বিকাশ স্বর্ণকার, সোনাতলা : প্রকৃতির গায়ে ছাপ পরেছে এখন ঋতু বদলের পরশ। ভোরের শিশির বিন্দু আর কুয়াশা যেন জানিয়ে দিচ্ছে শীত আসছে। শরৎ শেষে হেমন্তের আগমন, আর সেই রূপ স্পষ্ট হয়ে উঠেছে বগুড়া সোনাতলা অঞ্চলের গ্রামবাংলার প্রকৃতিতে। ভোর হতেই মাঠের ঘাসে জমে উঠছে মুক্তার মতো ঝিকিমিকি শিশিরবিন্দু। ফলে বাতাসে লাগছে হিমেল বাতাসের ছোঁয়া। দিনের বেলায় রোদের তাপের প্রখরতা অনুভব করা গেলেও,রাত গভীরেই প্রকৃতি হয়ে উঠছে স্নিগ্ধ ও হীম শীতল।

গভীর রাতে বইছে ঠান্ডা হাওয়া, আর ভোরে চারপাশ ঢেকে যাচ্ছে কুয়াশার চাদরে। দূর থেকে তাকালে মনে হয়- মাটির বুকে ছড়িয়ে আছে এক পাতলা সাদা আস্তরণ। এ সময় মাঠে দোল খাচ্ছে সোনালি ধানের শীষ, কৃষকের মুখে ফুটছে তৃপ্তির হাসি। কাশফুল, ধানের সুবাস আর শিশির ভেজা সকালের বাতাস বাংলার গ্রামীণ প্রকৃতি হয়ে উঠেছে আরও স্নিগ্ধ, আরও প্রাণবন্ত। ষড়ঋতুর এই দেশে ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বদলে যায় প্রকৃতির রূপ। দূর্বাঘাস ধানের পাতা আর ফুলের পাপড়িতে জমে থাকা শিশিরবিন্দু জানান দিচ্ছে শীত আসতে আর বেশি দেরি নেই। প্রকৃতি যেন প্রস্তুত শীতকে স্বাগত জানাতে।

সরকারি সোনাতলা মডেল উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ এর গনিত শিক্ষক মোঃ মনিরুজ্জামান বলেন, হেমন্ত এলেই মনে হয়, নবান্নের আমেজ দরজায় কড়া নাড়ছে। নতুন ধানের চাল আর পিঠার সুবাসে ঘরে ঘরে শুরু হবে উৎসবের প্রস্তুতি। হালকা শীতের হাওয়া যেন মনে জাগায় প্রিয়জনের স্মৃতি।

ভ্যানচালক হেলাল উদ্দিন জানান, পেটের দায়ে প্রতিদিন ভোরবেলাতেই ভ্যান নিয়ে বের হতে হয়। এখন ভোর ও রাতে কুয়াশা পড়ে, ঠান্ডাও লাগে। তাই আস্তে আস্তে ভ্যান চালাই।

উপজেলার পাকুল্লা বাজারে রাজলক্ষী হোমিও হলের সত্ত্বাধিকারী পল্লি চিকিৎসক বিপুল সাহা বলেন, দিনে গরম থাকলেও গভীর রাত থেকে সকাল পর্যন্ত কুয়াশা দেখা যাচ্ছে। ফ্যান বন্ধ রাখতে হয়। মনে হচ্ছে, শীত একেবারেই দরজায়। শীতের এই আগমনী বার্তা গ্রামবাংলার ঘরে ঘরে এনে দিয়েছে এক নতুন আমেজ। পাতলা কাঁথা, চাদর আর কম্বল ফিরে পেয়েছে খাটে জায়গা। দিনের রোদ কিংবা সন্ধ্যার জ্যোৎস্না শেষে রাত নামলেই বাড়ছে হালকা শীতের অনুভূতি।

পৌরধীন জাহাঙ্গীর আলম গুড মর্নিং কেজি স্কুলের পরিচালক সাংবাদিক রেজাউল করিম মানিক বলেন, প্রকৃতির এই পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে সজীব হয়ে উঠছে গ্রামীণ অর্থনীতিও। নতুন ধান কাটা, গুড় তৈরি, বাজারে কৃষিপণ্য বিক্রি সব মিলিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। সৃষ্টি হচ্ছে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ।

(বিএস/এসপি/নভেম্বর ০৯, ২০২৫)