থী আহত হন।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, প্রধান শিক্ষক জাহিদুজ্জামান হীরক বিভিন্ন সময় নারী শিক্ষার্থীদের ক্লাসে শেষে তার কক্ষে ডাকেন। সুযোগ বুঝে শরীরের বিভিন্ন স্থানে হাত দেন। এর আগেও একাধিকবার শিক্ষার্থীদের সাথে এমন আচরণ করেছেন তিনি। এমন লম্পট শিক্ষকের পদত্যাগ চান শিক্ষার্থীরা।
প্রত্যক্ষদর্শী এক ছাত্রী বলেন, ‘আমি ওইদিন হেড স্যারের রুমে ছিলাম। জানালা দিয়ে তাকিয়ে দেখি স্যার আমার বান্ধবীর শরীরের হাত দিচ্ছে এবং ওড়না ধরে টানছে। ওইদিনই আমরা স্কুলের সহকারী শিক্ষিকা বন্যা মেডামকে জানায়।’
দশম শ্রেণির ছাত্রী সাদিয়া খাতুন অভিযোগ করে বলেন, ‘ক্লাস শেষে স্যার আমাকে কক্ষে ডেকে নেন। একা পেয়ে তিনি শরীরের বিভিন্ন স্থানে হাত দেন। এর আগেও তিনি একাধিকবার এমন আচরণ করেছেন।’
স্কুল শিক্ষিকা বন্যা বলেন, ‘আমাকে মেয়েরা বিষয়টি বলেছিলো। আমি ওদের পরামর্শ দিয়েছিলাম অভিভাবকদের ডেকে এনে লিখিত অভিযোগ দিতে।’
অভিযোগের বিষয়ে প্রধান শিক্ষক জাহিদুজ্জামান হীরক বলেন, ‘আমাকে রাজনৈতিকভাবে ফাঁসানোর চেষ্টা চলছে। ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে অনৈতিক কোনো ঘটনা ঘটেনি। কিছু বহিরাগত এসে আন্দোলন উস্কে দিচ্ছে।’
শৈলকুপা থানার ওসি মাসুম খান বলেন, ‘ঘটনা শোনার সাথে সাথে আমি সেখানে পুলিশ পাঠিয়েছি। বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।’
এ ব্যাপারে শৈলকুপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিগ্ধা দাস বলেন, ‘শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে বিষয়টি নিয়ে আমরা তদন্ত করব। শিক্ষকের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগের সত্যতা পেলে আমরা আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিব।’
স্থানীয়রা বলছেন, শুধু এবারই না, এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ দীর্ঘদিনের। যার কারণে অনেকবার সংবাদমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছেন এই শিক্ষক।
(এসআই/এসপি/সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৫)