আহমেদ ইসমাম, ঠাকুরগাঁও : ঠাকুরগাঁওয়ে নির্মাণাধীন একটি ৪ তলা ভবনের ওপর থেকে দেয়াল ধ্বসে পড়ে স্বপন আলী (১৯) নামের এক শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়েছে। আহত ওই শিক্ষার্থী বর্তমানে রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তবে তার অবস্থা সংকটাপন্ন বলে জানিয়েছে কর্তব্যরত চিকিৎসক।

গত রবিবার বিকেলে ঠাকুরগাঁও মুন্সিপাড়া গোরস্থানের পাশে দেয়াল ধ্বসে ওই শিক্ষার্থী আহতের এ ঘটনা ঘটে। গতকাল শনিবার ঠাকুরগাঁও সদর থানায় এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ করে আহত শিক্ষার্থী স্বপনের বড় ভাই রবিউল ইসলাম বাবু।

জানাযায়, দিনাজপুরের একটি বেসরকারী টেকনিক্যাল কলেজের এইচএসসি ২য় বর্ষের ছাত্র স্বপন আলী ঠাকুরগাঁও মুন্সিপাড়া গোরস্থানের পাশে রানা ম্যাচের একটি রুমে থাকতো। ঘটনার দিন গত ২১ তারিখে স্বপন বাহির থেকে এসে তার রুমে শুয়ে আরাম করছিলো। এসময় পাশের নির্মানাধীন একটি ৪ তলা ভবনের ওপর থেকে দেয়ালের একাংশ ভেঙ্গে স্বপনের রুমের ওপর পড়ে এবং স্বপন মেরুদন্ডে ও মাথায় গুরুতর আঘাত পায়। টিনের চালা ভেঙ্গে পড়ার বিকট শব্দে আশেপাশের লোকজন দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে রক্তাক্ত অবস্থায় স্বপনকে উদ্ধার করে ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করে। বর্তমানে সে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিউরো সার্জন ডা. তোফায়েলের অধিনে রয়েছে এবং চিকিৎসকের তথ্য মতে স্বপনের মাথায় ও মেরুদন্ডে দুটি অপারেশন করতে হবে এবং মেরুদন্ডের ৩টি হাড়ে রিং পড়াতে হবে এবং তা খুব কম সময়ের মধ্যে।

ঘটনায় গুরুতর আহত শিক্ষার্থী স্বপন জানায়, আমি যখন আমার ম্যাচের রুমে শুয়ে ছিলাম তখন একটা বিকট শব্দ কানে আসে এবং ভারি কিছু আমার ওপর পড়ে। এরপর আমার কিছু মনে নেই। জ্ঞান ফিরে নিজেকে মেডিকেলের বিছানায় পাই। আমি আমার শরীর নড়াতে পারছিনা। আমি লেখাপড়ার পাশাপাশি আমার রুমে বসে বনসাইয়ের পট সহ হস্তশিল্পের কাজ করতাম। জানিনা আমি কবে স্বুস্থ্য হয়ে কলেজে যাবো আর আমার বানানো জিনিসগুলো দেখতে পাবো। শুনেছি ঘটনার দিন সেগুলোও ভেঙ্গে গিয়েছে। আমি ওগুলো বিক্রি করে আমার লেখাপড়ার খরচ চালাতাম।

এ বিষয়ে নির্মাণাধীন ৪ তলা ভবনের মালিক (তহসিলদার) নুর ইসলামের সাথে কথা হলে তিনি জানান, স্বপন স্বুস্থ্য হয়ে এলে পারিবারিকভাবে বসে একটা মিমাংশা করা যাবে। তবে ভবন নির্মানে নিরাপত্তা বেষ্টনি কেনো ব্যবহার করেননি এ প্রশ্নের কোন সদুত্তর তিনি দিতে পারেননি।

এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সরোআরে আলম খান জানান, আমাদের কাছে একটি অভিযোগ এসেছে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত সাপেক্ষে আমরা প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

(এআই/এসপি/সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২৫)