গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি : গোপালগঞ্জে শিক্ষার্থীকে থাপ্পড় মেরে কানের পর্দা ফাটিয়ে দেওয়ার ঘটনায় ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

কোটালীপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গত বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে আগামী ৩ কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলে নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়া অভিযুক্ত শিক্ষককে শোকজ করেছেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা।

কোটালীপাড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো: ইসমাইল আজ শনিবার (৮ নভেম্বর) সকালে এসব তথ্য জানিয়েছেন। ওই কর্মকর্তা বলেন, শিক্ষার্থীকে থাপ্পড় মারার ঘটনা জানার পর আমি স্কুল পরিদর্শন করেছি। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও অভিভাবক থাপ্পড় মারার কথা স্বীকার করেছে। কিন্তু অভিযুক্ত শিক্ষক পরিমল বিশ্বাস ধাপ্পড় মারার কথা অস্বীকার করেছেন। আমি এ ঘটনার সত্যতা পেয়েছি। ওই শিক্ষককে শোকজ করেছি। শোকজের সন্তোষজনক জবাব না পেলে শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সন্তোষজনক জবাব দিলে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সম্মতিতে তাকে চাকরিতে রহাল রাখা যেতে পারে।

এছাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গঠিত ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি তদন্ত কাজ করে যাচ্ছে বলেও জানান ওই কর্মকর্তা ।

কোটালীপাড়া উপজেলার সাদুল্লাহপুর ইউনিয়নের ভাঙ্গারহাট তালিমপুর তেলিহাটি উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটনা ঘটেছে। অভিযুক্ত পরিমল বিশ্বাস ওই বিদ্যালয়ের সহকারি প্রধান শিক্ষক ।স্কুলে অনিয়মিত ও পড়া না পারায় ওই শিক্ষার্থীকে ধাপ্পড় মারা হয়েছে বলে জানা গেছে। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী ছাত্রের নানা বিশ্বনাথ গাইন ৪ নভেম্বর বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ।

লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, কোটালীপাড়া উপজেলার বৈকন্ঠপুর গ্রামের সজল হালদারের ছেলে স্বাধীন হালদার। পাশ্ববর্তী কোনেরভিটা গ্রামে মামাবাড়ি থেকে তালিমপুর তেলিহাটি উচ্চ বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে লেখাপড়া করে। স্বাধীন অসুস্থ হয়ে দীর্ঘদিন ধরে ঢাকায় চিকিৎসাধীন ছিল। এ কারণে নিয়মিত বিদ্যালয়ে যেতে পারছিল না। বিষয়টি স্কুল কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়। বিদ্যালয়ে নিয়মিত না যাওয়া ও শ্রেণিকক্ষে পড়া না পারায় গত ৩০ অক্টোবর সহকারি প্রধান শিক্ষক পরিমল বিশ্বাস শিক্ষার্থী সজল হালদারের কানের উপর একাধিক থাপ্পর মারেন। এতে সজলের কানের পর্দা ফেটে রক্ত বের হয় । পরে বাড়িতে গিয়ে ওই শিক্ষার্থী অভিভাবকদের বিষয়টি জানায় ।

সজলের নানি ফুলমালা গাইন বলেন, এ বিষয়ে আমরা বিদ্যালয়ে গেলে শিক্ষকেরা আমাদের চুপ থাকতে বলেন। বেশি বাড়াবাড়ি করল স্বাধীনকে লাল টিসি দেওয়া হবে বলে হুমকি দেন ইতি বিশ্বাস নামের এক ম্যাডাম। সজল স্থানীয় গ্রাম্য ডাক্তারের কাছ থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা গ্রহন করেছে । তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়া হবে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে অস্টম শ্রেণির একাধিক শিক্ষার্থী জানান, সহকারী প্রধান শিক্ষক পরিমল বিশ্বাস খুব রগচটা। তিনি অযথাই শিক্ষার্থীদের মারধোর করেন। তার স্ত্রী পার্শ্ববর্তী উপজেলা কালকিনিতে থাকেন। তিনি নিয়মিত বিদ্যালয়েও আসেন না।

কোটালীপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাগুফতা হক বলেন, এ ব্যাপারে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

(টিবি/এএস/নভেম্বর ০৮, ২০২৫)