‘বেইআইনি নির্দেশনা দেবো না, কোনো দলের পক্ষেও কাজ নয়’

স্টাফ রিপোর্টার : প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন বলেন, এয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোনো বেআইনি, অন্যায় নির্দেশনা দেবো না৷ আপনারাও (কর্মকর্তারা) কোনো দলের পক্ষে কাজ করবেন না।
শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) নির্বাচন ভবনে আয়োজিত এক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সিইসি বলেন, আমি পরিবারের প্রধানের জায়গায় থেকে দায়িত্ববোধ নিয়ে কাজ করি। বাংলাদেশের মতো জায়গায় কাজ করা খুব কঠিন। আমরা অনেক দেখা, অদেখা বহু চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করছি। অনেকগুলো দেখা যায়৷ অনেকগুলো দেখ যায় না। আমি পজিশন মানুষ। গ্লাসে আমি সব সময় অর্ধেক ভরা পানি দেখি।
তিনি বলেন, আমাদের উপর আস্থা আছে বলেই প্রধান উপদেষ্টা বারবার বলছেন ঐতিহাসিক নির্বাচন করবো৷ আমরা অনুরাগ, বিরাগের বশবর্তী না হয়ে, আইন মেনে কাজ করবো। আমরা অন্যায় নির্দেশনা দেবোনা৷ বেআইনি নির্দেশনা, কারো পক্ষে কাজ করার নির্দেশনা দেবো না। সঠিক কাজটি সঠিকভাবে কাজ করার নির্দেশনা দেবো।
নিরপেক্ষভাবে কাজ করার জন্য এ সময় তিনি কর্মকর্তাদের হাত তুলে আল্লাহকে স্বাক্ষী রেখে শপথ করতে বলেন। কর্মকর্তারা হাত তুলে সে শপথ করেন।
সিইসি বলেন, আপনারা কারো পক্ষে কাজ করবেন না৷ কোনো দলের পক্ষে কাজ করবেন না। একটা বিশেষ পরিস্থিতিতে নির্বাচন হচ্ছে। বিশেষভাবে, বিশেষ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমেই কাজ করতে হবে। আমরা আমাদের শপথ রক্ষা হবে আপনাদের ভূমিকার ওপর।
বাংলাদেশ ইলেকশন কমিশন অফিসার্স এসোসিয়েশন আয়োজিত নির্বাচন কর্মকর্তা সম্মেলন-২০২৫ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আয়োজক সংগঠনের আহ্বায়ক মোহাম্মদ মনির হোসেন। এ সময় নির্বাচন কমিশন সচিব ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার এবং ইসি কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মনির হোসেন এ সময় প্রবাসে দূতাবাসের মাধ্যমে ভোটার কার্যক্রমে ইসি কর্মকর্তাদের নিয়োগের দাবী জানান।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) মাধ্যমে অপপ্রচার রোধে মাঠ পর্যায়ে স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদের মাঝে সচেতনতামূলক কর্মসূচি নেওয়ার গুরুত্বও তুলেন তিনি।
মনির হোসেন বলেন, এআই নির্ভর মিসইনফরমেশন, ডিসইনফরমেশন বা ম্যালইনফরশেন সাধারণ একটি নির্দিষ্ট এইজ গ্রুপ জড়িত থাকে। বিশেষ করে স্কুলে, কলেজের শিক্ষার্থীরা। তাই তাদের নিয়ে আমরা ওয়ার্কশপ করতে পারি।
প্রশাসনিক শৃঙ্খলা রক্ষায় বিভিন্ন দপ্তরের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পদের আপগ্রেডেশন প্রয়োজন। কেনান, একজন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার পদ যদি অন্যান্য দপ্তরের চেয়ে পদমর্যাদায় কম হয় তাহলে প্রশাসনিক বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনারদের পদ পর্যাদা আরো আরো উন্নীত করা প্রয়োজন। এতে মন্ত্রী পর্যায়ের সঙ্গে ইসির যোগাযোগ সহজ হবে।
নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সহকারি রিটার্নিং কর্মকর্তার পদে ইসি কর্মকর্তাদের নিয়োগ। আচরণ বিধি প্রতিপালনে ইসি কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দিলে আচরণ বিধি প্রতিপালন আরো সহজ হবে।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক আশফাকুর রহমান বলেন, কমিশন যদি মেরুদণ্ড সোজা দাঁড়ায় আমরা মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারাও মেরুদণ্ড সোজা হয়ে দাঁড়াবো। আমরা সংকট আস্থার সংকট। আমরা অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে হারানো আস্থাকে পুনরুদ্ধার করতে চাই। গত তিনটি নির্বাচনের মতো নির্বাচন করতে চাই না।
(ওএস/এএস/সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২৫)