শাহ্ আলম শাহী, দিনাজপুর : সংক্রমণজনিত অন্যতম রোগ টাইফয়েড জ্বর প্রতিরোধে সরকারিভাবে টিকা প্রদানের লক্ষে দিনাজপুরে 'কিশোর-কিশোরী ও নারী উন্নয়নে সচেতনতামূলক প্রচার কার্যক্রম' শীর্ষক কনসালটেন ওয়ার্কশপ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ শনিবার দিনাজপুর সিভিল সার্জন কার্যালয়ের কনফারেন্স রুমে এ ওয়ার্কশপের আয়োজন করে জেলা তথ্য অফিস।

দিনাজপুর জেলা তথ্য অফিসার সাফিয়া আফরিন শেফার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে দিনাজপুর জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. আসিফ ফেরদৌস প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, দিনাজপুর ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট জেলারেল হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক ডা. সিরাজুল ইসলাম, তথ্য ও সম্প্রসারণ মন্ত্রণালয়ের গণযোগাযোগ অধিদপ্তর উপপরিচালক ফাইমা জাহান ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এ. এম শাহজাহান।

ওয়ার্কশপে তথ্য ভিত্তিক ও প্রজেক্টে উপস্থাপনা করেন সিভির সার্জন কার্যালয়ের কর্মকর্তা ডাঃ আল আমিন।

সাংবাদিকদের পক্ষে টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন বিষয় নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন তুলে বক্তব্য রাখেন, দিনাজপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক গোলাম নবী দুলাল, সিনিয়র সহ-সভাপতিশাহ আলম শাহী, সহ-সভাপতি আজহারুল আজাদ জুয়েল, নিমতলা প্রেসক্লাবের সভাপতি নুরুল হুদা দুলাল, সাধারণ সম্পাদক মোঃ রেজাউল করিম রঞ্জু, সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মোঃ শাহীন হোসেন, সাংবাদিক মোর্শদুর রহমান, সালাউদ্দিন আহমেদ, রুস্তম আলী, আবুল কাশেম, মোঃ মাহবুবুল হক খান প্রমুখ।

সিভির সার্জন ডাঃ মোঃ আসিফ ফেরদৌস সাংবাদিকদের জানান, ৯ মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সী সকল শিশু এবং প্রাক-প্রাথমিক থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে টাইফয়েড টিকা প্রদান করা হবে। তবে অনলাইনে প্রতি জন শিক্ষার্থীদের অবশ্যই নিবন্ধন করে আসতে হবে।

তিনি আরও বলেন, এবার ১৩ উপজেলার শিক্ষার্থীদের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ৬ লক্ষ ২২ হাজার ৮৮১ জন এবং কমিউনিটি পর্যায়ে লক্ষমাত্রা ২ লক্ষ ৭০ হাজার ২৪৭ জন যা সব মিলিয়ে মোট ৮ লক্ষ ৯৩ হাজার ১২৮ জনকে টিকা প্রদান করা হবে। প্রতিটি শিক্ষার্থী যেন অনলাইনে নিবন্ধন করে টিকা গ্রহণ করতে পারে সেজন্য গণমাধ্যম কর্মীদের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। ১২ অক্টোবর রবিবার সকালে দিনাজপুর জিলা স্কুল প্রাঙ্গণে টাইফয়েড টিকা দান ক্যাম্পেইনের শুভ উদ্বোধন করা হবে বলে জানান সিভিল সার্জন।'

দিনাজপুর জেলা তথ্য অফিসার সাফিয়া আফরিন শেফা সাংবাদিকদের জানান, জন্ম নিবন্ধনের মাধ্যমে এই টিকা দেওয়ার নিবন্ধন ছাড়াও ম্যানুয়ালি টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ১২ অক্টোবর থেকে আগামী ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত এই টিকা কার্যক্রম চলমান থাকবে।

তিনি বলেন, ২০১৯ সালে এই টিকা পাকিস্তানের দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ২০২২ সালে এই টিকা নেপালেও সফলভাবে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে ভারতের মুম্বাইয়ে এই টিকা দেওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছাড়াও স্থায়ী টিকাদান কেন্দ্রে কার্যক্রম চলমান থাকবে।

টাইফয়েডের টিকা কোন্ দেশের তৈরি সাংবাদিকরা জানতে চাইলে সিভিল সার্জন বলেন, 'ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট টিকা তৈরি করছে। গ্যাভি প্রকল্পের মাধ্যমে এই টাকা বিনা মূল্যে দেওয়া হচ্ছে।
১৯৮৯ সাল থেকে দেশব্যাপী শিশু-কিশোর এবং সন্তান ধারণক্ষমতাসম্পন্ন নারীদের টিকা দিয়ে প্রতিরোধযোগ্য বিভিন্ন সংক্রামক রোগজনিত মৃত্যু ও পঙ্গুত্বের হার কমিয়ে আনার লক্ষ্যে সারা দেশে টিকাদান কর্মসূচি পরিচালনা করে আসছে।'

অনুষ্ঠানে সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করেন সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডাঃ হোসেন মোঃ নাহিদ।

দিনাজপুর জেলায় কর্মরত ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার ৩৪ জন গণমাধ্যমকর্মীসহ চিকিৎসক ও শিক্ষা কর্মকর্তারা ' কিশোর-কিশোরী ও নারী উন্নয়নে সচেতনতামূলক প্রচার কার্যক্রম' শীর্ষক এ কনসালটেন ওয়ার্কশপে অংশ নেন।

এর আগে সকালে একই স্থানে 'টিভিসি টিকাদান ক্যাম্পেইন- ২০২৫ নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করে দিনাজপুর জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়।

(এসএস/এসপি/অক্টোবর ১১, ২০২৫)