সব বাধা পেরিয়ে গাজার জলসীমায় ফ্লোটিলার জাহাজ, পথে আরও ২৩টি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সব বাধা পেরিয়ে গাজার জলসীমায় ঢুকলো গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার জাহাজ ‘মিকেনো’, পথে রয়েছে আরও ২৩টি। গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা লাইভ ট্র্যাকার অনুযায়ী, মিকেনো নামে ওই জাহাজ বর্তমানে গাজার জলসীমায় অবস্থান করছে। তবে সেটি ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে পড়েছে কি না তা স্পষ্ট নয়।
আগের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ইসরায়েলি বাধা সত্ত্বেও অন্তত ২৬টি জাহাজ গাজার উপকূলে পৌঁছানোর পথে রয়েছে। বর্তমানে তাদের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৪টিতে। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি গাজার জলসীমার একেবারে কাছাকাছি অবস্থান করছে। ইসরায়েলি কমান্ডোরা এই জাহাজগুলোকে আটকানোর চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা জানিয়েছে, গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা থেকে এ পর্যন্ত দুই শতাধিক কর্মী-সামাজিক আন্দোলনকারীকে বন্দি করেছে ইসরায়েল। গাজার অবরোধ ভেঙে মানবিক সাহায্য পৌঁছাতে যাওয়া এই বহরে ৪০টিরও বেশি জাহাজ ছিল।
এর আগে, ইসরায়েলি নৌবাহিনী ফ্লোটিলার জাহাজগুলোর যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ করে দেয়, জলকামান ছুড়ে আক্রমণ চালায় এবং আন্তর্জাতিক জলসীমায় সক্রিয় কর্মীদের আটক করে। ইসরায়েল এ পর্যন্ত ফ্লোটিলার ১৩টি জাহাজ আটক করেছে বলে দাবি করেছে।
তবে কর্মী-সংগঠনটি বলছে, এই বাধা তাদের মিশন থামাতে পারবে না। ইসরায়েলকে ফাঁকি দিয়ে গাজার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে সুমুদ ফ্লোটিলার বাকি জাহাজগুলো। গাজা উপকূল থেকে আর মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরে রয়েছে তারা।
গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার ভাষ্য, অবৈধভাবে চালানো ইসরায়েলি বাধা সত্ত্বেও তারা গাজার অবরোধ ভাঙতে এবং একটি মানবিক করিডর খুলতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। তাদের দাবি, যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় অনাহারে থাকা ফিলিস্তিনিদের জন্য এই নৌবহর খাদ্য ও মানবিক সহায়তা বহন করছে।
সুমুদ ফ্লোটিলার মুখপাত্র সাইফ আবুকেশেক ইনস্টাগ্রামে দেওয়া এক বার্তায় জানিয়েছেন, গাজামুখী সুমুদ ফ্লোটিলা থেকে ৩৭ দেশের দুই শতাধিক কর্মীকে বন্দি করেছে ইসরায়েল।
তিনি বলেন, আটক হওয়া নৌযানগুলোতে ৩৭ দেশের ২০১ জন কর্মী ছিলেন। এর মধ্যে স্পেন থেকে ৩০ জন, ইতালি থেকে ২২ জন, তুরস্ক থেকে ২১ জন এবং মালয়েশিয়া থেকে ১২ জন অংশ নেন।
বাংলাদেশের শহিদুল আলম ছাড়াও সুমুদ ফ্লোটিলায় রয়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক রুহি আক্তার রুহিও। শহিদুল আলম ‘কনশায়েন্স’ নামে একটি বড় জাহাজে রয়েছেন। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সেটি আটক হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।
ফ্লোটিলার অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে আন্তর্জাতিক পরিবেশ আন্দোলনের কর্মী গ্রেটা থানবার্গকেও গ্রেফতার করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।
ইসরায়েল বলছে, গাজাগামী এই নৌযানগুলো ‘আইনসম্মত নৌ অবরোধ ভাঙার চেষ্টা করছে।’ তবে আন্তর্জাতিক আইনে মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর অধিকার রয়েছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। নিরাপত্তার জন্য ফ্লোটিলার পক্ষ থেকে যাত্রাপথ সরাসরি ভিডিও সম্প্রচারও করা হচ্ছে।
তথ্যসূত্র : আল-জাজিরা
(ওএস/এএস/অক্টোবর ০২, ২০২৫)