শিতাংশু গুহ


কলকাতায় নাস্তিক সম্মেলন হয়ে গেল। ৫ই নভেম্বর ২০২৫ রামমোহন লাইব্রেরী হলে অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনে কোন অশান্তি ঘটেছে বলে জানা যায়নি। কেউ সেখানে লাঠিসোটা নিয়ে ইসলাম রক্ষায় হাজির হয়নি, বা কেউ গলা কাটার হুমকি দেয়নি। আচ্ছা ঢাকায় কি এমন একটি সম্মেলন হতে পারে, করাচীতে বা তেহরানে? না, পারেনা।

কলকাতায় মৈত্রেয়ী দেবীর বাসায় জয়শ্রী-আলমগীরের বিয়ে হয়েছিলো, তখনও আমি প্রশ্ন তুলেছিলাম, ঢাকায় কি ধুমধাম করে একটি হিন্দু ছেলের সাথে একটি মুসলিম মেয়ের বিয়ে হতে পারে? পারেনা। শেখ হাসিনা’র আমলেই সেটা অসম্ভব ছিলো, এখন তো প্রশ্নই ওঠেনা। গণজাগরণ মঞ্চের আগে-পরে টের পাওয়া যায় যে, বাংলাদেশে নাস্তিকের সংখ্যা একেবারে কম নয়? মোল্লারা নাস্তিকদের বিরুদ্ধে নামে, প্রকাশ্যে ‘জবাই’ করার হুমকি দেয়, ক’জন প্রাণ হারায়। বাকিরা পালিয়ে যায়, বা চুপসে পড়ে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র বক্তব্য তখন মোল্লাদের পক্ষে এবং নাস্তিকদের বিপক্ষে ছিলো।

ইসলাম যেখানে বাড়বাড়ন্ত, নাস্তিকতা সেখানে হারাম। তাই নাস্তিক সম্মেলন কলকাতাতে হতে পারে, প্যারিস, লন্ডন বা নিউইয়র্কে হতে পারে, কারণ ঐসব শহরে অ-মুসলিমরা ক্ষমতায়। শান্তির ধর্ম ‘ইসলাম’-র অনুসারীরা যেখানে ক্ষমতায় সেখানে ‘নাস্তিক সম্মেলন’-র চিন্তাই করা যায়না।

কলকাতায় যখন নাস্তিক সম্মেলন হচ্ছে ঠিক তখনই বাংলাদেশের ফরিদপুরে একদল মুসলমান জনৈকা মহুয়া ইসলাম-র ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ করে। এদের বক্তব্য, মহুয়া নবী’র অপমান করেছে। ঘটনা হচ্ছে, একজন লিখেছে তার প্রানপ্রিয় নেতার নাম হজরত মোহাম্মদ। উত্তরে মহুয়া লিখে: ‘তিনি তো এখন নেই, আর তার আদর্শ তো কেউ ঠিকঠাক মানে’না, তাহলে তুমি কার?’। এটুকু-ই যথেষ্ট। মোল্লারা মহুয়া ইসলামকে ‘তসলিমা নাসরিন’ বলে ডাকছে, একটি প্ল্যাকার্ডে লেখা, ‘তসলিমা গেছে যেই পথে, মহুয়া যাবে সেই পথে’। কলকাতায় এখনো নাস্তিক সম্মেলন করা যায়, মমতা ব্যানার্জি’র দুধেল গাইদের সংখ্যা যখন বেশি হয়ে যাবে, তখন আর করা যাবেনা।

লেখক : আমেরিকা প্রবাসী।