বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়ন: দারিদ্র্য হ্রাস থেকে ন্যায় প্রতিষ্ঠার যাত্রা

ওয়াজেদুর রহমান কনক
বাংলাদেশের উন্নয়ন অভিযাত্রা এক অনন্য উদাহরণ, যেখানে দারিদ্র্য, ক্ষুধা, বৈষম্য, কর্মসংস্থান ও ন্যায়ভিত্তিক প্রতিষ্ঠানের শক্তি একে অপরের সঙ্গে গভীরভাবে সংযুক্ত হয়ে টেকসই উন্নয়নের ভিত্তি গড়ে তুলছে। জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (SDGs) মধ্যে SDG 1, 2, 8, 10 ও 16 — এই পাঁচটি লক্ষ্য বাংলাদেশের উন্নয়ন কাঠামোয় বিশেষ তাৎপর্য বহন করে। ১৯৯০-এর দশকে যেখানে দেশের দারিদ্র্যের হার ছিল প্রায় ৫৬.৭ শতাংশ, সেখানে ২০২৪ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৮.৭ শতাংশে। একই সময়ে চরম দারিদ্র্যের হার ২৫.১ শতাংশ থেকে নেমে এসেছে ৫.৬ শতাংশে (BBS, ২০২৩)। ক্ষুধা হ্রাসেও বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার তুলনায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে — ২০০০ সালের গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্সে বাংলাদেশের স্কোর ছিল ৩৬.৮, যা ২০২৩ সালে নেমে এসেছে ১৯.০-এ, অর্থাৎ “গুরুতর” থেকে “মধ্যম” শ্রেণিতে প্রবেশ করেছে।
অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার গত এক দশকে গড়ে ৬.৫ থেকে ৭ শতাংশের মধ্যে ছিল, যা দক্ষিণ এশিয়ার গড় প্রবৃদ্ধির তুলনায় বেশি। শ্রমবাজারে প্রায় ৭ কোটি মানুষ যুক্ত রয়েছে, যার মধ্যে প্রায় ৮৫ শতাংশ কর্মসংস্থান আসে ক্ষুদ্র, মাঝারি ও কুটির শিল্প (SME) থেকে। এই খাত দেশের GDP-এর প্রায় ২৫ শতাংশ অবদান রাখে এবং গ্রামীণ অর্থনীতিতে আত্মনির্ভরশীলতার ভিত্তি স্থাপন করে।
তবে উন্নয়নের এই ধারায় বৈষম্যের প্রশ্ন এখনও প্রাসঙ্গিক। আয় বৈষম্যের জিনি সহগ ২০১০ সালে ০.৪৫ থেকে বেড়ে ২০২২ সালে ০.৫২-এ পৌঁছেছে, যা আঞ্চলিকভাবে বৈষম্য বৃদ্ধির ইঙ্গিত দেয়। গ্রামীণ ও শহুরে অর্থনৈতিক সুযোগে পার্থক্য, লিঙ্গভিত্তিক মজুরি বৈষম্য এবং শিক্ষা-স্বাস্থ্যসেবায় অসম প্রবেশাধিকার সামাজিক ভারসাম্যকে প্রভাবিত করছে।
এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় শক্তিশালী, স্বচ্ছ ও দায়বদ্ধ প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা অপরিহার্য। ন্যায়বিচার, সুশাসন ও দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণের কার্যকর কাঠামো ছাড়া টেকসই অর্থনীতি কেবল পরিসংখ্যানেই সীমাবদ্ধ থাকবে। বাংলাদেশ সরকারের “পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা”, “ডেল্টা প্ল্যান ২১০০”, এবং “ভিশন ২০৪১”—এই নীতিমালা কাঠামোগুলো টেকসই উন্নয়নকে দীর্ঘমেয়াদে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য প্রাতিষ্ঠানিক দিকনির্দেশনা দিচ্ছে।
এই সামগ্রিক প্রেক্ষাপটে ইনক্লুসিভ গ্রোথ ও মাইক্রোইকোনমিক সাসটেইনেবিলিটি হয়ে উঠেছে উন্নয়নচর্চার কেন্দ্রে। ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের বিকাশ, নারীর অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তি, কৃষিভিত্তিক উদ্ভাবন, গ্রামীণ ডিজিটাল অবকাঠামো এবং সামাজিক উদ্যোক্তাদের ভূমিকা—সব মিলিয়ে বাংলাদেশের উন্নয়ন এখন শুধু GDP-ভিত্তিক নয়, বরং “মানুষকেন্দ্রিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক” প্রবৃদ্ধির দিকে অগ্রসর হচ্ছে।
দারিদ্র্য দূরীকরণ (SDG 1), ক্ষুধামুক্ত বিশ্ব (SDG 2), মর্যাদাপূর্ণ কাজ ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি (SDG 8), বৈষম্য হ্রাস (SDG 10) এবং শান্তি, ন্যায় ও শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান (SDG 16) — এই পাঁচটি লক্ষ্যকে আলাদা হিসেবে নির্ধারণ করা হলেও বাস্তবে তারা একে অপরের সঙ্গে গভীরভাবে সম্পর্কিত। একটি লক্ষ্য অর্জন অন্যটির সাফল্যকে প্রভাবিত করে, যেমন দারিদ্র্য না থাকলে খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত হয়, খাদ্যনিরাপত্তা স্থিতিশীল হলে শ্রমশক্তি বাড়ে, শ্রমশক্তির উন্নয়ন অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করে, প্রবৃদ্ধি যদি ন্যায়সংগত হয় তবে বৈষম্য কমে যায়, আর বৈষম্য হ্রাস পেলে সমাজে শান্তি, ন্যায় ও শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে। অর্থাৎ এই লক্ষ্যগুলো একটি সামগ্রিক সামাজিক-অর্থনৈতিক চেইনের মধ্যে পরস্পর নির্ভরশীল এবং এদের মধ্যে সমন্বয় ছাড়া টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এই লক্ষ্যগুলোর বাস্তব প্রয়োগ ও প্রভাব বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। বিশ্বব্যাংকের ২০২৩ সালের তথ্য অনুসারে, দেশে দারিদ্র্যের হার ২০১০ সালের ৩১.৫ শতাংশ থেকে কমে ১৮.৭ শতাংশে এসেছে, যা উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হলেও কোভিড-১৯, বৈশ্বিক মুদ্রাস্ফীতি ও জলবায়ু পরিবর্তনের মতো সংকটে নতুন করে ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। ক্ষুধামুক্ত বিশ্বের লক্ষ্য অর্জনেও অগ্রগতি হয়েছে, তবে খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (FAO) তথ্য বলছে, এখনো প্রায় ১১ শতাংশ মানুষ অপুষ্টিতে ভুগছে। খাদ্যনিরাপত্তা, কৃষিজ উৎপাদনের বৈচিত্র্য, এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব এই খাতে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়ে গেছে।
অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য সফলতা অর্জন করেছে। ২০২৩–২৪ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধির হার ছিল গড়ে ৫.৮ শতাংশ, যা দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম উচ্চ হার। কিন্তু শ্রমবাজারে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের আধিক্য এখনো ৮৫ শতাংশেরও বেশি, ফলে মর্যাদাপূর্ণ কাজ বা ‘ডিসেন্ট ওয়ার্ক’-এর ধারণা এখনো পর্যাপ্তভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়নি। অর্থনৈতিক অগ্রগতি সত্ত্বেও আয়বৈষম্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিচ্ছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (BBS) তথ্য অনুযায়ী, আয় বৈষম্যের সূচক বা জিনি সহগ ২০১৬ সালে ছিল ০.৪৮, যা ২০২২ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ০.৫০। এটি ইঙ্গিত দেয় যে, প্রবৃদ্ধি হলেও সম্পদের সুষম বণ্টন ঘটছে না, ফলে অর্থনৈতিক সুযোগের ক্ষেত্রে বৈষম্য বাড়ছে।
শান্তি, ন্যায় ও শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান গঠনের লক্ষ্য (SDG 16) মূলত সুশাসন, আইনের শাসন ও প্রশাসনিক স্বচ্ছতার সঙ্গে সম্পর্কিত। জাতিসংঘের গ্লোবাল গভর্নেন্স ইনডিকেটরস রিপোর্টে দেখা গেছে, বাংলাদেশ এখনো মধ্যম অবস্থানে রয়েছে। ন্যায়বিচার, দুর্নীতিনিয়ন্ত্রণ ও জবাবদিহিমূলক প্রশাসনিক সংস্কৃতি গড়ে ওঠা টেকসই উন্নয়নের পূর্বশর্ত হিসেবে বিবেচিত। শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান না থাকলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি টেকসই হয় না, কারণ প্রশাসনিক অনিশ্চয়তা বিনিয়োগ, উদ্ভাবন ও মানবসম্পদ উন্নয়নে বাধা সৃষ্টি করে।
এই পাঁচটি লক্ষ্যকে ঘিরে বাংলাদেশের উন্নয়ন চিত্রকে বোঝার জন্য “অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি” ও “মাইক্রো-ইকোনমিক স্থায়িত্ব” ধারণা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি এমন এক অর্থনৈতিক নীতি যেখানে প্রবৃদ্ধির সুফল সমাজের সব স্তরে পৌঁছায়, বিশেষত প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে। আর মাইক্রো-ইকোনমিক স্থায়িত্ব মানে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা, কৃষক, শ্রমজীবী ও স্থানীয় উৎপাদনশীলতার টেকসই রূপান্তর। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা (SMEs) বাংলাদেশের জিডিপির প্রায় ২৫ শতাংশ অবদান রাখে এবং কর্মসংস্থানের অর্ধেকের বেশি সৃষ্টি করে। এই খাতকে প্রযুক্তি, প্রশিক্ষণ, ও আর্থিক সহায়তার মাধ্যমে শক্তিশালী করা গেলে দারিদ্র্য হ্রাস ও কর্মসংস্থান একসঙ্গে বৃদ্ধি পাবে।
বাংলাদেশে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা উন্নয়নকে কেন্দ্র করে “টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়ন” নিয়ে গবেষণা করার বিষয়টি অত্যন্ত সময়োপযোগী। এখানে গবেষণা করা যেতে পারে কিভাবে স্থানীয় উদ্যোক্তারা দারিদ্র্য হ্রাসে ভূমিকা রাখছে, কোন খাতে মাইক্রোফাইন্যান্স কার্যকর, এবং কীভাবে উদ্যোক্তা কার্যক্রম সামাজিক ন্যায়বিচার ও প্রাতিষ্ঠানিক স্থিতিশীলতার সঙ্গে যুক্ত হতে পারে।
জাতিসংঘের SDG Progress Report ২০২৪ অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী মাত্র ১৫ শতাংশ লক্ষ্য সঠিক পথে আছে, ৫০ শতাংশ ধীরগতিতে এগোচ্ছে, আর প্রায় ৩০ শতাংশ লক্ষ্য পিছিয়ে আছে। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। কোভিড-১৯, রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ, এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব দেশের অর্থনীতি ও খাদ্যনিরাপত্তাকে প্রভাবিত করেছে। তবুও দেশের সামাজিক উদ্যোক্তা, নারীর অংশগ্রহণ, ও প্রযুক্তিনির্ভর ক্ষুদ্র উদ্যোগ—এই তিনটি ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে।
সবশেষে বলা যায়, এই পাঁচটি লক্ষ্য পরস্পর নির্ভরশীল উন্নয়ন কাঠামো গঠন করে, যেখানে দারিদ্র্য দূরীকরণ ও ক্ষুধামুক্ত বিশ্ব প্রতিষ্ঠা না হলে টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও বৈষম্য হ্রাস সম্ভব নয়, আর ন্যায়পূর্ণ প্রতিষ্ঠান ছাড়া সেই উন্নয়ন স্থায়ী হয় না। তাই অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা উন্নয়ন শুধু অর্থনৈতিক বিষয় নয়, এটি সামাজিক ন্যায্যতা, রাজনৈতিক স্থিতি ও মানবিক মর্যাদার বিষয়ও। বাংলাদেশের উন্নয়নযাত্রায় এই সমন্বিত কাঠামোই টেকসই ভবিষ্যতের বাস্তব রূপরেখা।
দারিদ্র্য দূরীকরণ (SDG 1), ক্ষুধামুক্ত বিশ্ব (SDG 2), মর্যাদাপূর্ণ কাজ ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি (SDG 8), বৈষম্য হ্রাস (SDG 10) এবং শান্তি, ন্যায় ও শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান (SDG 16)। এগুলো আলাদা আলাদা লক্ষ্য হলেও বাস্তবে একে অপরের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত — দারিদ্র্য থাকবে না, তবেই খাদ্য-নিরাপত্তা, পেশাগত সম্মান ও সামাজিক সমতাও বজায় থাকবে; একইভাবে ন্যায়পূর্ণ প্রতিষ্ঠান না থাকলে অর্থনৈতিক সুযোগভিত্তিক বৈষম্য ও অস্থিতিশীলতা বাড়ে। নিচে প্রতিটি লক্ষ্যকে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বিশ্লেষণ করে প্রয়োজনীয় পরিসংখ্যান, নীতি ও চ্যালেঞ্জ উপস্থাপন করা হলো, শেষে ইনক্লুসিভ গ্রোথ ও মাইক্রো-ইকোনমিক স্টেইনবিলিটি ও একজন গবেষকের জন্য প্রাসঙ্গিক গবেষণা ধারণা দেয়া আছে।
বাংলাদেশে দারিদ্র্য-দূরীকরণ (SDG 1)-কে দেখে মনে হয় সামগ্রিকভাবে গত দুই দশকে বড় অগ্রগতি হয়েছে; আন্তর্জাতিক দৃষ্টিতে চরম দারিদ্র্যের হার (আন্তর্জাতিক লাইন অনুযায়ী) উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে, কিছু সূত্র ২০১০ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে চরম দারিদ্র্য ১১.৮% থেকে প্রায় ৫.০% নামায় দেখায়। তবে জাতীয় লাইন ও ভোক্তা-প্যাটার্ন ভিন্ন হওয়ায় ও সাম্প্রতিক মুদ্রাস্ফীতি-শক, কোভিড-১৯ ও জিওপলিটিক্যাল ক্লিশের প্রভাবে দারিদ্র্যের সম্পূর্ণ নির্মূল এখনও দূরস্বপ্ন; বিভিন্ন পরিমাপের মধ্যে পার্থক্য আছে—দেশীয় উপাত্তে ২০১৬/১৭-এর জাতীয় দরদীর্ঘ রেকর্ড অনুযায়ী দরিদ্রতার হারের উচ্চতর মানও দেখা গেছে, ফলে নীতিনির্ধারণে কনটেক্সট ভিত্তিক নীতি খুবই জরুরি। বিশ্বব্যাংক এবং জাতিগত পর্যবেক্ষণগুলো নির্দেশ করে যে ভৌত আয়ের বৃদ্ধির পাশাপাশি সামাজিক সুরক্ষা, লক্ষ্যমাত্রিক জনশক্তি পুনর্বিন্যাস ও কৃষি-উৎপাদকত্ব বাড়ানোই স্থায়ী দারিদ্র্যহ্রাসের চাবিকাঠি। ([World Bank][1])
ক্ষুধামুক্ত বিশ্ব (SDG 2)-এর প্রসঙ্গে বাংলাদেশে খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টি সূচকগুলোতে মিশ্র চিত্র দেখা যায়। জাতীয় খাদ্য উৎপাদন ও জেলাচাষের ঐতিহ্যিক শক্তির কারণে দেশে মোট খাদ্য সরবরাহের পর্যাপ্ততা বেশ সময় ধরে রক্ষিত থাকলেও মাইকো-নিউট্রিয়েন্ট ঘাটতি, শিশুসংক্রান্ত অপুষ্টি ও নিম্ন-ইন্সটিটিউশনাল সক্ষমতার কারণে আঞ্চলিক ও গোষ্ঠীভিত্তিক খাদ্য অসমতা রয়ে গিয়েছে। সাম্প্রতিক বিশ্লেষণ ও ফিল্ড-স্টাডি দেখায় খাদ্য নিরাপত্তায় প্রবল ঝুঁকি তৈরী হয় তখনই—যখন বাজার-শক, লজিস্টিক বিঘ্নিত হয় বা পরিবেশগত দুর্যোগ—এগুলো একবার ঘটলে দুর্বল গৃহস্থীর খাদ্যস্থিতি দ্রুত বিপর্যস্ত হয়। তাই খাদ্য-সিস্টেমকে শুধু উৎপাদন-কেন্দ্রিক নয়, পুষ্টি, ভ্যান্ডার-চেইন ও সামাজিক সুরক্ষা সমন্বিতভাবে দেখতে হবে। ([IFPRI Bangladesh][2])
SDG 8—মর্যাদাপূর্ণ কাজ ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি—বাংলাদেশে নিযুক্তি-উদ্ভাবন ও শিল্পায়নে ধারাবাহিক সাফল্য দেখেছে: তৈরি পোশাক খাতের দ্রুত বিস্তৃতি, রেমিট্যান্স প্রবাহ ও রপ্তানি-ভিত্তিক শিল্পসেক্টরের প্রসার অর্থনীতিকে গতিমান করেছে। তবু কাজে প্রাপ্তির মান (decent work) এবং যুবসংবলিত বেকারত্ব বড় চ্যালেঞ্জ। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার সাম্প্রতিক রিপোর্ট অনুযায়ী যুব বেকারত্ব ও লেবার-ফোর্সে নারীর অংশগ্রহণে বৈষম্য প্রবল — ২০২৪–২০২৫ পর্যন্ত যুবসংখ্যায় বেকারত্বের উচ্চ হার বিশেষত তরুণ নারীদের মধ্যে চোখে পড়ে; অনেক তরুণ বা অনগ্রসর গ্রুপ “NEET” (not in employment, education or training) ক্যাটাগরিতে পড়ে, যা সামাজিক ভাঙন ও দীর্ঘমেয়াদী আয়ের ক্ষতি ডেকে আনে। এছাড়া অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কর্মসংস্থান বেশি হওয়ায় সামাজিক সুরক্ষা ছাড়াই ব্যাপক সংখ্যক মানুষ ঝুঁকিতে থাকে; ফলে শ্রমনীতি-সংকোচন, দক্ষতা উন্নয়ন ও চারপাশের শিল্পনীতি-সংযোজন জরুরি। ([ILOSTAT][3])
SDG 10—বৈষম্য হ্রাস—বাংলাদেশে আয়ের বৈষম্য মাপার Gini সূচক সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কিছুটা বেড়েছে; বিশ্বব্যাংকের আনুমানিক হিসাব ২০২২ সালে গিনি ৩৩.৪ প্রদর্শন করে, যা পূর্বের তুলনায় সামান্য বাড়ার ইঙ্গিত দেয়। আঞ্চলিক, নগর-গ্রামীণ, লিঙ্গভিত্তিক ও বর্গভিত্তিক বৈষম্য দেশের মধ্যে অগ্রগতিকে অসম করে; প্রযুক্তি ও ডিজিটাল সুবিধা-অসুবিধা, শিক্ষার মানভিত্তি, ভূমি ও অর্থনৈতিক সম্পদের অসম বন্টন—এসবই বৈষম্যকে উত্তেজিত করে। নীতি-দিতে হলে লক্ষ্যভিত্তিক ট্রান্সফার, কার্যকর করনৈতিক, কৃষি-সমর্থন ও জনগণের ওপর ভিত্তি করে সার্ভিস-পুশিং স্পেশাল প্রোগ্রাম দরকার। ([CEIC Data][4])
SDG 16—শান্তি, ন্যায় ও শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান—টেকসই উন্নয়নের একটি কাঠামোগত অনুষঙ্গ। বাংলাদেশে সাধারণভাবে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক স্থিতিশীলতা, কমেটিভ রেজিমেন এবং স্থানীয় সরকার/কমিউনিটি-ভিত্তিক অংশগ্রহণ উন্নয়ন কার্যক্রমে সহায়ক হয়েছে, কিন্তু তবু দুর্নীতি, আইনি অপ্রতিষ্ঠানিকতা ও কখনো কখনো সামাজিক উত্থান-পতন বা হিংস্রতা উন্নয়ন খাতে ঝুঁকি তৈরি করে। শক্তিশালী আর স্বচ্ছ প্রতিষ্ঠান না থাকলে সরকারি খাতের পুনর্বিন্যাস, বিজনেস-বিধি, এবং সামাজিক নিরাপত্তা নীতি সঠিকভাবে প্রয়োগ করা কঠিন হয়। তাই জনবিচার, প্রশাসনিক জবাবদিহিতা ও স্থানীয় ক্ষমতায়ন SDG প্রয়োগে ভিত্তিমূল চালিকা শক্তি হিসেবে বিবেচ্য।
ইনক্লুসিভ গ্রোথ (Inclusive Growth) ও মাইক্রোইকোনমিক স্টেইনবিলিটি (Microeconomic Sustainability)—এসব ধারণা মূলত নিশ্চিত করে যে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ফল সুবিধাভাগ করে সকল স্তরে ছড়ানো উচিত এবং ছোট একক (হাউসহোল্ড বা মাইক্রো-এন্টারপ্রাইজ)-কে ধৈর্যশীল ও পরিবেশভিত্তিকভাবে টিকে থাকার কৌশল শেখানো জরুরি। ইনক্লুসিভ গ্রোথ মানে শুধু জিডিপি-বৃদ্ধি নয়—এটি কর্মসংস্থান-সমৃদ্ধ, সমতা-মনস্ক ও সোশ্যাল-প্রটেকশন-সম্পৃক্ত অগ্রগতি।
মাইক্রোইকোনমিক স্টেইনবিলিটি বলতে আমরা বুঝি—স্থায়ী মাইক্রো-আয়ের উৎস, আর্থিক অন্তর্ভুক্তি (microcredit, digital finance), বাজার-অ্যাক্সেস, দক্ষতা ও প্রযুক্তি-উত্তরণ যাতে ক্ষুদ্র এককগুলোয় প্রতিকূলতার সময় টিকে থাকতে পারে। বাস্তবে এর জন্য দরকার টার্গেটেড ক্রেডিটসুবিধা, টেকসই কৃষিকৌশল, স্থানীয় ভ্যালু-চেইন শক্তিশালীকরণ এবং বিউরো-ক্র্যাটিক বাধা সরে দেয়া।
বাংলাদেশে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা (MSMEs / SMEs / microenterprises) দেশের অর্থনীতির মেরুদণ্ড; এগুলো শিল্প, সফল গ্রামীণ উদ্যোগ ও সেবা খাতে কর্মসংস্থান তৈরিতে বিশাল ভূমিকা রাখে। আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ডেটা নির্দেশ করে যে মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগগুলো দেশীয় উৎপাদনে বড় অংশগ্রহণ করে এবং অসংগঠিত খাতের মধ্যেই কর্মসংস্থানের প্রধান উৎসগুলোর এক — ADB এবং অন্যান্য মূল্যায়ন অনুসারে MSME-খাত বহু ক্ষেত্রে শিল্পখাতে কর্মসংস্থানের ৩০–৮০% পর্যন্ত অবদান রাখে এবং ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের মধ্যে প্রচুর অংশই অ-আধিকারিক ও নারীর নেতৃত্বাধীন। বাংলাদেশে MSME-এর সুনির্দিষ্ট পরিসংখ্যানগত চিত্রে দেখা যায় কোয়ান্টিটির পাশাপাশি অনেক উদ্যোক্তা-ই ফাইন্যান্সিং-গ্যাপ, বাজার-অ্যাক্সেস সীমা ও প্রযুক্তিগত দক্ষতার অভাবে ফুল-পটেনশিয়াল কাজে লাগাতে পারে না; অর্থনীতির ডিজিটালীকরণ, ব্র্যান্ডিং ও রপ্তানি-কাপাসিটি বাড়ালে এই খাত দেশের টেকসই উন্নয়নের বড় চাবিকাঠি হবে। ([cipe.org][5])
বাংলাদেশের সাফল্য স্পষ্ট: দারিদ্র্য ও খাদ্য নিরাপত্তায় শতকরা অগ্রগতি, রপ্তানি-চালিত শিল্পে অবিরাম শক্তি এবং স্থানীয় উদ্যোগের বৃদ্ধি। তবু চ্যালেঞ্জও সমানভাবে সঘন: ক্ষুদ্র ও তরুণ কর্মসংস্থানের গুণগত অসঙ্গতি, আয়ের বৈষম্য বৃদ্ধি, ক্লাইমেট-শক-বাস্তবতা ও সামাজিক সুরক্ষা-ফান্ডের সীমা। এই মডিউলে শিক্ষার্থীদের এবং গবেষকদের উদ্দেশ্য হওয়া উচিত—নীতিনির্ধানী ও বাস্তব মাধ্যমিক পদক্ষেপগুলোর এমন একটি স্পষ্ট ও প্রমাণভিত্তিক তালিকা তৈরি করা যা টেকসই অর্থায়ন, দক্ষতা উন্নয়ন ও স্থানীয় ক্ষমতাবৃদ্ধির সমন্বয়ে ইনক্লুসিভ গ্রোথ প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করে।
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ইতিহাসে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা বা ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগ (SME) খাত এক গভীর সামাজিক ও অর্থনৈতিক পরিবর্তনের প্রতীক। স্বাধীনতার পর দারিদ্র্য, বেকারত্ব ও বৈষম্যের চক্র ভাঙতে এই খাত ধীরে ধীরে দেশের উন্নয়নযাত্রার অন্যতম ভিত্তি হয়ে উঠেছে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (SDG) দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা সরাসরি অবদান রাখছেন SDG 1 (দারিদ্র্য দূরীকরণ), SDG 8 (মর্যাদাপূর্ণ কাজ ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি), SDG 10 (বৈষম্য হ্রাস) এবং SDG 16 (শান্তি, ন্যায় ও শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান) অর্জনে।
বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় ১ কোটি ১০ লক্ষের বেশি ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা প্রত্যক্ষভাবে বা পরোক্ষভাবে কর্মসংস্থানে যুক্ত (BBS, ২০২৩)। এই খাত দেশের ৮০% শিল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে এবং জাতীয় মোট দেশজ উৎপাদনের (GDP) প্রায় ২৫% অবদান রাখে (Asian Development Bank, ২০২4)। বিশেষ করে নারীদের অংশগ্রহণ এখানে উল্লেখযোগ্য—বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, নারী উদ্যোক্তা ঋণের আওতায় ইতিমধ্যে ৩৫% নতুন উদ্যোক্তা নারী, যা লিঙ্গসমতার (SDG 5) ক্ষেত্রেও এক ইতিবাচক ধাপ।
ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা শুধু শহরে নয়, বরং গ্রামীণ সমাজে এক নতুন সামাজিক-অর্থনৈতিক ভারসাম্য সৃষ্টি করছেন। গ্রামীণ অর্থনীতিতে কৃষিভিত্তিক ক্ষুদ্র ব্যবসা, হস্তশিল্প, খুচরা বাণিজ্য, দর্জি বা সৌন্দর্যচর্চা পেশা—সবকিছুই এখন স্থানীয় আয়ের উৎসে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশে ক্ষুদ্র উদ্যোগ খাতের উন্নয়নে পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (PKSF), BRAC, ASA, Grameen Bank এবং বিভিন্ন NGO–MFIs (Microfinance Institutions) দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছে। এদের যৌথ প্রচেষ্টায় প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অর্থনৈতিক সম্পৃক্ততা বেড়েছে, যা SDG-এর “Leave No One Behind” প্রতিশ্রুতির একটি বাস্তব উদাহরণ।
একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো—ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের উন্নয়নে অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তি (Financial Inclusion)। বাংলাদেশ ব্যাংকের “Agent Banking” ও “Mobile Financial Services (MFS)” এখন গ্রামীণ অর্থনীতিতে বিপ্লব ঘটিয়েছে। ২০২৫ সালের তথ্য অনুযায়ী, দেশে প্রায় ১৪ কোটি মোবাইল ফাইন্যান্স অ্যাকাউন্ট চালু রয়েছে এবং ৪৩% নারী ব্যবহারকারী এই ব্যবস্থার অংশ। এর ফলে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা সহজে ঋণ, লেনদেন ও সঞ্চয়ের সুযোগ পাচ্ছেন, যা অর্থনৈতিক টেকসইতার মূল উপাদান।
ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা উন্নয়নের আরেকটি বড় পরিবর্তন এসেছে ডিজিটালাইজেশন ও ই–কমার্স থেকে। করোনাকালীন সময়ে অনলাইন ব্যবসা দ্রুত বিস্তার লাভ করে; বর্তমানে দেশে প্রায় ৭ লাখ সক্রিয় অনলাইন উদ্যোক্তা রয়েছেন, যার মধ্যে প্রায় ৬০% নারী। ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, ও হোয়াটসঅ্যাপভিত্তিক ব্যবসা এখন স্থানীয় অর্থনীতিকে এক নতুন মাত্রা দিয়েছে। সরকারের “Digital Bangladesh Vision 2021” এবং “Smart Bangladesh Vision 2041” নীতিমালায় এই প্রবণতাকে আরও গতিশীল করা হয়েছে।
তবে চ্যালেঞ্জও রয়েছে। ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা প্রায়ই সীমিত মূলধন, প্রশিক্ষণের অভাব, অবকাঠামোগত দুর্বলতা এবং বাজারে প্রবেশাধিকারের সংকটে ভোগেন। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ (BIDS)–এর ২০২৩ সালের সমীক্ষায় দেখা যায়, প্রায় ৭০% ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা ব্যাংক ঋণের বাইরে থাকে; তাদের বড় অংশ এখনো অনানুষ্ঠানিক আর্থিক ব্যবস্থার ওপর নির্ভরশীল। এছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষয়ক্ষতি, যেমন—বন্যা, নদীভাঙন, লবণাক্ততা, গ্রামীণ উদ্যোক্তাদের পুঁজিতে সরাসরি প্রভাব ফেলছে।
অর্থনৈতিক নীতিমালায় “Inclusive Growth” বা অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির ধারণা আজ অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। এটি কেবল GDP বাড়ানো নয়; বরং এমন প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করা, যা সমাজের সব শ্রেণি—নারী, যুবক, প্রান্তিক জনগোষ্ঠী ও প্রতিবন্ধী—সবাইকে উন্নয়নের মূলস্রোতে যুক্ত করে। ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা খাত সেই অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির বাস্তব চিত্র।
বিশ্বব্যাংকের তথ্যমতে, বাংলাদেশে দারিদ্র্যের হার ২০১০ সালে ৩১.৫% থেকে ২০২৩ সালে নেমে এসেছে ১৮.৭%-এ। এই সাফল্যের পেছনে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের ভূমিকা অস্বীকার করার উপায় নেই। প্রতিটি ছোট ব্যবসা—একটি পরিবারের জীবিকা, একদল কর্মীর আয়, এক সমাজের উন্নয়নের প্রতিচ্ছবি।
যদি ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের উপযুক্ত সহায়তা, প্রযুক্তি প্রশিক্ষণ, বাজার সংযোগ, এবং টেকসই আর্থিক নীতি প্রদান করা যায়, তবে এই খাত বাংলাদেশের SDG 8: মর্যাদাপূর্ণ কাজ ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং SDG 10: বৈষম্য হ্রাস অর্জনে প্রধান চালিকাশক্তি হতে পারে। এটি শুধু অর্থনীতিকে নয়, সমাজকেও টেকসই ও ন্যায়ভিত্তিক পথে এগিয়ে নেবে।
বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়ন এখন অনেকাংশে নির্ভর করছে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের এই প্রাণশক্তির ওপর—যারা সীমিত সম্পদে অগাধ সাহস নিয়ে নিজেদের ও দেশের ভাগ্য বদলে দিচ্ছেন। তাদের হাত ধরেই এগিয়ে যাচ্ছে “Smart, Inclusive, and Sustainable Bangladesh”–এর স্বপ্ন।
লেখক : গণমাধ্যমকর্মী।