‘সেফ এক্সিট’

শিতাংশু গুহ
এ সময়ে বাংলাদেশে ‘সেফ এক্সিট’ নিয়ে বেশ আলোচনা হচ্ছে। ‘সেফ এক্সিট-র বাংলা কি? নিরাপদ প্রস্থান, না নিরাপদ পলায়ন? আরো খোলাসা করে বলা যায়, জীবনটা হাতে নিয়ে অন্যের দয়ায় নিরাপদে দেশ থেকে পলায়ন। মাত্র ১৪ মাসের মাথায় বাংলাদেশে পুরো সরকার বা সকল উপদেষ্টারা এখন ‘সেফ এক্সিট’ নিয়ে ভাবছেন।
খবর বেরিয়েছে যে, ৫ উপদেষ্টা শেখ হাসিনা’র সাথে যোগাযোগ করেছেন, ক্ষমা চেয়েছেন এবং ‘সেফ এক্সিট’ চেয়েছেন। আমার জানামতে, ঘটনা সত্য। এদিকে শেখ হাসিনা দিল্লিতে এক গুরুত্বপূর্ণ মিটিং সেরে বলেছেন, আমি শিগগিরি ঢাকা ফিরছে। পুতুল তার মা-কে নিয়ে এক ভিডিও বার্তায় বলেছেন, সুখবর, আমরা ডিসেম্বরে ঢাকা ফিরছি।
ড. ইউনুস সরকারের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। যদিও তারা বলছেন, আওয়ামী লীগ এখন অপ্রাসঙ্গিক, কিন্তু তাঁদের কথাবার্তা, আচার-আচরণে আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনা ছাড়া কিছু নেই! এমনকি ‘অসুরের দাঁড়িতে’ও তাঁরা স্বৈরাচার খুঁজে পেয়েছেন। এদের এক বছরের স্বৈরাচারী শাসনে মানুষ ভুলে গেছে আওয়ামী লীগ ১৭ বছরে কি কি খারাপ কাজ করেছে।
বঙ্গবন্ধুর সময় আমি ঢাকা ভার্সিটি’র ছাত্র, তার সরকার দেখেছি। এরপর কত সরকার দেখলাম, কিন্তু ড. ইউনুস সরকারের মত একটি অপদার্থ, পাজী, প্রতিহিংসা পরায়ণ, দেশদ্রোহী, জনবিরোধী সরকার দেখিনি। এদের ‘সেফ এক্সিট’ থাকা উচিত হবেনা। কার ‘সেফ এক্সিট’? শেখ হাসিনা এদের ‘সেফ এক্সিট’ দেয়ার কেউ নন, জনগণ সেটা হতে দেবেনা।
‘সেফ এক্সিট’ ইস্যুটি তুলেছেন এনসিপি নেতারা। উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, নাহিদকে পরিষ্কার করতে হবে কারা ‘সেফ এক্সিট’ চায়। সাথে বলেছেন, আমি চাইনা, আমি দেশেই থাকবো। না ম্যাডাম, আওয়ামী লীগ আমলে আপনি ভালই ছিলেন, এবার বঙ্গবন্ধু কন্যা হয়তো জাতির পিতার মত ততটা ‘উদার’ নাও হতে পারেন? তাই, প্রথম সুযোগেই দেশ ছাড়বেন।
আর এক টোকাই উপদেষ্টা বলেছেন, মৃত্যু ছাড়া আমাদের কোন ‘সেফ এক্সিট’ নেই? এত অল্প বয়সে মৃত্যু’র কথা ভাবতে নেই, যা পালা। ভাগ, সময় থাকতে ভাগ। তবে এটিও সত্য, ড. ইউনুস-সহ তোমরা যেখানেই পালাও, তোমাদের জন্যে পুরো পৃথিবী অন্ধকার হয়ে গেছে। সরকারের মনে ‘আওয়ামী-ফোবিয়া’ বা ‘শেখ হাসিনা ফোবিয়া’ ঢুকে গেছে।
এঁরা জলাতঙ্কের মত ‘আওয়ামী আতঙ্কে ভুগছে। এ বড় কঠিন রোগ, আমেরিকা-চীন-পাকিস্তানের বড়বড় ডাক্তারও এ রোগ সারাতে পারবে না, এ রোগের আরোগ্য শুধুমাত্র শেখ হাসিনা’র কাছে আছে? একটি চার্টার বিমান নিয়ে পুরো উপদেষ্টা পরিষদ দিল্লি গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র কাছে রোগের নিরাময় চাইতে পারেন, এটি ‘সেফ এক্সিট’ও হতে পারে।
লেখক : আমেরিকা প্রবাসী।