শামীম হাসান মিলন, চাটমোহর : পাবনা- ৩ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী হাসান জাফির তুহিনের মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে বিশাল সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

গতকাল সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টায় পৌর শহরের বালুচর মাঠে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা সমাবেশে পরিণত হয়। এ সময় দীর্ঘদিনের বিভেদ ভুলে মনোনয়ন বঞ্চিত সাবেক এমপি কেএম আনোয়ারুল ইসলাম ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান হাসাদুল ইসলাম হীরা এক মঞ্চ থেকে হাসান জাফির তুহিনের মনোনয়ন বাতিলের দাবি জানান। পরে সমাবেশ শেষে হাজারো নেতাকর্মীর অংশগ্রহণে একটি বিশাল র‌্যালী পুরো শহর প্রদক্ষিণ করে।

জানা গেছে, চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া ও ফরিদপুর এই তিন উপজেলা নিয়ে গঠিত পাবনা-৩ আসনের মধ্যে সবচেয়ে ভোটার সংখ্যা বেশি চাটমোহর উপজেলায়। ভোটার সংখ্যা বেশি হলেও বিগত দিনগুলোতে এ উপজেলা থেকে কোনো এমপি পায়নি উপজেলাবাসী। এতে উন্নয়ন বঞ্চিত হয়ে আসছিল এই উপজেলার সাধারণ মানুষ। তবে ৫ আগস্টের পটপরিবর্তনের পর চাটমোহরবাসী স্বপ্ন দেখা শুরু করেছিলেন বিএনপি থেকে আগামী নির্বাচনে এই উপজেলাবাসী প্রার্থী পাবেন।

কিন্তু পাবনা-৩ আসনে বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়ন পেয়েছেন কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও সুজানগরের সন্তান কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিন। এরপর থেকেই বিএনপি নেতাকর্মী ও চাটমোহরের সাধারণ মানুষের মধ্যে চাপা ক্ষোভ দেখা দেয়। শুধু তাই নয়, এতে বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে বিভক্তি দেখা দেয়। বিশেষ করে দুই হেভিওয়েট মনোনয়ন প্রত্যাশী সাবেক এমপি কেএম আনোয়ারুল ইসলাম ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান হাসাদুল ইসলাম হীরার অনুসারীরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন।

অনেকেই দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে বিএনপি থেকে প্রাথমিক মনোনয়নপ্রাপ্ত হাসান জাফির তুহিনের সঙ্গে কাজ করলেও মন থেকে অনেকেই মেনে নিতে পারছেন না বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। ক্ষোভ দেখা দেয় চাটমোহর উপজেলার সাধারণ মানুষের মধ্যেও।

সমাবেশে হাসাদুল ইসলাম হীরা তার বক্তব্যে বলেন, কেন্দ্রিয় নেতারা ভুল করেছে। কিন্তু আমার বিশ^াস তারেক রহমান সাহেব ভুল করতে পারে না। আমার প্রিয় নেতাকে ভুল বোঝানো হয়েছে। পাবনা-৩ এর দলীয় নেতাকর্মী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ স্থানীয় কোনো লোককে দেখতে চায়। যদি পাবনা-৩ আসনে বিএনপির দখলে নিতে হয় তবে এই এলাকার কোনো সন্তানকে মনোনয়ন দিতে হবে, নইলে বিএনপি এই আসন হারাবে। বহিরাগত কোনো মানুষকে আমরা মেনে নেব না।

এ সময় কেএম আনোয়ারুল ইসলাম তার বক্তব্যে বলেন, পাবনা-৩ এর মানুষ কোনো বহিরাগত মানুষ চান না। মনোনয়ন এখনো চুড়ান্ত হয় নাই। আমরা কেন্ত্রকে বুঝিয়ে দিতে চাই, আমরা বহিরাগত প্রার্থী চাই না। মানুষ আমাকে প্রার্থী হিসেবে চায়। আমি আত্মবিশ^াসী, আমি স্বতন্ত্র দাঁড়ালে জিতে যাব। কিন্তু আমি দলের প্রতি আস্থাশীল। শেষ পর্যন্ত আমি দলের অপেক্ষা করব। আমার বিশ^াস দল শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করবে।

সমাবেশে বক্তব্য দেন, সাবেক এমপি কে এম আনোয়ারুল ইসলাম, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান হাসাদুল ইসলাম হীরা, ভাঙ্গুড়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট মজিবুর রহমান, সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক আব্দুল মতিন রাজু, ফরিদপুর উপজেলা বিএনপি নেতা মজিবুর রহমান, চাটমোহর পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম তাইজুল, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান নজির সরকার, কেএম সাঈদ উল হক কাফি প্রমুখ।

(এসএইচ/এসপি/নভেম্বর ১১, ২০২৫)