বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস
আজই বলুন, আমি আমার মনের যত্ন নেব

ডা. মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ
প্রতিবছর ১০ অক্টোবর বিশ্বজুড়ে পালিত হয় বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস (World Mental Health Day)। ২০২৫ সালে এই দিনটি আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে কারণ আধুনিক জীবনযাত্রার চাপ, প্রতিযোগিতা এবং সামাজিক বিচ্ছিন্নতার কারণে মানসিক সমস্যা ক্রমেই বাড়ছে। দিবসটির মূল উদ্দেশ্য হলো মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা এবং মানসিক সমস্যায় আক্রান্তদের প্রতি সহমর্মিতা ও সহায়তা প্রকাশ করা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এবং ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন ফর মেন্টাল হেলথ (WFMH) এই দিনটিকে উদযাপন করে মানুষকে মানসিক সুস্থতার গুরুত্ব বোঝাতে এবং সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনে সহায়তা করে। আজকের ব্যস্ত জীবনযাত্রায় প্রতিযোগিতা, কর্মচাপ, পারিবারিক টানাপোড়েন এবং সামাজিক চাপের ভিড়ে আমরা প্রায়ই নিজেদের মন ও মানসিক অবস্থাকে উপেক্ষা করি। শারীরিক সুস্থতার পাশাপাশি মানসিক শান্তি ও সুস্থতা সমান জরুরি। এই দিবস আমাদের মনে করিয়ে দেয়—“মন ভালো থাকলে জীবন সুন্দর।” আমাদের উচিত আজই প্রতিজ্ঞা করা যে, আমরা মানসিক সুস্থতার জন্য সচেতনভাবে পদক্ষেপ নেব।
মানসিক স্বাস্থ্য কী?
মানসিক স্বাস্থ্য বলতে বোঝায় এমন একটি অবস্থা, যেখানে মানুষ নিজের চিন্তা, আবেগ ও আচরণ নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম, জীবনের চ্যালেঞ্জগুলো ইতিবাচকভাবে মোকাবিলা করতে পারে এবং সমাজে কার্যকর ও অর্থবহ ভূমিকা রাখতে পারে।
WHO-এর সংজ্ঞা অনুযায়ী: Mental health is a state of well-being in which the individual realizes his or her own abilities, can cope with normal stresses of life, can work productively, and is able to contribute to his or her community. অর্থাৎ, মানসিক স্বাস্থ্য শুধুই রোগবিমুক্তি নয়। এটি জীবনের প্রতিকূল সময়েও ভারসাম্য বজায় রাখা এবং ইতিবাচক সামাজিক অবদান রাখা। WHO যথার্থই বলেছে—“There is no health without mental health.”
মানসিক স্বাস্থ্য আমাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলে। এটি আমাদের ব্যক্তিগত জীবন, সামাজিক সম্পর্ক, কর্মক্ষমতা এবং সার্বিক সুখের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। স্বাস্থ্যকর মানসিক অবস্থা ব্যক্তিকে চাপ মোকাবিলায় শক্তিশালী করে, সম্পর্ক উন্নত রাখে, এবং জীবনের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব তৈরি করে।
বিশ্ব ও বাংলাদেশের মানসিক স্বাস্থ্য পরিস্থিতি
বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট (WHO, ২০২৩) প্রতি ৮ জনের ১ জন মানুষ মানসিক সমস্যায় ভুগছে।
প্রায় ৯৭ কোটি মানুষ ডিপ্রেশন, উদ্বেগ বা অন্যান্য মানসিক রোগে আক্রান্ত। আত্মহত্যা ১৫–২৯ বছর বয়সীদের মধ্যে চতুর্থ প্রধান মৃত্যুর কারণ। প্রতি বছর বিশ্বে প্রায় ৮ লাখ মানুষ আত্মহত্যা করে—প্রতি ৪০ সেকেন্ডে একজন। মানসিক সমস্যার কারণে সামাজিক, শিক্ষাগত এবং পেশাগত জীবনে ব্যাপক ক্ষতি ঘটে। এটি শুধু রোগীকে নয়, তার পরিবারের জীবনকেও প্রভাবিত করে। মানসিক রোগের অর্থনৈতিক ক্ষতিও ব্যাপক। WHO-এর একটি গবেষণায় দেখা গেছে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার কারণে বিশ্বব্যাপী উৎপাদনশীলতা প্রতি বছর কোটি কোটি ডলার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বাংলাদেশের বাস্তবতা (জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য জরিপ, ২০২৪)
প্রাপ্তবয়স্কদের প্রায় ১৭% কোনো না কোনো মানসিক সমস্যায় ভুগছেন। শিশু-কিশোরদের মধ্যে ১৪% আক্রান্ত। প্রতি ১ লাখ জনসংখ্যায় মাত্র ০.১৩ জন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ, WHO অনুযায়ী প্রয়োজন অন্তত ১০ জন। ৬০% এর বেশি রোগী চিকিৎসা নেন না, লজ্জা, কুসংস্কার ও ভয়জনিত কারণে। ৯৫% মানসিক স্বাস্থ্য সেবা শহরকেন্দ্রিক, গ্রামীণ জনগোষ্ঠী বঞ্চিত।বাংলাদেশে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষ করে স্কুল-কলেজ পর্যায়ের শিশু ও তরুণদের মধ্যে চাপ, উদ্বেগ এবং সামাজিক বিচ্ছিন্নতা সাধারণ হয়ে উঠেছে। এটি স্পষ্ট করে যে, মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা এখন একটি বড় গণস্বাস্থ্য চ্যালেঞ্জ।
মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতির কারণ
মানসিক অসুস্থতার কারণ বিভিন্ন ধরনের হতে পারে, প্রধানত তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়—জৈবিক, মনস্তাত্ত্বিক এবং সামাজিক।
১. জৈবিক কারণ
* বংশগত বা জিনগত প্রভাব: পরিবারে মানসিক রোগের ইতিহাস থাকলে ঝুঁকি বৃদ্ধি।
* মস্তিষ্কের রাসায়নিক ভারসাম্যের অভাব: যেমন সেরোটোনিন বা ডোপামিনের ঘাটতি।
* মস্তিষ্কে আঘাত, স্নায়বিক সমস্যা বা সংক্রমণ।
* দীর্ঘস্থায়ী শারীরিক অসুস্থতা: যেমন ডায়াবেটিস, ক্যানসার।
২. মনস্তাত্ত্বিক কারণ
* শৈশবে অবহেলা, নির্যাতন বা ট্রমা।
* পারিবারিক কলহ, বিচ্ছেদ বা একাকীত্ব।
* আত্মবিশ্বাসের অভাব ও অতিরিক্ত উদ্বেগ।
* নেতিবাচক চিন্তা, অপরাধবোধ বা আত্মঅবমূল্যায়ন।
৩. সামাজিক কারণ
* দারিদ্র্য, বেকারত্ব বা আর্থিক অনিশ্চয়তা। * সামাজিক বিচ্ছিন্নতা, বন্ধু বা পরিবারের সমর্থনের অভাব। * বৈষম্য, বুলিং বা সামাজিক চাপ। * প্রযুক্তি ও ডিজিটাল আসক্তি, অনিয়মিত জীবনধারা।এই তিনটি কারণ একসাথে মিলিত হলে মানসিক অসুস্থতার ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়। সামাজিক চাপ এবং পারিবারিক অশান্তি দীর্ঘস্থায়ী হলে ডিপ্রেশন, উদ্বেগ ও অন্যান্য মানসিক রোগের প্রবণতা বৃদ্ধি পায়।
মানসিক অসুস্থতার লক্ষণ
* দীর্ঘস্থায়ী দুঃখ বা নিরাশা * অতিরিক্ত ঘুমানো বা অনিদ্রা * খাওয়ার রুচির পরিবর্তন—অতিরিক্ত খাওয়া বা খাওয়ায় অনীহা * মনোযোগ ও স্মৃতিশক্তি হ্রাস * আত্মবিশ্বাসের অভাব, আত্মসমালোচনার প্রবণতা * অতিরিক্ত রাগ, ভয় বা অস্থিরতা। * একা থাকতে চাওয়া বা সমাজ থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেওয়া * আত্মহত্যার চিন্তা বা আত্মনাশের প্রবণতা * কাজ বা পড়াশোনায় আগ্রহ হারানো * অজানা শারীরিক সমস্যা যেমন মাথাব্যথা, বুক ধড়ফড় বা ক্লান্তি।
সতর্কতা: লক্ষণগুলো অবহেলা করলে রোগ আরও জটিল হতে পারে। প্রাথমিক সচেতনতা ও চিকিৎসা নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
মানসিক রোগের প্রকারভেদ
১. বিষণ্ণতা (Depression): দীর্ঘদিন ধরে মন খারাপ থাকা, ক্লান্তি, আগ্রহহীনতা এবং কখনও আত্মহত্যার চিন্তা দেখা।
২. উদ্বেগজনিত ব্যাধি (Anxiety Disorders): অতিরিক্ত চিন্তা, ভয়, ঘাম, হৃদস্পন্দন বৃদ্ধি বা আতঙ্কজনিত আক্রমণ।
৩. বাইপোলার ডিসঅর্ডার: ব্যক্তি কখনও অস্বাভাবিকভাবে আনন্দিত বা উদ্যমী থাকে, আবার কখনও গভীর বিষণ্ণতায় ভোগে।
৪. স্কিজোফ্রেনিয়া (Schizophrenia): বাস্তবতার অনুভূতি হারানো, মিথ্যা কণ্ঠ শোনা বা বিভ্রম দেখা।
৫. অবসেসিভ কম্পালসিভ ডিসঅর্ডার (OCD): একই চিন্তা বা কাজ বারবার করা, যেমন বারবার হাত ধোয়া বা দরজা পরীক্ষা করা।
৬. পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার (PTSD): ভয়াবহ অভিজ্ঞতার পর মানসিক আঘাত; ব্যক্তি বারবার সেই ঘটনার স্মৃতি অনুভব করেন।
৭. খাদ্যাভ্যাসজনিত ব্যাধি (Eating Disorders): অতিরিক্ত না খাওয়া বা অতিরিক্ত খাওয়ার অভ্যাস, যা মানসিক ভারসাম্যের অভাব নির্দেশ করে।প্রতিটি রোগের ক্ষেত্রে প্রাথমিক সনাক্তকরণ এবং চিকিৎসা অত্যন্ত জরুরি।
চিকিৎসার চ্যালেঞ্জ ও সীমাবদ্ধতা
বিশেষজ্ঞ ও অবকাঠামোগত সংকট: একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ প্রায় ৮–১০ লাখ রোগীর দায়িত্বে।
কুসংস্কার ও সামাজিক লজ্জা: “মানসিক রোগ মানে পাগল” এই ভুল ধারণা চিকিৎসা নিতে বাধা দেয়।
অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতা: মনোরোগ বিশেষজ্ঞের ফি, নিয়মিত কাউন্সেলিং ও ঔষধ সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে।
সরকারি বাজেটের অপ্রতুলতা: স্বাস্থ্য বাজেটের ১% এরও কম বরাদ্দ মানসিক স্বাস্থ্য খাতে।
আইন ও তদারকির ঘাটতি: মানসিক স্বাস্থ্য আইন ২০১৮ থাকলেও কার্যকর প্রয়োগ সীমিত।
তথ্যসংগ্রহের দুর্বলতা: আত্মহত্যা ও মানসিক রোগের প্রকৃত তথ্য প্রায়ই অসম্পূর্ণ।
করণীয় পদক্ষেপ
১. প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবায় মানসিক স্বাস্থ্য অন্তর্ভুক্ত করা: উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রশিক্ষিত চিকিৎসক নিয়োগ।
২. শিক্ষা ব্যবস্থায় মানসিক স্বাস্থ্য শিক্ষা: স্কুল-কলেজে “মানসিক সুস্থতা” ক্লাস, কাউন্সেলিং ও সচেতনতা কার্যক্রম।
৩. কুসংস্কার দূরীকরণ ও সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন: মিডিয়া, ধর্মীয় নেতা ও সামাজিক সংগঠন সচেতনতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখবে।
৪. সরকারি তদারকি ও জবাবদিহিতা: মানসিক স্বাস্থ্য আইন বাস্তবায়নে নিয়ন্ত্রণ সেল ও রোগীর অধিকার রক্ষা।
৫. বাজেট ও গবেষণা বৃদ্ধি: স্বাস্থ্য বাজেটের অন্তত ৩–৫% মানসিক স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ।
৬. সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব: এনজিও, বিশ্ববিদ্যালয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থার সহযোগিতায় মানসিক স্বাস্থ্য প্রকল্প।
৭. ডিজিটাল হেলথ প্ল্যাটফর্ম: অনলাইন কাউন্সেলিং, হেল্পলাইন ও মেন্টাল হেলথ অ্যাপ চালু করা। উদাহরণ: “Kaan Pete Roi” হেল্পলাইন।
মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষার ব্যক্তিগত উপায়
* নিজের অনুভূতি ও চিন্তায় মনোযোগ দিন।* * সমস্যা একা না রেখে বিশ্বাসযোগ্য কারও সঙ্গে শেয়ার করুন। * ব্যর্থতা বা সমালোচনাকে ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করুন। * ধূমপান, মাদক বা অ্যালকোহল থেকে দূরে থাকুন। * নিয়মিত ব্যায়াম ও পর্যাপ্ত ঘুম নিন। * প্রকৃতির সান্নিধ্যে সময় কাটান, হাসুন ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন। * প্রয়োজনে মানসিক পরামর্শদাতার সঙ্গে যোগাযোগ করুন। * পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে সম্পর্ক দৃঢ় রাখুন।
মানসিক স্বাস্থ্য ও হোমিওপ্যাথি
মানসিক স্বাস্থ্য হলো আমাদের মনের সুস্থতা, যা চিন্তা, আবেগ ও আচরণের ওপর প্রভাব ফেলে। মানসিকভাবে সুস্থ থাকলে আমরা চাপ, উদ্বেগ ও হতাশার সঙ্গে স্থিতিশীলভাবে মোকাবিলা করতে পারি। হোমিওপ্যাথি হলো প্রাকৃতিক চিকিৎসা পদ্ধতি, যা রোগীর লক্ষণ, মানসিক অবস্থা এবং শারীরিক পরিস্থিতি অনুযায়ী ঔষধ নির্বাচন করে। এটি শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে মানসিক সুস্থতা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করে।হোমিওপ্যাথিতে অভিজ্ঞ চিকিৎসক রোগীর লক্ষণ অনুযায়ী ইগনেশিয়া, আর্সেনিকাম অ্যালবাম, ন্যাট্রাম মিউরিয়াটিকাম, জেলসিয়াম, প্যাসিফ্লোরা, ক্যালক্যরিয়া কার্বোনিকা, অ্যানাকাডিয়াম, নাক্স, লিকোফেরিয়া, সিপিয়া, ফসফরাস ইত্যাদি ঔষধ ব্যবহার করতে পারেন। তবে হোমিওপ্যাথিতে ঔষধ নেওয়ার আগে অবশ্যই প্রশিক্ষিত ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
পরিশেষে, মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষা শুধুই ঔষধের ওপর নির্ভরশীল নয়। দৈনন্দিন জীবনধারায় পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। নিয়মিত ব্যায়াম, পর্যাপ্ত ঘুম, স্বাস্থ্যকর খাদ্য, ধ্যান, সামাজিক সংযোগ এবং মন ভালো রাখার কার্যক্রম মানসিক সুস্থতা বজায় রাখতে সহায়ক।
হোমিওপ্যাথি এই প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে মানসিক স্বাস্থ্যকে সমর্থন দেয়, শরীর ও মনের ভারসাম্য বজায় রাখে এবং স্থায়ী শান্তি অর্জনে সাহায্য করে। বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে মানসিক সুস্থতা জীবনের অপরিহার্য অংশ। শারীরিক সুস্থতার মতোই এটি আমাদের সুখী, সুষ্ঠু ও সমৃদ্ধ জীবনযাপনের মূল চাবিকাঠি। আসুন, আমরা ব্যক্তিগত এবং সামাজিকভাবে মানসিক সুস্থতার অঙ্গীকার করি, কারণ—“মন ভালো থাকলে জীবন সুন্দর।”
লেখক: কলাম লেখক ও গবেষক, প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান, জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটি।