মোহাম্মদ সজীব, ঢাকা : ঢাকার হাজারীবাগের বুড়িগঙ্গা নদী থেকে নিখোঁজের একদিন পর মোহাম্মদ আরিফ ২৭ বছরের এক যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে নৌ পুলিশ সদস্যরা। গত শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকালে হাজারীবাগ থানা এলাকায় বারইখালী ঘাটে  ভাসমান অবস্থায় মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। নিহত আরিফ পেশায় একজন গাড়িচালক ছিলেন। এ নিয়ে এলাকাটিতে  চাঞ্চল্যকর থমথমে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছ।

পরিবারের অভিযোগ শুক্রবার সকাল ৬ টার দিকে কে বা কারা ফোন করে বাসা থেকে বের করে আরিফ কে। এরপর নিখোঁজ হলে একদিন পর তার লাশ পাওয়া যায় বুড়িগঙ্গা নদীর বাড়ৈখালী ঘাটে।

খোঁজ নিয়ে জানা, যায় গত ২৬ সেপ্টেম্বর শুক্রবার ভোরে নিখোঁজ হলে শনিবার ২৭ সেপ্টেম্বর তার লাশ মেলে হাজারীবাগ এলাকায় বাড়ৈখালী বুড়িগঙ্গা নদীর ঘাটে।

স্থানীয়রা জানান, সকালে শ্রমিকরা কাজ করতে গেলে একটি লাশ ভেসে উঠতে দেখে। পরবর্তীতে সনাক্ত করা হয় নিখোঁজ হওয়া আরিফের লাশ এটি। আরিফ মীর, গত ২৬ সেপ্টেম্বর নিখোঁজ,২৭ সেপ্টেম্বর সকালে লাশ ভেসে উঠে নদীতে।

স্থানীয়দের ও পরিবারের দাবি, বাসা থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয়েছে, লাশ গুম করার জন্য নদীতে ফেলে দেওয়া হয়। নিহত আরিফ বিবাহিত ছিলো তার একটি ছোট ২ বছরের শিশু সন্তান রয়েছে।

নিহতের বাবা খবির মীর বলেন, আমার ছেলের সঙ্গে কারো শত্রুতা ছিলো না। কিন্তু কে এভাবে আমার ছেলেকে হত্যা করলো তা আমরা জানি না। শুক্রবার ভোর ৬ টার দিকে কে বা কারা ফোন করে বাসা থেকে বের করে আমার ছেলেকে, এরপর থেকে শনিবার পর্যন্ত নিখোঁজ ছিলো।, শনিবার ভোর বেলা, নদীতে লাশ ভাসতে দেখে স্থানীয়রা সনাক্ত করে এটি আরিফের লাশ।

বসিলা নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আরমান জানান, গতকাল আরিফ নামে একজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি বলেন, গত ৮ মাসে খোলামোরা থেকে ঢাকা উদ্যান এরিয়ায় পর্যন্ত প্রায় ১০ থেকে ১২ টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে বেশিরভাগ হত্যা বলে সন্দেহ রয়েছে বলে জানান এই পুলিশ সদস্য। তিনি জানান গতকাল শনিবার হাজারীবাগ থানা এরিয়া বাড়ৈখালী ঘাট থেকে আরিফ নামে এক যুবকের লাশ উদ্ধার করে মিটফোর্ড হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছেন। ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে এই যুবককে কিভাবে হত্যা অথবা অন্য কেনো কারণে নিহত হয়েছে কি না, তা জানার জন্য ময়নাতদন্ত চলছে।

পরিসংখ্যান বলছেন, গত বছরের ২৪ সালের ৫ আগস্ট থেকে এখন পর্যন্ত ৪৪০টি মরদেহ পাওয়া যায় নদীতে। যার মধ্যে শনাক্ত হয়েছে ২৯৯টি, আর পরিচয় মেলেনি ১৪১টির। অন্যদিকে চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে মরদেহ পাওয়া গেছে ৩০১টি। এর মধ্যে ৯২টি শনাক্ত করা যায়নি।

এ নিয়ে অপরাধ বিশ্লেষকরা বলছেন, নদীতে মরদেহ ফেললে তা শনাক্ত করা কঠিন, তাই অপরাধীরা নদীকে মরদেহ গুম করার ডাম্পিং স্টেশন হিসেবে ব্যবহার করছে। বেশি লাশ উদ্ধার হয় এমন এলাকায় সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের পাশাপাশি এসব মরদেহ শনাক্তের কাজে সকল বাহিনীকে সমন্বিত ভাবে কাজ করতে হবে।

বিশ্লেষকদের মতে, লাশ গুম করা ও মরদেহ সনাক্ত না করার জন্য এখন অপরাধীরা একমাত্র পথ বেছে নিচ্ছেন নদী। দুর্বৃত্তরা হত্যা করেই লাশ ফেলে দিচ্ছে নদীতে এ-থেকে উত্তরণের পথ নদীবন্দর এলাকায় এক কিলোমিটার পর পর সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা দরকার বলে মনে করেন অপরাধ বিশ্লেষকরা

(এস/এসপি/সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২৫)