ইতালিতে বিক্ষোভ হয়েছে, ডিম পড়েনি

শিতাংশু গুহ
আগেও বলেছিলাম, এখনো বলছি, ড. ইউনুস ও তাঁর সাঙ্গপাঙ্গরা যেখানেই যান, সেখানেই বিক্ষোভ হবে, গায়ে ডিম পড়বে, সুযোগ থাকলে হাতও পড়তো। আমেরিকা ও পশ্চিমা দেশে হাত পড়লে গ্রেফতার, তাই হাত পড়েনা, এজন্যে রক্ষা। ড. ইউনুস ইতালিতে গেছেন সেখানে বিক্ষোভ হয়েছে। আওয়ামী লীগ বিক্ষোভ করেছে। আজকাল আওয়ামী লীগের ডাকে মানুষ হয়, কারণ স্বাধীনতার সপক্ষের মানুষ নিজেদের তাগিদে যোগ দেয়। ক্ষমতায় থাকাকালে আওয়ামী লীগের সভায় মানুষ হতো না, কারণ সেখানে ‘জিন্দাবাদ’, মারামারি-খাওয়াখাওয়ি ও তোষামোদ ছাড়া কিছু ছিলোনা। এখন আওয়ামী লীগ দলের উর্ধে উঠে মানুষের কথা বলে। এজন্যে হয়তো মানুষ বলাবলি করে যে, আওয়ামী লীগ বিরোধী দলেই মানায়।
ইতালিতে ‘ডিম’ পড়েছে কিনা জানা যায়নি। তবে বিএনপি সেখানে আওয়ামী লীগের বিপক্ষে দাঁড়ায়নি? ইতালির সাথে অবশ্য নিউইয়র্ক বা লন্ডনের তুলনা করলে চলেনা। ড. ইউনুস এবার নিউইয়র্কের মত সঙ্গীদের ফেলে রেখে যাননি। তাই সেখানে ডিম মারার সুযোগ ছিলোনা। এটুকু বলা যায়, ড. ইউনুস ও তাঁর ক’জনা উপদেষ্টা ক্ষমতা ছাড়ার পরও যেখানেই যাবেন সেখানেই ‘লাঞ্ছিত’ হবার সম্ভবনা উড়িয়ে দেয়া যায়না। দেশে থাকলে অবশ্য তাদেরই দেখানো পথে ‘মব ভায়োলেন্স (জাস্টিস’)-র শিকার হতে পারেন। ড. ইউনূসের সমর্থনেও রোমে ২৯ জনের একটি বিশাল সমাবেশ হয়েছে, পক্ষান্তরে আওয়ামী লীগের সমর্থনে মানুষ হয়েছে হাজার খানেক, যা ইতালির মত একটি শহরের জন্যে যথেষ্ট।
ড. ইউনুস ইতালীতে কেন গেছেন কেজানে? ইতালির প্রধানমন্ত্রী সাথে তাঁর বৈঠক হয়নি। তবে সুযোগ পেয়ে তিনি ব্রাজিলের প্রেসিডেন্টের সাথে বৈঠক করেছেন। যেই সম্মেলনে তিনি গেছেন অর্থাৎ বিশ্ব খাদ্য সংস্থার ফোরামে বলেছেন, তিনি ১৭কোটি মানুষকে খাওয়াচ্ছেন এবং ১৩ লক্ষ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিচ্ছেন। এর কোনটা’র কৃতিত্ব তাঁর নয়, শেখ হাসিনা’র। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়াটা ভুল ছিলো, কৃতিত্ব নয়? শেখ হাসিনা নোবেল প্রাপ্তির আশায় তখন ‘মানবতার’ মা হয়েছিলেন। রোহিঙ্গারা এখন ‘বিষফোঁড়া’, সামনে আরো জ্বালাবে, ফেরত যাওয়ার প্রশ্নই ওঠেনা। ড. ইউনূসের ইতালি সফর আগের সফরগুলোর মতোই সফলতার ভাগ শূন্য। তার বয়স হয়েছে, জনগণের টাকায় আরামে একটু দেশ ঘুরে নিচ্ছেন আরকি!
ড. ইউনুস প্রতিমাসে একটি সফর করে অতীতের যেকোন সরকার প্রধানকে পেছনে ফেলে রেকর্ড করেছেন। ইতালি ছিলো তার ১৩ মাসে ১৪তম বিদেশ সফর। তিনি রোমের মেয়রের সাথে দেখা করেই খুশি। বিমানবন্দরে ইতালি সরকারের কেউ আসেনি, ফাও (জাতিসংঘ খাদ্য ও কৃষি সংস্থা)- কোন কর্মকর্তা আসেনি, বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত উপস্থিত ছিলেন। ডাষ্টবিন শফিক বলেছেন, ইতালীর প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা হবে, এমন কথা তো আমরা বলিনি। বাসস (বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা) পূর্বাহ্নে খবর দিয়েছিলো যে, ইতালির প্রধানমন্ত্রীর সাথে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক হবে। ঢাকায় একযুগ সাংবাদিকতার অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, বাসস উড়ো খবর দেয়নি, কেউ সেটা কনফার্ম করেছেন। শফিকুল আলম এখন ‘শাক দিয়ে মাছ ঢাকতে’ মিথ্যা বলছেন।
লেখক : আমেরিকা প্রবাসী।