আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পশ্চিম ভারতের রাজস্থান রাজ্যের রাজধানী জয়পুরের একটি হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটে (আইসিইউ) আগুন লেগে ছয়জন গুরুতর অসুস্থ রোগীর মৃত্যু হয়েছে। রবিবার গভীর রাতে সোয়াই মান সিং হাসপাতালের আইসিইউর স্টোরেজ এরিয়ায় শর্ট সার্কিটের কারণে আগুন লেগেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সে সময় ১১ জন রোগী আইসিইউতে ছিলেন।

নিহতদের মধ্যে দুই নারী এবং চারজন পুরুষ। নিহতদের স্বজনরা কর্মীদের বিরুদ্ধে অবহেলার অভিযোগ এনেছেন। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ভজনলাল শর্মা রবিবার বলেন, রাজ্য সরকার এই ঘটনা তদন্তের ঘোষণা দিয়েছে। রোগীদের নিরাপত্তা, চিকিৎসা এবং আহতদের সেবা নিশ্চিত করার জন্য সম্ভাব্য সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে এবং পরিস্থিতি ক্রমাগত পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।

রাজ্য সরকার পরিচালিত সোয়াই মান সিং হাসপাতাল রাজস্থানের বৃহত্তম হাসপাতালগুলোর মধ্যে একটি এবং সেখানে প্রতিদিন হাজার হাজার রোগীর চিকিৎসা করা হয়।

মধ্যরাতের ঠিক আগে হাসপাতালের ট্রমা সেন্টারে আগুন লাগে এবং দ্রুত তা পুরো ভবনে ছড়িয়ে পড়ে। ঘন ধোঁয়া চারদিকে ছড়িয়ে পড়ার পর কাছের একটি আইসিইউ ওয়ার্ড থেকে ১৪ জন রোগীকে সরিয়ে নেওয়া হয়।

সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, দমকলকর্মীরা জানালা ভেঙে প্রায় দুই ঘন্টা ধরে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন। অনেক পরিবার হাসপাতালের কর্মীদের বিরুদ্ধে অবহেলার অভিযোগ এনেছে।

এদের মধ্যে একজন পিটিআইকে বলেন, আমরা ধোঁয়া দেখতে পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কর্মীদের খবর দিয়েছিলাম, কিন্তু তারা কোনো পাত্তা দেয়নি।

দুর্ঘটনায় মাকে হারিয়েছেন এমন একজন অভিযোগ করেছেন যে, হাসপাতালেও কোনো জরুরি সরঞ্জাম ছিল না। আগুন নেভানোর জন্য কোনো অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র, সিলিন্ডার এমনকি পানিও ছিল না।

তবে হাসপাতালের ডেপুটি সুপারিনটেনডেন্ট জগদীশ মোদী এসব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন।
তিনি বিবিসিকে বলেন, এমন পরিস্থিতিতে আমি মানুষের অনুভূতি বুঝতে পারি, কিন্তু অভিযোগগুলি সত্যি নয়। রোগীদের রক্ষা করার জন্য হাসপাতালের বেশ কয়েকজন কর্মী নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়েছেন। ।

এদিকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তিনি সামাজিক মাধ্যম এক্সে এক পোস্টে লিখেছেন, যারা তাদের প্রিয়জনদের হারিয়েছেন তাদের প্রতি সমবেদনা। আহতরা যেন শিগগির সুস্থ হয়ে ওঠেন।

ভারতে হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডের ফলে মৃত্যুর ঘটনা নতুন নয়। এর আগে ২০২৪ সালের নভেম্বরে উত্তরাঞ্চলীয় শহরের একটি সরকারি হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডে কমপক্ষে ১০ নবজাতকের মৃত্যু হয়।

(ওএস/এএস/অক্টোবর ০৬, ২০২৫)