রাজৈরে হত্যার পর গৃহবধূর লাশ গাছের সাথে ঝুলিয়ে রাখার অভিযোগ
মাদারীপুর প্রতিনিধি : মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার মজুমদারকান্দি খালপাড় গ্রামে এক গৃহবধূকে হত্যার পর লাশ গাছের সাথে ঝুলিয়ে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
আজ সোমবার বিকেলে মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে নিহতের মরদেহ রাজৈর উপজেলার বদরপাশা ইউনিয়নের দূর্গাবর্দি গ্রামে তার বাবার বাড়িতে নিয়ে দাফন করা হয়।
এর আগে সকালে স্বামীর বাড়ির পাশে ছোট একটা আমগাছের সাথে হাটুগারা ঝুলন্ত অবস্থায় মাহফুজা বেগমের (৩৬) মরদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ। এদিকে ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত স্বামী পালিয়ে গেছে।
নিহত মাহফুজা বেগম একই উপজেলার মজুমদারকান্দি খালপাড় গ্রামের শ্রমিক তৌহিদ বেপারীর (৪০) স্ত্রী। তিনি ৩ কন্যা শিশুর জননী।
পুলিশ, নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কয়েক বছর আগে মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার বদরপাশা ইউনিয়নের দূর্গাবর্দি গ্রামের তোফেল বেপারীর মেয়ে নিহত মাহফুজা বেগমের সাথে একই উপজেলার মজুমদারকান্দি খালপাড় গ্রামের সোবাহান বেপারীর ছেলে তৌহিদ বেপারীর বিয়ে হয়। শ্রমিকের কাজ করেন তৌহিদ। মেয়েকে সুখে রাখার জন্য তাদের বিয়ের সময় জমি বিক্রি করে তৌহিদকে টাকা দেয় শশুর বাড়ির লোকজন। কিন্তু কয়েক বছর পার না হতেই পারিবারিক কলহের সৃষ্টি হয়। সমাধানের জন্য আবারও টাকা দেয় মাহফুজার ভাই। তবে রবিবার রাতে তৌহিদের পরকীয়ার সম্পর্ক নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে ঘর থেকে বের হয়ে যায় মাহফুজা। এসময় ক্ষুব্ধ হয়ে খুঁজতে বের হন এবং হত্যার হুমকি দেন তৌহিদ। পরে সোমবার সকালে গলায় ওড়না পেচানো পায়ের হাটু গেরে বসা একটি ছোট আম গাছের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় ওই নারীর মরদেহ দেখতে পায় স্থানীয়রা। খবর পেয়ে পুলিশ এসে মরদেহটি উদ্ধার করে। এদিকে অভিযুক্ত তৌহিদসহ তার বাড়ির লোকজন পালিয়ে যায়। তাদের সংসারে তিন শিশু কন্যা আছে।
নিহত মাহফুজার ভাই সোবাহান বেপারী বলেন, তৌহিদের সাথে এক নারীর সম্পর্ক আছে। এ নিয়ে মাঝে মধ্যেই আমার বোনকে মারধর করতো। রবিবার রাতেও দুজনের মধ্যে ঝগড়া হয়েছিল এবং মারধরও করছে। পরে আমার বোনকে হত্যা করে গাছের সাথে ঝুলিয়ে রেখে পালিয়ে গেছে তৌহিদ। আমি মামলা করবো। আইনের কাছে সঠিক বিচার দাবি করছি।
এদিকে অভিযুক্ত তৌহিদ বেপারী পলাতক থাকায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
রাজৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাসুদ খান বলেন, আমি সরেজমিনে গিয়েছিলাম। লাশটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়। রিপোর্ট হাতে পেলে মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
(এএসএ/এসপি/নভেম্বর ১০, ২০২৫)
