চাটমোহর প্রেসক্লাবের নিন্দা ও প্রতিবাদ
চাটমোহরে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে বিষোদগার

চাটমোহর প্রতিনিধি : পাবনার চাটমোহরে বিএনপি কর্মী-সমর্থকদের জামায়াতে ইসলামীতে যোগদানের সংবাদ প্রকাশের জেরে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের কতিপয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে সাংবাদিকদের ব্যাপারে বিরুপ মন্তব্যের ব্যাপারে শনিবার দুপুরে চাটমোহর প্রেসক্লাবে এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়।
জানা গেছে, সম্প্রতি পাবনার চাটমোহর উপজেলার মূলগ্রাম ইউনিয়নে বিএনপির কর্মী-সমর্থকদের বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীতে যোগদান নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এই সংবাদ প্রকাশের পর উপজেলার মূলগ্রাম ইউনিয়নের কতিপয় নেতা একজন ফেসবুক পেজের কন্টেন্ট ক্রিয়েটরকে ডেকে নিয়ে চাটমোহর প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে বিরুপ মন্তব্য ও বিষোদগার করেন। এছাড়া কালের কন্ঠের প্রতিনিধি আব্দুল লতিফ রঞ্জুকে মোবাইল ফোনে নিউজ প্রত্যাহারের ব্যাপারে বলেন।
অপরদিকে চাটমোহর পৌর বিএনপির সভাপতি আসাদুজ্জামান আরশেদ ও সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম তাইজুল পৃথক পৃথক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিএনপি কর্মী-সমর্থকদের জামায়াতে যোগদানের সংবাদটি মিথ্যা বলে দাবি করে বিবৃতি দেন। সেখানে শুধুমাত্র একটি জাতীয় পত্রিকার নাম উল্লেখ করে প্রকাশিত সংবাদ প্রত্যাহারের আহবান জানান। পৌর বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বিএনপির দুই গ্রুপের সাথে থাকার কারণে বিবৃতিও পৃথকভাবে দেন। এরপরেই চাটমোহর প্রেসক্লাবের এক জরুরী সভা শনিবার দুপুরে প্রেসক্লাবের হলরুমে অনুষ্ঠিত হয়।
চাটমোহর প্রেসক্লাবের সভাপতি দৈনিক ইত্তেফাক প্রতিনিধি হেলালুর রহমান জুয়েলের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক দৈনিক সংবাদ প্রতিনিধি এসএম মাসুদ রানার সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য দেন, সাবেক সভাপতি দৈনিক আমার দেশ প্রতিনিধি রকিবুর রহমান টুকুন, সহ- সভাপতি দৈনিক মানবজমিন প্রতিনিধি সঞ্জিত সাহা কিংশুক, দৈনিক সমকাল প্রতিনিধি শামীম হাসান মিলন, চ্যানেল-২৪ পাবনা জেলা প্রতিনিধি শাহীন রহমান, দৈনিক যুগান্তর প্রতিনিধি পবিত্র তালুকদার, দৈনিক কালের কণ্ঠ প্রতিনিধি আব্দুল লতিফ রঞ্জু, ভোরের দর্পন প্রতিনিধি এমএ জিন্নাহ, দৈনিক চলনবিলের বকুল রহমান, দৈনিক আজকের পত্রিকার শুভাশীষ ভট্টাচার্য তুষার, দৈনিক আমাদের সময়ের ইকতেখার আহমেদ টুটুল, দৈনিক খোলা কাগজের জাকির সেলিম প্রমুখ।
সভায় বিএনপির কতিপয় নেতাদের মন্তব্যের ব্যাপারে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়। প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে এ ধরণের আচরণে বিষ্ময় প্রকাশ করে তাদের বক্তব্য প্রত্যাহারের আহবান জানানো হয়। সভায় চাটমোহরে কর্মরত সংবাদকর্মীদের একতাবদ্ধ থেকে যে কোন অপপ্রচার, হুমকি-ধামকি ও প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবেলার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
কালের কন্ঠের প্রতিনিধি আব্দুল লতিফ রঞ্জু বলেন, বিএনপি কর্মী-সমর্থকদের জামায়াতে যোগদানের ভিডিও এবং ছবি বিভিন্ন গণমাধ্যমে নিউজ আকারে প্রকাশিত হয়েছে। যার প্রমাণও আমার কাছে আছে। তারপরেও মূলগ্রাম ইউনিয়নের কতিপয় নেতা আমাকে মোবাইল ফোনে সংবাদ প্রত্যাহার করতে বলেন। সেটা সম্ভব না বলার পর তিনি আমাকে বিভিন্নরকম কথা বলেন। যেটা একজন সংবাদকর্মী হিসেবে আত্মসম্মানে লাগে। জামায়াতের ব্যাপারে কিছু না বলে উল্টো আমাকেসহ সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে বিষোদগার করার কারণ বুঝলাম না।
এ ব্যাপারে চাটমোহর প্রেসক্লাবের সভাপতি হেলালুর রহমান জুয়েল বলেন, সাংবাদিকদের নিয়ে বিরুপ মন্তব্য ও বিষোদগার কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। সাংবাদিকরা কখনো কারো প্রতিপক্ষ না বা ভাবাও ঠিক না। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। চাটমোহরের সাংবাদিকরা সবাই ঐক্যবদ্ধ। ভবিষ্যতে এমন ঘটনা ঘটলে আমরা কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হবো।
(এসএইচ/এসপি/অক্টোবর ১২, ২০২৫)