বিনোদন ডেস্ক : নব্বই দশকের দর্শকপ্রিয় চিত্রনায়িকা শাবনাজ। একই ধরনের গৎবাঁধা কাহিনী আর একই মুখ বারবার দেখতে দেখতে যখন দর্শক ক্লান্ত, ঠিক তখনই ঢাকাই সিনেমায় আবির্ভাব হয় স্নিগ্ধ-সুন্দর কিশোরী এই নায়িকার। বুধবার (২৯ অক্টোবর) এই অভিনেত্রীর জন্মদিন।

বিশেষ দিনে কোনো আয়োজন না থাকলেও পারিবারিকভাবেই দিনটি উদযাপন করা হবে বলে জানান শাবনাজ।

এই অভিনেত্রী বলেন, সত্যি বলতে কী এখন আর জন্মদিনকে ঘিরে কোনো উচ্ছ্বাস কাজ করে না। বাবা নেই-মা নেই, তাদের কথা জন্মদিন এলে বিশেষভাবে মনে পড়ে। ঘরোয়াভাবে যতটা অল্পের মধ্যে উদযাপন করা যায় ঠিক ততটুকুই।

সবার কাছে দোয়া চেয়ে এই অভিনেত্রী বলেন, জন্মদিনে সবার দোয়া চাই আল্লাহ যেন সুস্থ রাখেন, ভালো রাখেন। দর্শক এখনো আমাকে মনে রেখেছেন, এখনো দেখলে আগ্রহ নিয়ে কথা বলতে আসেন- এটাই অনেক বড় প্রাপ্তি।

চিত্রনায়িকা শাবনাজের পারিবারিক নাম সাবরিনা তানিয়া। তিন বোনের মধ্যে তিনি সবার বড়। শাবনাজের বাবা নাট্যশিল্পী স ম হুমায়ূন। তার সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে পরিচিত ছিলেন গুণী পরিচালক আজিজুর রহমান। তার মাধ্যমেই পরিচালক এহতেশামের হাত ধরে রূপালি পর্দায় পা বাড়ান শাবনাজ।

১৯৯১ সালে এহতেশামের ‘চাঁদনী’ সিনেমার মধ্যদিয়ে অভিষেক হয় শাবনাজের। সিনেমাতে নাম ভূমিকায় অভিনয় করে সবার মন জয় করে নেন ডাগর ডাগর চোখ আর নজরকাড়া হাসির মিষ্টি মেয়েটি। এই সিনেমায় শাবনাজের সঙ্গে জুটি বেঁধে পর্দায় হাজির হন চিত্রনায়ক নাঈম।

এরপর নাঈম-শাবনাজ এতটাই জনপ্রিয় হয়ে উঠেন যে, জুটি হিসেবে তাদের দর্শক গ্রহণ করে নেয়। যে কারণে জুটিবদ্ধ হয়ে তারা পরবর্তীতে ‘জিদ’, ‘লাভ’, ‘সোনিয়া’, ‘অনুতপ্ত’, ‘চোখে চোখে’, ‘বিষের বাঁশি’, ‘টাকার অহংকার’, ‘সাক্ষাৎ’, ‘ঘরে ঘরে যুদ্ধ’ সিনেমাতে অভিনয় করেন।

নাইম-শাবনাজ ১৯৯৪ সালে বিয়ে করেন। একে অন্যের বিপরীতে ছাড়া বাইরে তারা খুব কম সিনেমাতেই অভিনয় করেছেন। ২০০১ সালে সর্বশেষ এই জুটিকে প্রয়াত আজিজুর রহমানের ‘ঘরে ঘরে যুদ্ধ’ সিনেমাতে দেখা যায়। তবে এরপর ২০০৭ সালে শাবনাজকে আজিজুর রহমানেরই ‘ডাক্তার বাড়ি’ সিনেমাতে অভিনয়ে দেখা যায়।

এই মুহূর্তে দেশে আলোচনায় রয়েছে চলচ্চিত্রের অমর নায়ক সালমান শাহ’র মৃত্যুর বিষয়টি। এই ক্ষণজন্মা নায়কের বিপরীতেও শাবনাজ অভিনয় করেছেন শিবলী সাদিকের ‘মায়ের অধিকার’, হাফিজ উদ্দিনের ‘আঞ্জুমান’ ও তমিজ উদ্দিন রিজভীর ‘আশা ভালোবাসা’ সিনেমায়। ‘মায়ের অধিকার’ সিনেমাটিই সবচেয়ে বেশি আলোচনায় এসেছে এবং দর্শকপ্রিয়তা পেয়েছে সালমান-শাবনাজের তিন সিনেমার মধ্যে।

এদিকে ১৯৯৬ সালটি শাবনাজের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কারণ সেই বছররের ৮ নভেম্বর মুক্তি পেয়েছিল নায়ক আলমগীর পরিচালিত ‘নির্মম’ সিনেমাটি। যেখানে অভিনয় করে তিনি তার অভিনয় জীবনের একমাত্র জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারটি পেয়েছিলেন।

বলে রাখা যায়, রূপালি পর্দায় ঝড় তোলা নাঈম-শাবনাজ জুটি সুখী দম্পতির জলন্ত উদাহরণ। সংসার জীবনে তাদের রয়েছে দুই কন্যা সন্তান নামিরা নাঈম ও মাহদিয়া নাঈম।

(ওএস/এএস/অক্টোবর ২৯, ২০২৫)