স্ট্রোকের রোগীদের ভোগান্তি
শেবামেকে ৫৭ বছরেও চালু হয়নি নিউরো ওয়ার্ড
আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : দক্ষিণাঞ্চলের কোটি মানুষের সবচেয়ে বড় চিকিৎসালয় বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। প্রতিদিন এ হাসপাতালে কমপক্ষে দুই হাজার রোগী আউটডোরে চিকিৎসা গ্রহণ করে থাকেন। এছাড়া প্রায় দুই সহস্রাধিক রোগী ভর্তি থাকেন সবসময়ই।
মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল হওয়ায় অনেক জটিল ও কঠিন রোগের চিকিৎসাও এখানে পাওয়া যায় হাতের কাছে। অথচ দেশের সর্ববৃহৎ ও পুরাতন আটটি মেডিক্যালের একটি হওয়া সত্বেও প্রতিষ্ঠার ৫৭ বছর পরেও এখানে আলাদাভাবে চালু হয়নি স্ট্রোকের রোগীদের জন্য বিশেষায়িত নিউরোমেডিসিন ওয়ার্ড। ফলে স্ট্রোকের রোগীদের সীমাহীন ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ইতিপূর্বে একাধিকবার স্ট্রোকের রোগীদের জন্য নিউরো চিকিৎসায় আলাদা ওয়ার্ড চালু করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলো হাসপাতাল প্রশাসন। কিন্তু রহস্যজনক কারণে তা আর আলোর মুখ দেখেনি। হাসপাতালে সবধরনের লজিস্টিক সাপোর্ট ও সক্ষমতা থাকার পরেও গুরুত্বপূর্ন এই ওয়ার্ডটি চালু না হওয়ায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্ট্রোকে আক্রান্ত রোগীর স্বজনরা। স্ট্রোকের রোগী আসলে তাদেরকে মেডিসিন বিভাগের জ্বর/কাশি বা অন্য রোগীদের সাথে রাখা হচ্ছে। ফলে যথাসময়ে যথোপযুক্ত চিকিৎসা না পাওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. একেএম নাজমুল আহসান বলেন, ইতিপূর্বে যে যাই বাঁধা দিয়ে থাকুকনা কেন সেগুলো দেখার বিষয় নয়। আমরা বর্তমান পরিচালক স্যারের উদ্যোগে খুব শীঘ্রই নিউরো মেডিসিন ওয়ার্ড চালু করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।
এ ব্যাপারে শেবামেকের সহযোগি অধ্যাপক ডা. অমিতাভ সরকার বলেন, আমি হাসপাতালের অথরিটি নই। ওয়ার্ড চালু করবে পরিচালক। জনবলসহ সকল কিছু সরবরাহের মাধ্যমে যখনই ওয়ার্ড চালু করবে তখনই আমি দায়িত্ব পালন করবো। আমার বাঁধার কারণে নিউরো ওয়ার্ড চালু না হওয়ার অভিযোগ সঠিক নয়।
তিনি আরও বলেন, আমি দুটি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিকের সাথে জড়িত একথা সত্য। তবে আমি একা নই; হাসপাতালের সকল চিকিৎসকই প্রাইভেটভাবে রোগীর চিকিৎসা প্রদান করেন। কলেজে ক্লাস না নেয়ার অভিযোগও সঠিক নয় বলে তিনি উল্লেখ করেন।
শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. একেএম মশিউল মুনীর বলেন, কারও কোন বাঁধা থাক বা না থাক সেটা আমরা আমলে নিবোনা। খুব শিঘ্রই নিউরো মেডিসিনসহ আটটি আলাদা ওয়ার্ড চালু করা হবে। অন্তত তিনজন নিউরো মেডিসিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বর্তমানে শেবাচিমে কর্মরত রয়েছেন। তাই এই বিভাগ চালু করতে এখন আর কোন সমস্যা হবেনা বলেও তিনি জানিয়েছেন।
(টিবি/এসপি/নভেম্বর ১০, ২০২৫)
