মোংলায় মুক্তিযুদ্ধের বিদেশী বন্ধু ফাদার রিগনের ৮ম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত
.jpg)
সরদার শুকুর আহমেদ, বাগেরহাট : মুক্তিযুদ্ধের অকৃত্রিম বিদেশী বন্ধু, কবি-সাহিত্যিক, শিক্ষানুরাগী ইতালিয় নাগরিক ফাদার মারিনো রিগনের ৮ম মৃত্যুবার্ষিকী আজ সোমবার সকালে নানা কর্মসূচির মধ্যদিয়ে বাগেরহাটের মোংলায় পালিত হয়েছে।
কর্মসূচির মধ্যে ছিলো মোংলার শেলাবুনিয়ায় ফাদার মারিনো রিগনের সমাধিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পন, আলোচনা সভা, প্রীতি ফুটবল ম্যাচ ও খ্রিষ্টিয় যাগ। সেন্ট পল্স ধর্মপল্লী, ফাদার রিগন শিক্ষা উন্নয়ন ফাউন্ডেশন, মোংলা নাগরিক সমাজ ও সেন্ট পল্স উচ্চ বিদ্যালয়ের আয়োজনে এসব কর্মসূচি পালন করা হয়।
সোমবার সকাল ৮টায় ফাদার রিগনের সমাধি চত্বরে আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সেন্ট পল্স ধর্মপল্লীর পুরোহিত ফাদার ফিলিপ মন্ডল। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন মোংলা পোর্ট পৌরসভার সাবেক মেয়র পৌর বিএনপি’র সভাপতি মো. জুলফিকার আলী।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি আব্দুল মান্নান হাওলাদার, ফাদার রিগন শিক্ষা উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের সভাপতি সুভাষ চন্দ্র বিশ্বাস, মোংলা নাগরিক সমাজের সভাপতি মো. নূর আলম শেখ, মোংলা সরকারি কলেজের শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক ড. অসিত বসু, সেন্ট পল্স উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ব্রাদার এন্ড্র জয়ন্ত কস্তা ও ফাদার রিপন সরদার।
আলোচনা সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মোংলা সরকারি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত উপাধ্যক্ষ বিভাষ চন্দ্র বিশ^াস, প্রভাষক শ্যামা প্রসাদ সেন, পৌর বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক নাসির তালুকদার, সাবেক পৌর প্যানেল মেয়র মো. আলাউদ্দিন, সেবা সংস্থার নির্বাহী পরিচালক মিনা হালদার, হলদিবুনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিশ^জিৎ হালদার প্রমূখ।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন ফাদার রিগনকে বাদ দিয়ে মোংলাকে কল্পনা করা যায়না। বাংলাদেশের মাটি, মানুষ ও সংস্কৃতির প্রেমে যাজকীয় দায়িত্ব পালন শেষে তিনি এদেশই থেকে গেছেন। মৃত্যুর পরেও যেন এদশেই সমাধি হয় এই অন্তিম ইচ্ছা তিনি জানিয়ে গেছিলেন। উল্ল্যেখ্য ফাদার রিগন ১৯২৫ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি ইতালির ভিল্লারভেরলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ১৯৫৩সালে তিনি ধর্মের শান্তিময় বাণী প্রচারের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশে আসেন। ২০১৭ সালে ২০ অক্টোবর ইতালিতে চিকিৎসারত অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর একবছর পরে অন্তিম ইচ্ছা অনুযায়ি তাঁর প্রিয় মোংলার শেলাবুনিয়ায় এনে তাঁকে সমাহিত করা হয়। ফাদার রিগন রবীন্দ্রনাথের ৪৮টি বই ও সাড়ে তিনশো লালন সঙ্গীত ইতালিয় ভাষায় অনুবাদ করেছেন। লালন সঙ্গীতের মধ্যে তিনি ঐশ্বরিক অনুভূতি খুঁজে পেয়েছেন। তিনি নিজেই বলতেন আমার মস্তকে রবীন্দ্রনাথ, অন্তরে লালন। ইতালিতে তিনি বাংলাদেশের অঘোষিত রাস্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করেছেন।
আলোচনা সভার আগে সেন্ট পল্স ধর্মপল্লী, পৌর ও উপজেলা বিএনপি, মোংলা সরকারি কলেজ, সেন্ট পল্স উচ্চ বিদ্যালয়, মোংলা নাগরিক সমাজ, ফাদার রিগন শিক্ষা উন্নয়ন ফাউন্ডেশন, সেবা সংস্থা, হলদিবুনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং সংস্থার পক্ষ থেকে ফাদার রিগনের সমাধিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পন করা হয়।
(এস/এসপি/অক্টোবর ২০, ২০২৫)