ভাঙ্গায় ভ্যান চুরির সালিসে গ্রামবাসীর সংঘর্ষ, নিহত ১, আহত ২০

রিয়াজুল রিয়াজ, বিশেষ প্রতিনিধি : ফরিদপুরের ভাঙ্গায় ভ্যান চুরিকে কেন্দ্র করে সালিস বৈঠক চলাকালে সোনাখোলা গ্রামের দু'পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে জাকু মাতুব্বর (৫৩) নামের এক ব্যক্তি নিহত এবং উভয় পক্ষের কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন। রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাত ৮টার দিকে ভাঙ্গা উপজেলার আলগী ইউনিয়নের সোনাখোলা গ্রামে এ সংঘর্ষ হয়। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় দুজনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকালে ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফ হোসেন উত্তরাধিকার ৭১ নিউজকে জানান, সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। নিহত একজনের লাশ ভাঙ্গা হাসপাতাল থেকে উদ্ধার করা করে ময়না তদন্তের জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ রয়েছে, ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।'
উত্তরাধিকার ৭১ নিউজের এক প্রশ্নের জবাবে, ওসি আশরাফ হোসেন আরও জানান, 'বিষয়টি তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত এ ঘটনার বিষয়ে কিছুই বলা সম্ভব নয়। এ বিষয়ে কাজ করছে পুলিশ।'
এদিকে, স্থানীয় গ্রামবাসী ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কয়েক দিন আগে পার্শ্ববর্তী নলিয়া গ্রামে একটি ভ্যান চুরি হয়। পরে সোনাখোলা গ্রামের কয়েক ব্যক্তিকে দায়ী করা হলে বিষয়টি নিয়ে রবিবার সন্ধ্যায় সোনাখোলা গ্রামে সালিস বৈঠক বসে। সালিস চলাকালে সোনাখোলা গ্ৰামের দুই পক্ষের লোকজন একপর্যায়ে বাগ্বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়লে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়। প্রায় দেড় ঘণ্টাব্যাপী চলা সংঘর্ষে উভয় গ্রামের কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। স্থানীয় জনতা আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা তানসিভ জুবায়ের নাদিম বলেন, দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষের ঘটনার পর হাসপাতালে আসার পরও দফায় দফায় মারামারি হয়। এ ঘটনায় একজন নিহত হন। তাঁকে মৃত অবস্থায় আনা হয়। এ ছাড়া ১০ জন আহত অবস্থায় হাসপাতালে আসেন। এর মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় আরও দু'জনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে চাপা উত্তেজনা ও ক্ষোভ বিরাজ করছে। বিষয়টি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে পুলিশ। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওই এলাকায় আর কোনো অঘটন যেনো না ঘটে, সে বিষয়ে সতর্ক রয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। এ বিষয়ে এলাকাবাসীর সহযোগিতা কামনা করা হয়েছে। এছাড়া, রবিবার ১১টার দিকে সোনাখোলা গ্রামের পশ্চিম পাড়ায় নিহত জাকু মাতুব্বরের বাড়ীতে বইছে শোকের মাতম। নিহতের স্ত্রী সুম্মী বেগম (৪৬) স্বামী শোকেে যেনো পাথর হয়ে গেছেন। এ খবর লেখা পর্যন্ত নিহত জাকু মাতুব্বরের লাশের জন্য অপেক্ষা করছিলো এলাকাবাসী। ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ময়না তদন্ত শেষে জাকু মাতুব্বরের লাশ ফিরলে তাঁকে দাফন করা হবে বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
(আরআর/এএস/সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২৫)