পানগুছি নদীতে জীবনের ঝঁকি নিয়ে খেয়া পারাপার, ১২ বছরে ৩০ যাত্রীর মৃত্যু
সরদার শুকুর আহমেদ, বাগেরহাট : বাগেরহাটের সাইনবোর্ড- শরণখোলা আঞ্চলিক মহাসড়কের মোরেলগঞ্জের বিশাল নদীতে এখনো নির্মাণ করা হয়নি কোন সেতু। মোংলা-ঘষিয়াখালী আন্তর্জাতিক নৌ-চ্যানেলের অংশের খরস্রোতা এই নদীতে একটি মাত্র সেতুর অভাবে জনদুর্ভোগের শেষ নেই। প্রতিদিন চরম দুর্ভোগ পড়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মোরেলগঞ্জ, শরণখোলা, রামপাল, মোংলা, মঠবাড়িয়া ও ভান্ডারিয়া উপজেলার ৫ লাখ মানুষকে ইঞ্চিন চালিত ছোট খেয়া ট্রলারে করে পানগুছি নদী পারাপার করতে হচ্ছে। এই অবস্থায় নদী পারাপার করতে গিয়ে গত ১২ বছরে মৃত্যু হয়েছে ৩০ যাত্রীর।
বাগেরহাট সড়ক বিভাগ বলছে, উতিমধ্যেই জনগুরুত্বপূর্ন পানগুছি সেতু নির্মাণ প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদন পেলেছে। অর্থ বরাদ্দ না থাকায় পানগুছি সেতুর দরপত্র আহবান করা যাচ্ছেনা।
পানগুছি নদীর খেয়া ট্রলার পারাপার করা যাত্রী ইব্রাহীম হোসেন, শংঙ্কর চন্দ্র সাহা, ইলিয়াস শিকদার ও বিলকিস আক্তার জানান, সুন্দরবনের শরণখোলার দেখতে আসা পর্যটকসহ মোরেলগঞ্জ, শরণখোলা, রামপাল, মোংলা, মঠবাড়িয়া ও ভান্ডারিয়া উপজেলার ৫ লাখ মানুষকে অফিস-আদালত, চাকুরি, স্কুল কলেজে যেকে নিত্যদিনই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পানগুছি নদীর খেয়া ট্রলারে করে পারাপার করতে হয়। প্রতিটি খেয়া ট্রলারে মাত্র ৩০ জন করে যাত্রী পারাপারের নির্দেশনা থাকলেও মোংলা-ঘষিয়াখালী আন্তর্জাতিক নৌ-চ্যানেলের অংশের খরস্রোতা এই বিশাল নদীতে প্রতিনিয়ত কার্গো জাহাজ চলাচল করার মধ্যেই প্রতিটি খেয়া ট্রলারে শতাধিক যাত্রী পারাপার করে।
খেয়া ট্রলার মালিকদের উদাসীনতায় প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। এভাবে পানগুছি নদী পারপার করতে গিয়ে গত ১২ বছরে ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এরমধ্যে ২০১৭ সালের ১৮ মার্চ সকালে পানগুছি নদীতে শতাধিক যাত্র বোঝাই একটি খেয়া ট্রলার ডুবে ৫ শিশু, ৯ নারী ও ৫ পুরুষসহ ১৯ জনের মৃত্যু হয়। প্রতিনিয়ত চরম ঝুঁকিপূর্ণভাবে খেয়া ট্রলার চলাচল করলেও দেখার কেউ নেই। বাধ্য হয়েই আমাদের ইঞ্চিন চালিত ছোট খেয়া ট্রলারে করে পানগুছি নদী পারাপার করতে হচ্ছে। এসব যাত্রীরা জনদূভোর্গ লাগবে দ্রুত পানগুছি নদীতে সেতু নির্মাণের দাবি জানান।
বাগেরহাট সড়ক ও জনপথ বিভাগ নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফুল ইসলাম জানান, জনগুরুত্বপূর্ন পানগুছি সেতু নির্মাণ প্রকল্পটি ২০২১ একনেক সভায় পাশ হয়েছে। ২০২১-২০২২ অর্থবছরে এই সেতু নির্মাণ প্রকল্পটি এডিপিতে অন্তর্ভুক্ত ছিল। এখন অর্থ বরাদ্দের ছাড়পত্র পেলেই দ্রুত সময়ের মধ্যে পানগুছি সেতুর দরপত্র আহবান সম্ভব বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
(এস/এসপি/নভেম্বর ১২, ২০২৫)
