শিবগঞ্জে সরকারের উপহারের বাড়ি ফেলে ভারতে অবস্থান মুক্তিযোদ্ধার
বিকাশ স্বর্ণকার, বগুড়া থেকে : বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলায় প্রতারণার আশ্রয় করে সরকারের দেয়া বীর নিবাসটি গ্ৰহণ করেছেন এক বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি হলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা ধীরেন্দ্রনাথ সাহা।এই বীরমুক্তিযোদ্ধা উপজেলার দেউলি ইউনিয়নের বাসিল্যা গ্ৰামের মৃত মনিন্দ্রনাথ এর ছেলে। যদিও শর্ত ছিল বীর নিবাসে পরিবার সহ বসবাস করবেন। তিনি এসব শর্ত ভেঙ্গে নিবাস পাওয়ার পুর্বে থেকেই পরিবার নিয়ে ভারতে অবস্থান করছেন।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, মুক্তিযোদ্ধা ধিরেন্দ্রনাথ সাহার পরিবারের সকল সদস্য ভারতে থাকলেও তিনি মাঝেমধ্যে দেশে আসতেন।
এলাকাবাসী আরো জানায়, অনুমান দেশ স্বাধীন পরবর্তীতে তিনি ১৯৮২ সালের দিকে স্ত্রী ও ১ ছেলে এবং ১ মেয়েকে নিয়ে ভারতে পারি জমায়। কয়েক বছর আগে বীর নিবাসটি বুঝে পাওয়ার মাস খানেক একাই নিবাসে বাসবাস করে পরিত্যক্ত অবস্থায় ফেলে রেখে তিনি ভারতে আবার চলে যান। স্থানীয়রা জানান, মুক্তিযুদ্ধে তার সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল।
ধীরেন্দ্রনাথ সাহার ভাই জিতেন্দ্র নাথ সাহা জানান, আমার ভাই ভারতে পশ্চিম বঙ্গের কালিয়াগঞ্জে স্থায়ীভাবে নাগরিকত্ব নিয়ে বসবাস করছেন। বাবা জিবিত থাকাকালীন ১৯৮২ সালের দিকে এখানকার তার অংশের জমির সমপরিমাণ অর্থ দিয়ে সেখানে বাড়ি নির্মাণ ও ফসলি জমি কিনে দিয়ে আসে। যদিও পরবর্তীতে মুক্তিযোদ্ধাদের যাচাই বাছাই সময় উপস্থিত ছিলেন এই বীর মুক্তিযোদ্ধা। প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের তথ্যমতে ২০২১-২২ অর্থবছরে মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে থেকে ৩ থেকে পৌনে ৫ শতক জমিতে পৃথকভাবে ১৮ জন মুক্তিযোদ্ধাকে পাকাবাড়ি নির্মাণ করে সরকারের পক্ষ থেকে উপহার দেওয়া হয়। প্রতিটি বাড়ি নির্মাণ ব্যয় ১০ লাখ ৯৮ হাজার ৪৮৩ টাকা। তবে সেসময় তার জন্মস্থান জায়গা বাসিল্যাতে হিস্যার সম্পতি না থাকায় রামচন্দ্রপুরের বিনয় বর্মনের কাছ থেকে দানপত্র মুলে নেয়া জায়গাতে বাড়ি নির্মাণ হয়। বেশ কিছু লোকের মুখে শোনা গেল বিনয় বর্মন নাকি এসব জেনেও জায়গা দিয়েছে সরকারী বাড়িটি আত্মসাৎ এর উদ্দেশ্যে।
এদিকে জানা যায়, এই বীর মুক্তিযোদ্ধা ধীরেন্দ্রনাথ সাহা নাকি মাঝেমধ্যে এসে সরকারি ভাতা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করতো। তবে গত এক বছর হলো সে আর দেশে আসেনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ব্যাক্তি জানান, মুক্তিযোদ্ধা ধীরেন্দ্রনাথ সাহার এসব কর্মকাণ্ডের পিছনে হাত রয়েছেন রামচন্দ্রপুরের বিকাশ সরকার বাবুর।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম জানান, মুক্তিযোদ্ধা ধীরেন্দ্রনাথ সাহার সরকারি বাড়িটি নির্মাণের সময় তিনি দেশেই অবস্থান করতেন। তবে এখন আর সেখানে থাকেনা এটি আপনার মাধ্যমে জানতে পারলাম। বিষয়টি নিয়ে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার জিয়াউর রহমান জানান, মুক্তিযোদ্ধা ধীরেন্দ্রনাথ সাহা যে বীর নিবাসে অবস্থান করছে না এটি আপনার মাধ্যমে জানতে পারলাম। তবে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা সহ গৃহিত অভিযোগ তদন্ত করলে সবকিছু জানাযাবে।
(বিএস/এসপি/নভেম্বর ১১, ২০২৫)
