সরদার শুকুর আহমেদ, বাগেরহাট : বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার হাতিরবেড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে উচু দেয়াল তুলে স্কুলটি সংরক্ষণ করায় চলাচলের একমাত্র পথটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অসহায় ৬টি পরিবারের সদস্যারা দূর্বিসহ জীবনযাপন করছে। দীর্ঘ ৬ বছর ধরে সরকারি স্কুলের দেয়ালের ঘেরাটোপে আটকা পড়ে এসব পরিবারের ১১ জন শিশু ও কিশোরসহ ২৩জন সদস্য দেয়ালের নিচ দিয়ে কুকুর বিড়ালের মতো চলাচল করতে হচ্ছে। 

আজ বুধবার সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, হাতিরবেড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে উচু দেয়ারের কারনে ৬ বছর ধরে স্কুলের পাশেদূর্বিসহ জীবনযাপন করা সঞ্জয় দাস, কিশোর দাস, নয়ন দাস, অসিম দাস, কৃষ্ণ দাস ও সজল দাসের পরিবারের স্ত্রী, ১১ জন শিশু ও কিশোরসহ ২৩জন সদস্য দেয়ালের নিচ দিয়ে কুকুর বিড়ালের মতো স্কুল এলাকা দিয়ে বাড়ী থেকে বের হতে হচ্ছে। বৃষ্টির সময় দেয়ালের নিচের মাটি কাদা পনিতে পূর্ণ থাকায় আসা যাওয়া করা অসম্ভব হয়ে দাড়ায়। একাধিকবার দেয়ালে মাথায় আঘাত লেগে শিশু ও নারীদের কারো কারো মাথাও কেটেছে। তবুও জীবন জীবিকার সন্ধানে দরিদ্র এসব পরিবারের সদস্যরা এভাবে তাদের বাড়ী থেকে প্রতিদিনই চলাচল করতে হচ্ছে।

সঞ্জয় দাস, নয়ন দাস ও কিশোর দাস বিষয়টি নিশ্চিত করে আরো জানান, আমাদের ৬টি পরিবারের চলাচলের কোন রাস্তা নেই। বাড়ীর পূর্ব পাশে ডোবা। পশ্চিম পাশে অন্য পরিবার তাদের বাড়ীর উপর দিয়ে আমাদের চলাচল করতে দেয়না। স্কুলের মাঠের উপর দিয়েই আমরা আগে চলাচল করতাম। ৬ বছর আগে সরকারি স্কুলটি উচু পাকা দেয়াল দিয়ে ঘিরে দেয়ায় আমরা অবরুদ্ধ হয়ে পড়ি। স্কুরের শিক্ষকদের কাছ থেকে মৌখিক অনুমতি নিয়ে দেয়ালের নিচ দিয়ে চলাচল করছি। আমরা দরিদ্র তাই আমাদের এই দূরাবস্থা দেখার কেউ নেই। ছয় বছর ধরে আমরা মানবেতর জীবনযাপন করছি। দেয়াল কেটে পকেট গেট করে দিলে আমারা নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারতাম।

রামপাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিজ তামান্না ফেরদৌসি জানান, আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি, বিষয়টি দুঃখজনক। যাতায়াতের জায়গায় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর উচু দেয়াল তুলে দিয়েছে। জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের চেষ্ট করা হচ্ছে।

রামপাল উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. ফরহাদ আলী জানান, দেয়াল দেয়ার কারনে ৬টি পরিবার অবরুদ্ধ হয়ে পড়ার বিষয়টি অমানবিক। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে দ্রুত সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করবো।

(এস/এসপি/অক্টোবর ২২, ২০২৫)