শ্বেতাঙ্গদের অগ্রাধিকার দিয়ে সর্বনিম্ন শরণার্থী কোটা ঘোষণা ট্রাম্পের
 
			আন্তর্জাতিক ডেস্ক : শ্বেতাঙ্গ আফ্রিকানদের অগ্রাধিকার দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সর্বনিম্ন শরণার্থী কোটা ঘোষণা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০২৬ অর্থবছরে মাত্র ৭,৫০০ জন শরণার্থীকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে। নতুন কোটা ২০২৫ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৬ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।
৩০ সেপ্টেম্বরের তারিখ দিয়ে বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) প্রকাশিত প্রেসিডেন্টের এক নথিতে এই ঘোষণা দেওয়া হয়েছে বলে সংবাদ প্রকাশ করেছে আল-জাজিরা।
নথিতে বলা হয়েছে, এই সীমিত সংখ্যক শরণার্থী কোটায় দক্ষিণ আফ্রিকার শ্বেতাঙ্গ আফ্রিকানদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। ট্রাম্পের এক নির্বাহী আদেশে বলা হয়, এরা নিজ দেশে অবৈধ বৈষম্যের শিকার। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার সরকার ও আফ্রিকানার নেতারা ট্রাম্পের এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন।
ট্রাম্প প্রশাসন জানিয়েছে, এখন থেকে স্বাস্থ্য ও মানবসেবা বিভাগের রিফিউজি রিসেটেলমেন্ট অফিস শরণার্থী পুনর্বাসন কার্যক্রম পরিচালনা করবে। এর ফলে দীর্ঘদিন ধরে এই কাজে যুক্ত বহু বেসরকারি সংস্থা ও মানবাধিকার সংগঠনকে এ দায়িত্ব সরিয়ে দেওয়া হবে।
ট্রাম্প প্রশাসনের প্রকাশিত নতুন কোটা পূর্ববর্তী প্রশাসনের তুলনায় অনেক কম। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সময় যেখানে ১ লাখ ২৫ হাজার শরণার্থীকে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল সেখানে ট্রাম্পের নতুন সীমা এক দশমাংশেরও কম।
দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় ফিরে ট্রাম্প শরণার্থী ও অভিবাসন নীতি আরও কঠোর করেছেন। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার শ্বেতাঙ্গ আফ্রিকানদের প্রতি বিশেষ সহানুভূতি দেখিয়েছেন।
১৯৮০ সালে কংগ্রেস অনুমোদিত রিফিউজি অ্যাক্ট-১৯৮০ অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রে শরণার্থী গ্রহণের একটি আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া চালু হয়। এই আইন চালুর পর সবচেয়ে কম শরনার্থী নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। এই আইন অনুযায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট প্রতি অর্থবছরে শরণার্থী প্রবেশের সর্বোচ্চ সীমা নির্ধারণ করতে পারেন, তবে কোনো সর্বনিম্ন সীমা নির্ধারিত নেই।
মানবাধিকার সংগঠনগুলো এই সিদ্ধান্তকে বর্ণবাদী ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে সমালোচনা করেছে। আমেরিকান ইমিগ্রেশন কাউন্সিলের সিনিয়র ফেলো অ্যারন রাইকলিন-মেলনিক বলেন, ট্রাম্পের নতুন নীতি মানবিক কর্মসূচিকে শ্বেতাঙ্গ অভিবাসনের পথে পরিণত করছে।
আন্তর্জাতিক শরণার্থী সহায়তা প্রকল্প (আইআরএপি) অভিযোগ করেছে, ট্রাম্প প্রশাসন এই সিদ্ধান্তে কংগ্রেসের সঙ্গে বাধ্যতামূলক পরামর্শ প্রক্রিয়া অনুসরণ করেনি।
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) জানিয়েছে, বর্তমানে বিশ্বজুড়ে ৪ কোটি ২৭ লাখের বেশি শরণার্থী রয়েছে।
(ওএস/এএস/অক্টোবর ৩১, ২০২৫)
