স্টাফ রিপোর্টার : ফকির লালন শাহের ১৩৫তম মৃত্যুবার্ষিকী স্মরণে ইন্দিরা গান্ধী সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের মাধ্যমে ভারতীয় হাই কমিশন ‘লালন সন্ধ্যা’ শিরোনামে একটি সংগীত সন্ধ্যার আয়োজন করে।

বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিলনায়তনে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে লালন গীতির রানী ফরিদা পারভীনের প্রতিও শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।

অনুষ্ঠানে শিল্পী, পণ্ডিত, সংগীতপ্রেমী, যুবক এবং সর্বস্তরের মানুষের সমাগম ঘটে।

ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশন জানায়, অনুষ্ঠানটি উৎসর্গ করা হয় ফকির লালন শাহকে, যিনি ছিলেন মরমী কবি, দার্শনিক এবং মানবতাবাদী- বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ সাংস্কৃতিক ও আধ্যাত্মিক ঐতিহ্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ প্রতীক। কুষ্টিয়ায় জন্মগ্রহণকারী লালন সব ধর্মের মধ্যে সম্প্রীতির প্রতীক। তার গান উভয় দেশেই গাওয়া হচ্ছে, যা দুই দেশের পরস্পরের সঙ্গে জড়িত ইতিহাস এবং শান্তি, সহনশীলতা ও অন্তর্ভুক্তির মূল্যবোধের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।

সন্ধ্যায় লালন গানের শিল্পী ফরিদা পারভীনকে সংগীতের মাধ্যমে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানানো হয়।

উদ্বোধনী বক্তব্যে ভারতীয় হাই কমিশনার প্রণয় ভার্মা ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে স্থায়ী আধ্যাত্মিক ও সাংস্কৃতিক বন্ধনের কথা উল্লেখ করেন, যা ফকির লালন শাহের জীবন ও সঙ্গীতে প্রতিফলিত হয়েছে। তিনি বলেন, লালনের অন্তর্ভুক্তি, সম্প্রীতি ও মানবতার দর্শন জাতীয় সীমানা অতিক্রম করে উভয় জাতিকে তাদের যৌথ সাংস্কৃতিক যাত্রায় অনুপ্রাণিত করে চলেছে।

ফরিদা পারভীনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে হাই কমিশনার মন্তব্য করেন, তার সংগীত প্রজন্ম ও জাতিকে একসূত্রে যুক্ত করেছে- উভয় দেশের অসংখ্য উৎসবে তার পরিবেশনার মাধ্যমে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে একটি সাংস্কৃতিক সেতু হিসেবে কাজ করেছে।

তিনি আরও বলেন, আজকের অনুষ্ঠানটি কেবল স্মরণের জন্য নয়, বরং বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য উদযাপনেরও অংশ।

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে শিল্পী চন্দনা মজুমদার এবং কিরণ চন্দ্র রায় মনোমুগ্ধকর পরিবেশনা উপস্থাপন করেন। কুষ্টিয়ার টুনটুন বাউল ও তার দল বাউল সংগীতের মাধ্যমে শ্রোতাদের মুগ্ধ করেন। লেখক আবদেল মান্নান লালনের শিক্ষা, দর্শন, জীবন ও কর্ম এবং আজকের বিশ্বে এর প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে অন্তর্দৃষ্টিপূর্ণ বক্তৃতা দেন। সন্ধ্যাটি শিল্পী সুমির নেতৃত্বে ব্যান্ড ‘লালন’-এর প্রাণবন্ত ও আধুনিক পরিবেশনার মাধ্যমে শেষ হয়।

(ওএস/এএস/অক্টোবর ১৭, ২০২৫)