ঈশ্বরদী প্রতিনিধি : পদ্মা নদীর বিস্তীর্ণ চর এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার জন্য ভয়ভীতি, অস্ত্রবাজি, ত্রাস সৃষ্টি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অবশেষে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সোচ্চার হয়ে অভিযান শুরু করেছে। পুলিশের অভিযানের নাম দেয়া হয়েছে, ‘অপারেশন ফার্স্ট লাইট’। আজ রবিবার ভোর ৪টা থেকেই পাবনার ঈশ্বরদী, আমিনপুর, কুষ্টিয়ার দৌলতপুর ও রাজশাহীর বাঘা উপজেলার নদীচর এলাকায় এ অভিযানের শুরু হয়। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (দুপুর-১টা)  চলছে টানা সাঁড়াশি অভিযান। ঈশ্বরদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রণব কুমার এই অভিযানের খবর নিশ্চিত করেছেন।

জানা গেছে, ‘অপারেশন ফার্স্ট লাইট’-এ পুলিশ, র‍্যাব ও এপিবিএনসহ বিভিন্ন ইউনিটের মোট ১২০০ সদস্য অংশগ্রহণ করছে। চরের বৈরী ভৌগোলিক পরিবেশ, চরাঞ্চলের পথঘাট ও নদীর প্রবাহ। সব মিলিয়ে অভিযানকে চ্যালেঞ্জিং বলে মনে করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

ঈশ্বরদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রণব কুমার জানান, অভিযানে এখন পর্যন্ত চরের বিভিন্ন ঝোপঝাড় ও পরিত্যক্ত ঘাঁটি থেকে দুটি শুটারগান, চাইনিজ কুড়াল, বেশ কিছু দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযান এখনো চলমান, অভিযান শেষ হলে বিস্তারিত জানানো হবে বলে জানান তিনি।

রাজশাহী রেঞ্জ ডিআইজি মোহাম্মদ শাহজাহান জানান, এখন পর্যন্ত ৫টি বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র, অসংখ্য দেশীয় অস্ত্র, মাদক ও একটি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়েছে। বাহিনীর ২১ জন সদস্যকে আটক করা হয়েছে বলেও তিনি নিশ্চিত করেন।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, বিগত কিছুদিন ধরে চর এলাকায় কাকন বাহিনী নিজেদের আধিপত্য বিস্তারের জন্য বালু এবং কৃষকদের ফসল লুট করে আসছিল। অপকর্মের প্রতিবাদ করলে যেকোনো মুহূর্তে গোলাগুলি চালানো ছিল স্বাভাবিক কাজ। সর্বশেষ গত ২৭ অক্টোবর পদ্মার চরে পাকা ধান কাটাকে কেন্দ্র করে গুলিতে তিন কৃষক নিহত হন। এই হৃদয়বিদারক হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এরই ধারাবাহিকতায় প্রশাসনের উদ্যোগে শুরু হয় কঠোর অভিযান।

চরের সাধারণ কৃষক ও জেলেরা এ অভিযানে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। তারা বলছেন, দীর্ঘদিন আমরা আতঙ্কে ছিলাম। মাঠে ফসল তুলতে এবং নদীতে মাছ ধরতে ভয় লাগত। এই অভিযান যদি সফলভাবে সম্পন্ন হয়, তবে আমাদের বেঁচে থাকার রাস্তা খুলবে।

(এসকেকে/এসপি/নভেম্বর ০৯, ২০২৫)