আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার কাছাকাছি পৌঁছানোর পর ইসরায়েলি নৌ-বাহিনী মানবিক মিশন গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার বহরের কিছু জাহাজ ঘিরে ফেলেছে। ফ্লোটিলার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বুধবার (১ অক্টোবর) ইসরায়েলি জাহাজ তাদের বহরের কিছু জাহাজ ঘেঁষে ‘বিপজ্জনক ও ভীতিকর আচরণ’ করছে।

সংগঠনটি জানিয়েছে, দুটি ইসরায়েলি যুদ্ধজাহাজ দ্রুত এগিয়ে এসে ফ্লোটিলার নৌকা আলমা ও সিরিয়াসকে ঘিরে ফেলে। এসময় সব নেভিগেশন ও যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যায়। থিয়াগো অ্যাভিলা নামে ফ্লোটিলার এক কর্মকর্তা এটিকে ‘সাইবার আক্রমণ’ হিসেবে গণ্য করছেন। যদিও পরে তারা স্বল্পমাত্রায় যোগাযোগ পুনরুদ্ধার করেন।

গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলায় ৪০টির বেশি বেসামরিক জাহাজ রয়েছে। পুরো বহরে অন্তত ৫০০ জন রয়েছেন, যাতের অনেকেই সংসদ সদস্য, আইনজীবী ও অ্যাক্টিভিস্ট। সুইডিশ পরিবেশ ও জলবায়ু আন্দোলনকর্মী গ্রেটা থুনবার্গও আছেন এই বহরে।

ফ্লোটিলার কর্মকর্তারা বলেছেন, ইসরায়েলের এই শত্রুভাবাপন্ন আচরণে ৪০টির বেশি দেশের নিরস্ত্র বেসামরিক নাগরিকদের ভয়াবহ ঝুঁকির মুখে ফেলেছে। তারপরও ইসরায়েলিরা অবরোধ তৈরি করলে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার জন্য তাদের এই যাত্রা অব্যাহত থাকবে।

গাজামুখী যাত্রা শুরুর পর সম্প্রতি ফ্লোটিলার বহর ড্রোন হামলার শিকার হয়। ড্রোনগুলো স্টান গ্রেনেড ও রাসায়নিক পাউডার ফেলে নৌকাগুলোর ক্ষতি করে। তবে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। ইসরায়েল জানিয়েছে, হামাসের সঙ্গে লড়াইয়ের সময় গাজার উপকূলের নৌযান অবরোধ বৈধ এবং তারা যেকোনো উপায়ে ফ্লোটিলার বহর আটকে দেবে।

ইতালি ও স্পেন সম্ভাব্য উদ্ধার বা মানবিক সহায়তার জন্য নৌবাহিনী পাঠিয়েছে। তবে তারা সামরিক হস্তক্ষেপ করবে না। তুর্কি ড্রোনও জাহাজগুলোকে অনুসরণ করেছে। ইতালি জানিয়েছে গাজার ১৫০ নটিক্যাল মাইলের মধ্যে পৌঁছলে তাদের নৌ-যান বহরটিকে অনুসরণ করা বন্ধ করে দেবে। স্পেনও একই ইঙ্গিত দিয়েছে।

বুধবার নৌবহরের আয়োজকদের সংবাদ সম্মেলনে জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি অধিকার বিষয়ক শীর্ষ বিশেষজ্ঞ ফ্রান্সেসকা আলবানিজ বলেন, ফ্লোটিলার বহর আটকানো হলে তা আন্তর্জাতিক আইন ও সমুদ্র আইনের আরেকটি লঙ্ঘন হবে। কারণ গাজার জলসীমায় ইসরায়েলের আইনগত কর্তৃত্ব নেই।

(ওএস/এএস/অক্টোবর ১, ২০২৫)