আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন, হানিফসহ ৪ জনের বিচার শুরু
স্টাফ রিপোর্টার : জুলাই গণঅভ্যুত্থানে কুষ্টিয়ায় ছয়জনকে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফসহ চার আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) গঠনের আদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
একই সঙ্গে, মামলায় ওপেনিং স্টেটমেন্ট (সূচনা বক্তব্য) উপস্থাপনের জন্য আগামী ২৫ নভেম্বর দিন ধার্য করেছেন ট্রাইব্যুনাল।
হানিফ ছাড়া মামলার অপর তিন আসামি হলেন, কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সদর উদ্দিন খান, সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী এবং শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান আতা। চারজনই বর্তমানে পলাতক।
রাষ্ট্র ও আসামী উভয় পক্ষের শুনানি শেষে রোববার (২ নভেম্বর) ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এ বিষয়ে আদেশ দেন। প্যানেলের অন্য সদস্যরা হলেন, অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মঞ্জুরুল বাছিদ এবং জেলা ও দায়রা জজ নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর।
এর আগে, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে কুষ্টিয়ায় ছয়জনকে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফসহ চার আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) গঠনের বিষয়ে আদেশের জন্য ২ নভেম্বর দিন ধার্য করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। তারই ধারাবাহিকতায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
রাষ্ট্র ও আসামি উভয়পক্ষের শুনানি শেষে গত মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) ট্রাইব্যুনাল-২ আদেশ দেন। আদালতে ওইদিন পলাতক চার আসামির পক্ষে রাষ্ট্রীয় খরচে নিয়োগপ্রাপ্ত (স্টেট ডিফেন্স) আইনজীবী মো. আমির হোসেন শুনানি করেন। অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। তার সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর মো. মিজানুল ইসলাম, গাজী এমএইচ তামিম, আবদুস সাত্তার পালোয়ান ও মঈনুল করিম প্রমুখ।
গত ১৪ অক্টোবর পলাতক চার আসামিকে আদালতে হাজিরের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছিল ট্রাইব্যুনাল। বাংলা ও ইংরেজি দুটি জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশও দেওয়া হয়।
এর আগে ৬ অক্টোবর ট্রাইব্যুনাল চার আসামির বিরুদ্ধে দাখিলকৃত আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নেন এবং গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে ১৪ অক্টোবরের মধ্যে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন। তবে কেউ হাজির না হওয়ায় পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের সিদ্ধান্ত হয়।
গত ৫ অক্টোবর প্রসিকিউশন চার আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে, যেখানে তিনটি নির্দিষ্ট অভিযোগ আনা হয় উসকানিমূলক বক্তব্য, ষড়যন্ত্র ও কুষ্টিয়ায় ছয়জনকে হত্যা।
জুলাই-আগস্ট আন্দোলন চলাকালে কুষ্টিয়ায় ছয়জন নিহত ও বহুজন আহত হন। এ ঘটনার পর হাসানুল হক ইনু ও মাহবুব উল আলম হানিফসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দুটি পৃথক মামলা হয়।
গত বছরের ৫ আগস্ট কোটা সংস্কার ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় দুপুর দেড়টা থেকে বিকেল ৪টার মধ্যে কুষ্টিয়ার বিভিন্ন স্থানে ছয়জন নিহত হন শ্রমিক আশরাফুল ইসলাম, সুরুজ আলী বাবু, শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল মুত্তাকিন ও মো. উসামা, ব্যবসায়ী বাবলু ফরাজী এবং চাকরিজীবী ইউসুফ শেখ।
(ওএস/এএস/নভেম্বর ০২, ২০২৫)
