তথ্য: অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের মূল চালিকা শক্তি
ওয়াজেদুর রহমান কনক
২৪ অক্টোবর পালিত তথ্য দিবস (World Development Information Day) মূলত তথ্যের ক্ষমতা এবং উন্নয়নে তার অপরিহার্য ভূমিকা সম্পর্কে আন্তর্জাতিক সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য প্রতিষ্ঠিত। এই দিবসের মূল উদ্দেশ্য হলো উন্নয়ন সংক্রান্ত বিষয়গুলো—বিশেষ করে দারিদ্র্য, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অর্থনীতি এবং পরিবেশ সম্পর্কিত তথ্য—জনগণ ও নীতি-নির্ধারকদের মধ্যে সঠিকভাবে ছড়িয়ে দেওয়া। এটি শুধু তথ্য প্রচারের দিন নয়, বরং জনমত গঠন ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা জোরদার করার একটি প্ল্যাটফর্ম। দিবসটি উদযাপনের মাধ্যমে জনসাধারণকে বোঝানো হয় যে, তথ্য কেবল জ্ঞানের উৎস নয়; এটি নীতি নির্ধারণ, পরিকল্পনা, সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং সমান ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন নিশ্চিত করার জন্য অপরিহার্য। তথ্যের সঠিক প্রাপ্যতা এবং ব্যবহার নিশ্চিত করা, প্রযুক্তিগত অন্তর্ভুক্তি প্রসার করা এবং ডিজিটাল বিভাজন দূর করার মাধ্যমে এই দিবস আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে উন্নয়ন কার্যক্রমে তথ্যই মূল চালিকা শক্তি।
২৪ অক্টোবর বিশ্বজুড়ে পালিত হয় “World Development Information Day” বা “তথ্য ও উন্নয়ন বিষয়ক বিশ্ব তথ্য দিবস” হিসেবে। দিবসটির মূল উদ্দেশ্য হলো উন্নয়ন সংক্রান্ত বিষয়গুলো, বিশেষত উন্নয়নজনিত তথ্য, যোগাযোগ এবং জনমত গঠন সম্পর্কিত সচেতনতা বৃদ্ধি করা এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতাকে আরও জোরদার করা। জাতিসংঘের এই উদ্যোগ বিশ্বব্যাপী তথ্যের যথাযথ ব্যবহার, গণমাধ্যমের ভূমিকা ও উন্নয়নপ্রচেষ্টায় তথ্যের গুরুত্ব তুলে ধরে।
এই দিবসটির সূচনা ঘটে ১৯৭২ সালে, যখন UN Conference on Trade and Development (UNCTAD) তথ্য প্রচার ও জনমত গঠনের মাধ্যমে উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার প্রস্তাব দেয়। একই বছরের ১৯ ডিসেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ রেজ্যুলেশন A/RES/3038 (XXVII) গৃহীত করে, যার মাধ্যমে ২৪ অক্টোবরকে “World Development Information Day” হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এই তারিখটি নির্ধারণ করা হয় ১৯৭০ সালে গৃহীত “International Development Strategy for the Second United Nations Development Decade”-এর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে। প্রথমবার দিবসটি পালিত হয় ১৯৭৩ সালের ২৪ অক্টোবর, যা জাতিসংঘ দিবসের সঙ্গেও মিলে যায়। ফলে এই দিবসটি প্রতীকীভাবে জাতিসংঘের উন্নয়ন-সংক্রান্ত আদর্শ ও তথ্যবিনিময়ের প্রতিশ্রুতিকে একত্রিত করে।
তথ্য দিবসের তাৎপর্য আজ আরও গভীর হয়েছে। বিশ্বায়নের যুগে তথ্যই উন্নয়নের মূল চালিকা শক্তি। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, দারিদ্র্য বিমোচন, পরিবেশ, নীতি প্রণয়ন বা সামাজিক সচেতনতা—প্রতিটি ক্ষেত্রে তথ্যের সঠিক ব্যবহার একটি রাষ্ট্রের উন্নয়নের গতি নির্ধারণ করে। এই দিবসটি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির (ICT) বিস্তার, গণমাধ্যমের প্রভাব, এবং জনমতের ইতিবাচক ভূমিকা নিয়ে আলোচনা ও কর্মসূচি গ্রহণের অনুপ্রেরণা দেয়। এর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তথ্যের সমতা, স্বচ্ছতা এবং প্রাপ্যতা নিশ্চিত করার আহ্বান জানায়।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এই দিবসের গুরুত্ব বিশেষভাবে প্রযোজ্য। সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৪ সালের শুরুতে দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল প্রায় ৭৭.৩৬ মিলিয়ন, যা মোট জনসংখ্যার প্রায় ৪৪.৫ শতাংশ। একই সময় সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারকারী ছিল প্রায় ৫২.৯ মিলিয়ন, অর্থাৎ মোট জনসংখ্যার প্রায় ৩০.৪ শতাংশ। সক্রিয় মোবাইল সংযোগের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৮৮.৬ মিলিয়নে, যা জনসংখ্যার তুলনায় ১০৮ শতাংশেরও বেশি, কারণ অনেকে একাধিক সংযোগ ব্যবহার করছে। ২০২৪ সালের জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়কালে দেখা যায়, বাংলাদেশের ৫০.৪ শতাংশ পরিবার ইন্টারনেট সংযোগযুক্ত। ২০২৩ সালে এই হার ছিল ৪৩.৬ শতাংশ এবং ২০২২ সালে ছিল ৩৮.১ শতাংশ। এই বৃদ্ধি বাংলাদেশের ডিজিটাল অগ্রগতির প্রতিফলন।
তবে এ অগ্রগতির মধ্যেও বৈষম্য রয়ে গেছে। শহরে যেখানে ৭১.৪ শতাংশ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারে, সেখানে গ্রামে এই হার মাত্র ৩৬.৫ শতাংশ। একইভাবে, পুরুষদের তুলনায় নারীরা ইন্টারনেট ব্যবহারে অনেক পিছিয়ে আছে—যা স্পষ্টভাবে লিঙ্গভিত্তিক ডিজিটাল বিভাজনকে নির্দেশ করে। এই বৈষম্য শুধু প্রযুক্তিগত নয়, সামাজিক ও অর্থনৈতিক কাঠামোরও প্রতিফলন। ফলে তথ্যের সুলভতা ও সমান প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা এখন একটি উন্নয়ন চ্যালেঞ্জ।
২৪ অক্টোবরের তথ্য দিবস এসব বৈষম্য, সুযোগ ও চ্যালেঞ্জের দিকেই দৃষ্টি আকর্ষণ করে। এটি মনে করিয়ে দেয় যে, তথ্য শুধুমাত্র জ্ঞানের উৎস নয়—এটি একটি উন্নয়নমূলক শক্তি, যা নীতি নির্ধারণ, পরিকল্পনা, গবেষণা এবং নাগরিক অংশগ্রহণের ভিত্তি। উন্নয়ন পরিকল্পনায় সঠিক ও গ্রহণযোগ্য তথ্য ব্যবহার করলে সামাজিক ন্যায়বিচার, অর্থনৈতিক ভারসাম্য ও জনসাধারণের অংশগ্রহণ আরও শক্তিশালী হয়। তথ্যের প্রবাহ যত স্বচ্ছ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক হবে, উন্নয়নের ফলাফলও তত সমতাভিত্তিক হবে।
এই দিবস আমাদের আহ্বান জানায় তথ্যকে শুধু জ্ঞানের সীমায় না রেখে উন্নয়ন, মানবাধিকার ও প্রযুক্তিগত সমতার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে। বাংলাদেশের দ্রুত ডিজিটাল পরিবর্তনের এই সময়টিতে তথ্যের ব্যবহার ও প্রাপ্যতা আরও বৃদ্ধি করা গেলে তা হবে একটি টেকসই উন্নয়নের ভিত্তি। ২৪ অক্টোবরের এই দিন তাই কেবল স্মরণ নয়—এটি তথ্যনির্ভর ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাওয়ার এক দৃঢ় প্রতিজ্ঞার প্রতীক।
২৪ অক্টোবর পালিত *তথ্য দিবস (Information Day)* কেবল তথ্যপ্রযুক্তির সাফল্য উদযাপন নয়, বরং তথ্যপ্রাপ্তি ও ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তির বৈষম্য দূর করার আহ্বানও বটে। তথ্য আজকের উন্নয়নের মূল চালিকা শক্তি—এটি অর্থনীতি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, প্রশাসন ও সামাজিক পরিবর্তনের প্রতিটি ক্ষেত্রে নির্ণায়ক ভূমিকা রাখছে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এ দিবসের তাৎপর্য ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে, কারণ দেশটি এখন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিনির্ভর উন্নয়নের যুগে প্রবেশ করেছে।
২০২৫ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যা প্রায় ১৭৫ মিলিয়ন। এই বিপুল জনগোষ্ঠীর মাত্র ৪৪.৫ শতাংশ ইন্টারনেট ব্যবহার করছে—অর্থাৎ এখনও প্রায় ৯৬.৯ মিলিয়ন মানুষ অনলাইনে নেই। এই তথ্য থেকে বোঝা যায়, দেশের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ তথ্যপ্রবাহের মূলধারার বাইরে রয়ে গেছে। এর ফলে ডিজিটাল বৈষম্য কেবল প্রযুক্তিগত নয়, সামাজিক ও অর্থনৈতিক বাধায়ও পরিণত হচ্ছে।
গ্রামীণ ও শহুরে পার্থক্য আরও গভীর। GSMA–র “The State of Mobile Internet Connectivity 2024” প্রতিবেদনে দেখা যায়, গ্রামীণ এলাকায় মাত্র ২৬ শতাংশ মানুষ স্মার্টফোন ব্যবহার করে, যেখানে শহরাঞ্চলে এই হার ৪১ শতাংশ। এই বৈষম্য শুধুমাত্র প্রযুক্তিতে নয়, তথ্যপ্রাপ্তি ও ব্যবহার-দক্ষতার মধ্যেও প্রতিফলিত হচ্ছে। একইভাবে ২০২৪ সালের শেষ নাগাদ দেশের মোট বাড়ির ৫২ শতাংশে ইন্টারনেট সংযোগ থাকলেও, গ্রামীণ এলাকায় সেই হার এখনো মাত্র ৩৬.৫ শতাংশ। শহর এলাকায় তা ৭১.৪ শতাংশে পৌঁছেছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্যমতে, ২০২২ সালে ব্যক্তিগত কম্পিউটার ব্যবহারকারীর হার ছিল মাত্র ৭.৪ শতাংশ; ২০২৩ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৭.৯ শতাংশে, আর ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে পৌঁছেছে ৮.৯ শতাংশে। এটি আশাব্যঞ্জক প্রবণতা হলেও, এখনও উন্নত দেশের তুলনায় অনেক পিছিয়ে।
ডিজিটাল লেনদেনের ক্ষেত্রেও দ্রুত পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ১৫ বছরের ঊর্ধ্বে জনগোষ্ঠীর মধ্যে প্রায় ১৭.৬ শতাংশ এখন অনলাইন বা মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে অর্থ স্থানান্তর করছে। তবে অনলাইন ক্রয়-বিক্রয়ে অংশ নিচ্ছে মাত্র ৩.১ শতাংশ মানুষ। এই পরিসংখ্যান বাংলাদেশের ই-কমার্স ও ফিনটেক খাতের বিপুল সম্ভাবনা এবং এখনো অপ্রাপ্ত বাজারের বিশাল পরিধি তুলে ধরে।
অন্যদিকে, দেশের ICT খাত দ্রুত প্রসারিত হচ্ছে। Mordor Intelligence–এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালে বাংলাদেশের ICT বাজারের আকার দাঁড়াবে প্রায় ৮.৮৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, এবং ২০৩০ সালের মধ্যে তা ১২.০৭ বিলিয়নে পৌঁছাবে, যা বছরে গড়ে ৬.৩৩ শতাংশ হারে বৃদ্ধি। এই খাত শুধু কর্মসংস্থানের নয়, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনেরও অন্যতম বড় উৎস হয়ে উঠছে।
তবে প্রযুক্তি থাকা মানেই কার্যকর তথ্যপ্রাপ্তি নয়। “দ্বিতীয় স্তরের ডিজিটাল বিভাজন” এখন একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু—যেখানে মূল সমস্যা হলো ডিজিটাল দক্ষতা, কনটেন্ট তৈরি এবং অনলাইন অংশগ্রহণের সীমাবদ্ধতা। RSIS International–এর এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, বাংলাদেশের Generation Z-এর মধ্যে ৪৯ শতাংশের “স্ট্র্যাটেজিক ডিজিটাল স্কিল” রয়েছে, যেখানে মিলেনিয়াল প্রজন্মে এই হার মাত্র ৩৮.৫ শতাংশ। অর্থাৎ, তরুণ প্রজন্ম ডিজিটাল দক্ষতায় এগিয়ে থাকলেও সামগ্রিকভাবে দেশে ডিজিটাল সাক্ষরতার পরিমাণ এখনো সীমিত।
তথ্য দিবসের মূল উদ্দেশ্য এই বাস্তবতাগুলোকেই আলোচনায় আনা—তথ্যের স্বাধীনতা, সঠিক ব্যবহার, নিরাপত্তা, এবং তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারে ন্যায্যতা নিশ্চিত করা। এটি শুধু সরকারি নীতি নয়, প্রতিটি নাগরিকের দায়িত্ব ও অধিকার সম্পর্কেও সচেতনতা সৃষ্টির দিন। তথ্যের প্রবাহ অবাধ ও সমানভাবে না ঘটলে, উন্নয়নের ধারাবাহিকতা ভেঙে যায়।
বাংলাদেশে ডিজিটাল রূপান্তরের যাত্রা এখন “Smart Bangladesh” লক্ষ্যে অগ্রসর হচ্ছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, প্রশাসন, এমনকি স্থানীয় সরকারের কার্যক্রমেও তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার বেড়েছে। দেশের প্রায় সব ইউনিয়নে এখন ডিজিটাল সেন্টার স্থাপিত হয়েছে, যেখানে সাধারণ মানুষ সরকারি ও বেসরকারি সেবা পাচ্ছে অনলাইনে। কিন্তু এই অগ্রগতির মধ্যেও নারী, দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর তথ্যপ্রবেশাধিকার এখনও সীমিত।
তথ্য দিবস তাই কেবল উদযাপনের নয়, আত্মসমালোচনারও দিন—আমরা কতটা তথ্যনির্ভর হয়েছি, এবং কারা এখনো তথ্যের বাইরে আছে? পরিসংখ্যান বলছে, অগ্রগতি যেমন হয়েছে, তেমনি বিভাজনও রয়ে গেছে। তাই তথ্যের মুক্ত প্রবাহ ও সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করাই হবে প্রকৃত তথ্য দিবসের সাফল্য।
এই উপলক্ষে বলা যায়—তথ্য কেবল জ্ঞানের উৎস নয়; এটি স্বাধীনতার, স্বচ্ছতার, ও সমতার ভিত্তি। তথ্যপ্রাপ্তির অধিকার নিশ্চিত করা মানে উন্নয়নকে মানবিক করা, এবং প্রযুক্তিকে মানবসেবায় নিয়োজিত করা। ২৪ অক্টোবর সেই অঙ্গীকার পুনর্নবীকরণের দিন, যেখানে প্রত্যেকে তথ্যের আলোয় নিজের জায়গা খুঁজে পেতে পারে।
২৪ অক্টোবর, তথ্য দিবস, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ একটি দিন। এটি কেবল তথ্যপ্রযুক্তির অগ্রগতি উদযাপন নয়, বরং ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তি ও সমতার গুরুত্ব পুনর্ব্যক্তির একটি সুযোগ। দেশে তথ্যপ্রযুক্তির প্রসার বাড়লেও, এখনও উল্লেখযোগ্য বৈষম্য বিদ্যমান, যা উন্নয়ন কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্তির পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বাংলাদেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ২০২৫ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত প্রায় ৭৭.৩৬ মিলিয়ন, যা মোট জনসংখ্যার ৪৪.৫%। তবে, এই প্রবৃদ্ধি গ্রামীণ ও শহুরে অঞ্চলের মধ্যে বৈষম্য সৃষ্টি করেছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর কোয়ার্টারে, শহর এলাকায় ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর হার ছিল ৭১.৪%, যেখানে গ্রামীণ এলাকায় তা মাত্র ৩৬.৫%। এই পার্থক্য শুধুমাত্র প্রযুক্তিগত নয়, বরং অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কারণেও প্রভাবিত।
ডিজিটাল বিভাজন কেবল ইন্টারনেট প্রবেশাধিকারে সীমাবদ্ধ নয়; এটি দক্ষতা ও অংশগ্রহণের ক্ষেত্রেও প্রতিফলিত হচ্ছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্যমতে, ২০২২ সালে ব্যক্তিগত কম্পিউটার ব্যবহারকারীর হার ছিল মাত্র ৭.৪%, যা ২০২৩ সালে বেড়ে দাঁড়ায় ৭.৯% এবং ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম কোয়ার্টারে তা ৮.৯% এ পৌঁছেছে। একইভাবে, ডিজিটাল লেনদেনে অংশগ্রহণের হারও সীমিত; ১৫ বছরের ঊর্ধ্বে জনগণের মধ্যে মাত্র ১৭.৬% অনলাইন বা মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে অর্থ স্থানান্তর করে, এবং ৩.১% অনলাইন ক্রয়-বিক্রয়ে অংশ নেয়।
তথ্য দিবসের তাৎপর্য এখানেই: এটি আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে, তথ্যপ্রযুক্তির অগ্রগতি সবার জন্য সমানভাবে উপভোগ্য নয়। গ্রামীণ ও শহুরে অঞ্চলের মধ্যে ইন্টারনেট প্রবেশাধিকারের পার্থক্য, ডিজিটাল দক্ষতার অভাব, এবং অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতা উন্নয়ন কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্তির পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই বৈষম্য দূর করতে হলে, তথ্যপ্রযুক্তির অবকাঠামো সম্প্রসারণ, ডিজিটাল শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম জোরদার, এবং অর্থনৈতিক সমতা নিশ্চিত করতে হবে।
তথ্য দিবস আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে, তথ্যপ্রযুক্তির অগ্রগতি কেবল প্রযুক্তিগত নয়, এটি সামাজিক ও অর্থনৈতিক সমতারও প্রতীক। তথ্যপ্রবাহের সমতা নিশ্চিত করা মানে উন্নয়নের সঠিক পথে এগিয়ে যাওয়া। তাই, ২৪ অক্টোবর কেবল একটি দিবস নয়, এটি আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্যের প্রতীক, যা আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে, তথ্যপ্রযুক্তির অগ্রগতি সবার জন্য সমানভাবে উপভোগ্য হতে হবে।
২৪ অক্টোবর পালিত তথ্য দিবসের মূল উদ্দেশ্য হলো উন্নয়ন সংক্রান্ত তথ্যের সুলভতা ও প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা, যাতে জনগণ ও নীতি-নির্ধারকরা তথ্যভিত্তিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। বাংলাদেশে তথ্যপ্রযুক্তির অগ্রগতি সত্ত্বেও, ডিজিটাল বিভাজন ও অন্তর্ভুক্তির চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে, যা উন্নয়ন কার্যক্রমে সমতা ও ন্যায্যতা নিশ্চিত করতে বাধা সৃষ্টি করছে।
২০২৫ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত, বাংলাদেশের জনসংখ্যা প্রায় ১৭৫ মিলিয়ন, যার মধ্যে ৪৪.৫% ইন্টারনেট ব্যবহারকারী, অর্থাৎ প্রায় ৭৭.৭ মিলিয়ন মানুষ অনলাইনে রয়েছে। ([DataReportal – Global Digital Insights][1]) তবে, ৫৫.৫% মানুষ এখনও অনলাইনে নেই, যা ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তির পথে বড় প্রতিবন্ধকতা। গ্রামীণ ও শহুরে অঞ্চলের মধ্যে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর হারে বিশাল পার্থক্য রয়েছে; শহর এলাকায় ৭১.৪% মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করে, যেখানে গ্রামীণ এলাকায় এটি মাত্র ৩৬.৫%। ([The Business Standard][2])
ডিজিটাল বিভাজন কেবল ইন্টারনেট প্রবেশাধিকারে সীমাবদ্ধ নয়; এটি দক্ষতা ও অংশগ্রহণের ক্ষেত্রেও প্রতিফলিত হচ্ছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্যমতে, ২০২২ সালে ব্যক্তিগত কম্পিউটার ব্যবহারকারীর হার ছিল মাত্র ৭.৪%, যা ২০২৩ সালে বেড়ে দাঁড়ায় ৭.৯% এবং ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম কোয়ার্টারে তা ৮.৯% এ পৌঁছেছে। ([SAMENA Council][3]) একইভাবে, ডিজিটাল লেনদেনে অংশগ্রহণের হারও সীমিত; ১৫ বছরের ঊর্ধ্বে জনগণের মধ্যে মাত্র ১৭.৬% অনলাইন বা মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে অর্থ স্থানান্তর করে, এবং ৩.১% অনলাইন ক্রয়-বিক্রয়ে অংশ নেয়।
তথ্য দিবসের তাৎপর্য এখানেই: এটি আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে, তথ্যপ্রযুক্তির অগ্রগতি সবার জন্য সমানভাবে উপভোগ্য নয়। গ্রামীণ ও শহুরে অঞ্চলের মধ্যে ইন্টারনেট প্রবেশাধিকারের পার্থক্য, ডিজিটাল দক্ষতার অভাব, এবং অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতা উন্নয়ন কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্তির পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই বৈষম্য দূর করতে হলে, তথ্যপ্রযুক্তির অবকাঠামো সম্প্রসারণ, ডিজিটাল শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম জোরদার, এবং অর্থনৈতিক সমতা নিশ্চিত করতে হবে।
তথ্য দিবস আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে, তথ্যপ্রযুক্তির অগ্রগতি কেবল প্রযুক্তিগত নয়, এটি সামাজিক ও অর্থনৈতিক সমতারও প্রতীক। তথ্যপ্রবাহের সমতা নিশ্চিত করা মানে উন্নয়নের সঠিক পথে এগিয়ে যাওয়া। তাই, ২৪ অক্টোবর কেবল একটি দিবস নয়, এটি আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্যের প্রতীক, যা আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে, তথ্যপ্রযুক্তির অগ্রগতি সবার জন্য সমানভাবে উপভোগ্য হতে হবে।
লেখক : গণমাধ্যমকর্মী।
