রিয়াজুল রিয়াজ, বিশেষ প্রতিনিধি : ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় বিএনপি'র দুই গ্রুপের মধ্যে সংগঠিত একটি মারামারির মামলার এজাহারভুক্ত তিন আসামিসহ স্থানীয় বিএনপির চার নেতাকে আটক করেছে থানা পুলিশ।

আটকের আগে স্থানীয় বিএনপির একপক্ষের নেতৃবৃন্দ ওই ঘটনায় ভুক্তভোগী অপরপক্ষের এক নেতার করা মামলাটি নথিভুক্ত করায় আলফাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহজালাল আলমের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় তারা।

এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার (৪ অক্টোবর) সকাল ১০টায় বিএনপির আসামী পক্ষের লোকজন স্থানীয় ওসির বিরুদ্ধে একটি মানববন্ধনের প্রস্তুতি নেওয়ার সময় তাদের আটক করা হয়।

আটককৃতরা হলেন- উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক খোশবুর রহমান খোকন, উপজেলা যুবদলের কর্মী রমজান মোল্যা ও পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আরব আলী ও আলফাডাঙ্গা পৌর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ফরিদপুর-১ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী দুই নেতা খন্দকার নাসিরুল ইসলাম ও শামসুদ্দিন মিয়া ঝুনু গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এই বিরোধের জের ধরে খন্দকার নাসির গ্রুপের অনুসারী বোয়ালমারী উপজেলার সাবেক ছাত্রদল নেতা বনি আমিন ও উপজেলা বিএনপির কার্যনির্বাহী কমিটির সাবেক সদস্য এ কে এম উজ্জ্বল হোসেনের ওপর হামলা চালায়।

এ ঘটনায় সাবেক ছাত্রদল নেতা বনি আমিন বিএনপির ছয় নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন যা পরে মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঝুনু গ্রুপের লোকজন আলফাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহজালাল আলমের ওপর ক্ষেপে যান এবং তাঁর বিরুদ্ধে শনিবার (৪ অক্টোবর) সকাল ১০টায় মানববন্ধনের ডাক দেয়। মানববন্ধনের প্রস্তুতিকালে আলফাডাঙ্গা উপজেলা সদর বাজারের কলেজ রোডের চুয়াল্লিশের মোড় থেকে উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক খোশবুর রহমান খোকনসহ চারজনকে আটক করে পুলিশ।

বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে আলফাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহজালাল আলম জানান, আলফাডাঙ্গা থানায় একটি মারামারির মামলায় তিনজন এজাহার নামীয় আসামিসহ মোট চারজন আসামিকে আটক করা হয়েছে।

এদিকে স্থানীয় বিএনপি'র নিরপেক্ষ নেতাকর্মীরা বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, 'জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে ফরিদপুর-১ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের বিরোধ প্রকাশ্যে আসাটা দুঃখনজক। বিএনপি'র জন্য এসব ভালো খবর নয়।' তাঁরা আরও জানান, 'মারামারি করবেন আপনারা, হামলা- মামলা করবেন। পুলিশ মামলা নথিভুক্ত করলে একপক্ষ পুলিশের বিরুদ্ধে অবস্থান নিবেন এগুলো ভালো কাজ নয়। বিএনপি নেতাদের উদ্দেশ্য করে সাধারণ নেতাকর্মীরা আরও জানান, আপনাদের অপকর্মের দায় পুলিশের কাঁধে দিয়ে পুলিশকে হয়রানি করা অর্থ কি? আপনারা এটি ধারা কি বোঝাতে চান?' তারা আরও বলেন, এসব বাদ দিয়ে দলের স্বার্থে নির্বাচনের আগে নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ রাখুন। দল যাকে মনোনয়ন দিবে তাঁর জন্য কাজ করার প্রতিজ্ঞা করুন।

এ বিষয়ে ফরিদপুর জেলা বিএনপি'র সদস্য সচিব এ কে কিবরিয়া স্বপন জানান, 'আলফাডাঙ্গার ঘটনাটি সম্পর্কে আমি পুরোপুরি অবগত নই। ঘটনাটির বিষয়ে আগে আমি বিস্তারিত জেনে নেই, তারপর জানাতে পারবো।'

(আরআর/এএস/অক্টোবর ৪, ২০২৫)