ওয়াজেদুর রহমান কনক


মানবসভ্যতার বিকাশে পারস্পরিক সহনশীলতা এমন এক মৌলিক নৈতিক শক্তি, যা বৈচিত্র্যময় সমাজকে সংঘর্ষ থেকে দূরে রাখে এবং মানুষে–মানুষে সম্মান, ন্যায় ও নিরাপত্তার অনুভূতি গড়ে তোলে। সংস্কৃতি, ধর্ম, ভাষা, মতাদর্শ কিংবা জীবনদর্শনের ভিন্নতা পৃথিবীর স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য; কিন্তু এই ভিন্নতার মধ্যেই শান্তি ও সহযোগিতার ভিত্তি টিকিয়ে রাখতে পারে কেবল সহনশীলতার চর্চা। বৈশ্বিক জরিপগুলো দেখায়—২০২৩ সালেই পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে ঘৃণাজনিত সহিংসতা, বৈষম্য, হেটস্পিচ ও পরিচয়–ভিত্তিক হয়রানির ঘটনা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, এমনকি কিছু সমাজে জনমতের ৩০–৪০ শতাংশ মানুষ প্রতিদিন অনলাইনে অথবা বাস্তব জীবনে বৈরী আচরণের মুখোমুখি হয় বলে জানিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত ঘৃণাসূচক কনটেন্ট দিনে লাখেরও বেশি রিপোর্ট হয়, এবং OSCE–এর ইনসিডেন্ট ট্র্যাকিং অনুযায়ী ইউরোপে রিপোর্ট হওয়া ঘৃণাজনিত ঘটনার প্রায় ৭০ শতাংশই মৌখিক আক্রমণ ও পরিচয়–অপমানকে কেন্দ্র করে। এসব বাস্তবতা স্পষ্ট করে যে মানবসম্পর্কের নিরাপত্তা কোনো স্বয়ংক্রিয় প্রক্রিয়া নয়—বরং শিক্ষায় মানবিক মূল্যবোধের অন্তর্ভুক্তি, সংস্কৃতিগত সংলাপ, নাগরিকদের অধিকার সম্পর্কে সচেতনতা এবং সংঘাতকেন্দ্রিক বর্ণনা ভেঙে সহযোগিতা–কেন্দ্রিক মানসিকতা গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তা আজ আরও বেশি। সহনশীলতার লক্ষ্যই হলো এই—ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রের মধ্যে পারস্পরিক সম্মানকে শক্তিশালী করা, ভিন্নতাকে দুর্বলতা নয় বরং সমৃদ্ধি হিসেবে দেখা, এবং যে পরিবেশে সবার মর্যাদা অটুট থাকে সেই মানবিক কাঠামোকে স্থায়ী করে তোলা।

প্রতি বছর ১৬ নভেম্বর পালিত আন্তর্জাতিক সহনশীলতা দিবসটি ঐতিহাসিকভাবে ইউনেস্কোর Declaration of Principles on Tolerance গ্রহণের সঙ্গে জড়িত — ওই ঘোষণা ১৬ নভেম্বর ১৯৯৫ তারিখে ঘোষণা করা হয় এবং এর ওপর ভিত্তি করে জাতিসংঘ সাধারণ সমিতি ১৯৯৬ সালে রেজুলেশন 51/95 দ্বারা ১৬ নভেম্বরকে আনুষ্ঠানিকভাবে International Day for Tolerance হিসাবে ঘোষণা করে। এই সিদ্ধান্তের রূপরেখা হলো — সহনশীলতা শুধু ধৈর্য নয়; এটি “বৈচিত্র্যের সার্বিক সম্মান, গ্রহণ ও মূল্যায়ন” — অর্থাৎ সংস্কৃতি, মতপরাধ ও মানুষের স্বাভাবিকভাবে ভিন্ন হওয়াকে গ্রহণ করা।

দিবসটির মূল উদ্দেশ্য হলো জনসচেতনতা সৃষ্টি করা — অজ্ঞতা, বিদ্বেষ, ঘৃণাসূচক বক্তৃতা ও বৈষম্যের নেতিবাচক চেইন ভাঙতে শিক্ষা, সংলাপ ও নীতিমালার মাধ্যমে সমাজকে সংহত করা। UNESCO-এর ভাষ্য অনুযায়ী সহনশীলতা শিক্ষার, সাংস্কৃতিক বিনিময়ের ও মানুষের মৌলিক অধিকার রক্ষার ভিত্তি; এটি স্কুল, বিশ্ববিদ্যালয়, গণমাধ্যম ও অনলাইন মঞ্চে দৃশ্যমান উদ্যোগের দাবি করে।

তথ্যগত বাস্তবদেশ কঠোর: আধুনিক বিশ্বে ঘৃণাভিত্তিক আক্রমণ, অপব্যবহার ও বৈষম্যের ঘটনা সুস্পষ্টভাবে রিপোর্ট হচ্ছে এবং বহু ক্ষেত্রে দ্রুত বেড়েছে — উদাহরণস্বরূপ ইউরোপীয় নিরাপত্তা ও সহযোগিতা সংস্থা (OSCE/ODIHR)–এর ২০২৩ hate crime রিপোর্টে অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্র, নাগরিকসংগঠন ও অন্যান্য সূত্র থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী ৪৮টি রাষ্ট্রের সরকারি hate-crime ডেটা সংগৃহীত হয়েছে এবং রিপোর্টটি অনন্তর বারবারই অ-অপরাধধর্মী অপরাধ (মৌখিক অপব্যাবহার, হেটস্পিচ ইত্যাদি)–এর বড় পরিমাণও তুলে ধরে — এগুলো সরকারি পরিসংখ্যানের বাইরে থাকায় বাস্তব চিত্র অধিকতর গুরুতর। ODIHR রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, নির্দিষ্ট শ্রেণির বিরুদ্ধে জমা পড়া প্রায় ৭০% পর্যন্ত ইনসিডেন্ট ছিল মৌখিক অপব্যবহার বা হেটস্পিচের ক্যাটাগরিতে, যা প্রতিরোধ ও রিপোর্টিংয়ের ভিন্ন চ্যালেঞ্জ নির্দেশ করে।

দেশিক উদাহরণও লক্ষণীয়: যুক্তরাষ্ট্রে কিছু মানবাধিকার সংগঠনের সংগ্রহীত তথ্য দেখায় ২০২৩ সালে মুসলমান বিরোধী অভিযোগের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে — এক সংস্থার (CAIR) রিপোর্টে ২০২৩ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ৮,০৬১টি অভিযোগ তথা ২০২২ সালের তুলনায় ৫৬% বৃদ্ধির মতো চিত্র এসেছে; একই সময়ে নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে হয়রানি বা অনধিকারবাদী আচরণে শতকরা সমীক্ষা-ভিত্তিক ফলও উদ্বেগজনক (উদাহরণ: একটি সূত্রে ২০২৩-এ মার্কিন মুসলিমদের ~৩৮% ও ইহুদিদের ~২৬% কেউ না কেউ হয়রানির শিকার হয়েছে বলে পাওয়া গেছে)। এই ধরনের সংখ্যাগুলি দেখায় যে স্ত্রীচালিত সংঘর্ষ, আন্তর্জাতিক সংকট বা রাজনৈতিক-যোগাযোগের আক্রমণ-ভাষা দ্রুত-স্বল্প সময়ে সহনশীলতার বিপরীতে কাজ করতে পারে।

সমস্যার মোকাবিলায় শিক্ষা ও নীতিনির্ধারণ জরুরি: UNESCO ও অন্যান্য সংস্থাগুলি টার্গেটেড শিক্ষা কর্মসূচি, স্কুলে মানবাধিকার শিক্ষা, অনলাইন হেটস্পিচ মোকাবিলা ও সোশ্যাল কোহেশান বাড়ানোর নির্দেশনা প্রকাশ করেছে — বিশেষত কীভাবে পাঠ্যক্রমে সহনশীলতার ধারণা অন্তর্ভুক্ত করা যাবে, শিক্ষক প্রশিক্ষণ ও কমিউনিটি-ভিত্তিক সংলাপ পরিচালনা করা যাবে তা নিয়ে নির্দেশিকা রয়েছে। একই সঙ্গে রিপোর্টিং-পদ্ধতি শক্ত করতে এবং অ-অপরাধধর্মী ঘৃণাসূচক ঘটনার পরিসংখ্যানও ধরবার উপায় বেড়াতে বলা হচ্ছে, কারণ অনেক ঘটনা পুলিশের নথিভুক্তির বাইরে থেকে যায়।

সংক্ষেপে, ১৬ নভেম্বরের আন্তর্জাতিক সহনশীলতা দিবসটি কেবল একটি স্মরণীয় তারিখ নয় — এটি একটা বার্তা: বৈচিত্র্যকে গ্রহণ করা মানে ন্যায়, মানবাধিকার ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। বাস্তবে এই লক্ষ্য অর্জন করতে হলে শিক্ষায় বিনিয়োগ, শক্তিশালী রিপোর্টিং মেকানিজম, মতবৈচিত্র্যের জন্য নিরাপদ স্থান সৃষ্টি এবং সংকটকালে সম্মিলিত প্রতিক্রিয়া দরকার — আর এই প্রয়োজনীয়তা আজকের পরিসংখ্যানে পরিষ্কারভাবে প্রতিফলিত। UNESCO-এর নির্দেশিকায় উল্লিখিত অনুশীলনগুলো প্রয়োগ করলে দেশের স্তরে ও আন্তর্জাতিকভাবে সহনশীলতা বাড়ানো সম্ভব — ১৬ নভেম্বর সেই সচেতনতার পুনরাবৃত্তি এবং কর্মসূচি গ্রহণের উপযুক্ত সময়।

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সহনশীলতার ধারণা শুধু নৈতিক বা দার্শনিক স্তরে সীমাবদ্ধ নয় — এটি রাজনৈতিক নিরাপত্তার, সামাজিক অন্তর্ভুক্তির এবং মানুষের মৌলিক অধিকার সুরক্ষার একটি অনিবার্য ভিত্তি। বাংলাদেশের জনসংখ্যার প্রায় ৮-৯ শতাংশ মানুষ ধর্মীয় সংখ্যালঘু, বিশেষ করে হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়। ([Vatican News][1]) ইতিহাসগতভাবে স্বাধীনতার পর থেকে এই সংখ্যালঘু গোষ্ঠীগুলোর প্রতিফলন রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সামাজিক ক্ষেত্রে বেরিয়ে এসেছে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ হিসেবে — তাই আজও সহনশীলতা তাদের জীবনে শুধুমাত্র ধর্মীয় সহঅবস্থান নয়, বরং অস্তিত্ব-নিরাপত্তার প্রশ্ন।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সহনশীলতা চর্চাকে কেন্দ্র করে ১৬ নভেম্বরকে ঘিরে যে আয়োজনগুলো হয়, সেগুলো স্বভাবত দেশভেদে ভিন্ন হলেও মূল লক্ষ্য থাকে—সংলাপ, শিক্ষা, বৈচিত্র্যের প্রতি সম্মান ও ঘৃণাজনিত আচরণের প্রতিবিধান। ওমান এই দিনকে রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক উভয় পর্যায়ে গুরুত্ব দিয়ে পালন করে; তাদের ধর্ম ও ওয়াকফ মন্ত্রণালয় আন্তর্জাতিক শান্তি ও আন্তঃধর্মীয় সংলাপ প্রতিষ্ঠানগুলোর সহযোগিতায় বার্ষিক সম্মেলন আয়োজন করে, যেখানে “Deepening Dialogue” বা “United Human Values”–এর মতো শিরোনামে মানবিক মূল্যবোধ, ধর্মীয় সহাবস্থান ও আন্তঃসংস্কৃতিক শ্রদ্ধার ওপর আলোচনা হয়। এসব অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দেশের ধর্মীয় নেতা, শিক্ষাবিদ, গবেষক ও যুব প্রতিনিধি অংশ নেয়, যা সহনশীলতার ধারণাকে নীতি-আলোচনার পর্যায়ে তোলে এবং আরব অঞ্চলে শান্তিপ্রতিষ্ঠার একটি মডেল হিসেবে কাজ করে।

রাশিয়ায় সহনশীলতার চর্চা সাংস্কৃতিক ও জনসম্পৃক্ত আয়োজনের মাধ্যমে উদযাপিত হয়। সেন্ট-পিটার্সবার্গসহ বড় শহরগুলোতে সাংস্কৃতিক প্রদর্শনী, বৈচিত্র্যময় জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের নিয়ে গোলটেবিল বৈঠক, বিশ্ববিদ্যালয় ও স্কুল পর্যায়ে বিশেষ সেমিনার ও শ্রেণি–আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। বিভিন্ন সামাজিক সংস্থা জাতিগত বিভাজন, অভিবাসী সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা, অনলাইন হেটস্পিচ এবং ধর্মীয় বৈরিতা প্রতিরোধ নিয়ে নাগরিক সংলাপ আয়োজন করে। কখনও কখনও খেলাধুলা—বিশেষ করে ফুটবল—ব্যবহৃত হয় এক সাধারণ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে, যাতে টিমওয়ার্কের মাধ্যমে বৈষম্যবিরোধী বার্তাগুলো ছড়িয়ে দেওয়া যায়।

নরওয়েতে এই দিনটি শিল্প ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার মাধ্যমে উদযাপিত হয়েছিল একটি আন্তর্জাতিক কার্টুন উৎসবের মাধ্যমে—Universal Tolerance Cartoon Festival। নরওয়েজিয়ান কার্টুনিস্টদের পাশাপাশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শিল্পীর অংশগ্রহণে এই আয়োজনটি সহনশীলতাকে রাজনৈতিক কার্টুনের দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যাখ্যা করে; কারও পরিচয়, জাতিগত বৈশিষ্ট্য বা বিশ্বাসকে আঘাত না করে কিভাবে মতপ্রকাশ করা যায়, এবং কিভাবে ব্যঙ্গচিত্রও শান্তি ও বৈচিত্র্যের প্রতীক হতে পারে—এগুলো উৎসবের কেন্দ্রীয় আলোচনা হয়ে ওঠে। শিল্পভিত্তিক এই উদযাপন সাধারণ মানুষের কাছে সহনশীলতার বার্তাকে আরও সহজ করে তোলে।

আন্তর্জাতিক ও আন্তঃরাষ্ট্রীয় স্তরে ইউনেস্কো সবচেয়ে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে। তাদের ঘোষণায় সহনশীলতার মূলনীতি প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি তারা শিক্ষা উপকরণ, শিক্ষক প্রশিক্ষণ নির্দেশিকা, অনলাইন হেটস্পিচ মোকাবিলার নীতি, সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের প্রচারণা এবং মানবাধিকারচর্চা নিয়ে বার্ষিক কার্যক্রম প্রচার করে। ইউনেস্কো প্রতি দুই বছরে “Madanjeet Singh Prize for the Promotion of Tolerance and Non-Violence” প্রদান করে, যা সহনশীলতা, অহিংসা ও মানবিক মূল্যবোধ প্রচারে বৈশ্বিক অবদানের স্বীকৃতি দেয়। এতে শান্তিকর্মী, মানবাধিকার সংগঠন, শিল্পী বা গবেষকেরা সম্মানিত হন।

এছাড়া বহু দেশে সুশীল সমাজের সংগঠন, বিশ্ববিদ্যালয়, আন্তঃধর্মীয় সংলাপ কেন্দ্র, মানবাধিকার কমিশন ও যুব সংগঠন স্থানীয় পর্যায়ে ওয়েবিনার, সচেতনতামূলক প্রচারণা, সংস্কৃতি–বিনিময় অধিবেশন, আর্ট ও ফটোগ্রাফি প্রদর্শনী, নাটক বা আলোচনা সভার আয়োজন করে। ডিজিটাল যুগে অনেক দেশে সোশ্যাল মিডিয়া ক্যাম্পেইনও এর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠেছে, যেখানে ঘৃণাভাষা শনাক্তকরণ, হেটস্পিচ প্রতিহত করার উপায়, বৈচিত্র্যমূলক গল্প বলার চর্চা এবং সংখ্যালঘু কণ্ঠকে প্রধানধারায় আনার উদ্যোগ থাকে।

সব মিলিয়ে, বিভিন্ন দেশে উদযাপনের ধরন আলাদা হলেও সার্বজনীন লক্ষ্য একই—মানুষের পার্থক্যকে ভয় বা শত্রুতা নয়, শক্তি এবং মানবিক সৌন্দর্যের অংশ হিসেবে দেখা; বিদ্বেষ ও বৈষম্য থেকে নিরাপদ সামাজিক পরিবেশ গড়ে তোলা; এবং সংলাপ, সংস্কৃতি ও শিক্ষার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পথ প্রশস্ত করা। এই বহুমাত্রিক উদযাপন প্রমাণ করে যে সহনশীলতা আজ আর কেবল একটি দার্শনিক ধারণা নয়—এটি বিশ্বব্যাপী সামাজিক স্থিতিশীলতা, মানবিক নিরাপত্তা এবং সম্মানভিত্তিক ভবিষ্যতের জরুরি অনুষঙ্গ।

অতিমাত্রায় সহিংসতার তথ্যগত প্রেক্ষাপট এই চাহিদার গুরুত্বকে বাড়িয়ে তোলে। সাম্প্রতিক রিপোর্ট অনুযায়ী, BHBC (বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ইউনিটি কাউন্সিল) বলেছে যে ২০২৪ সালের আগস্ট থেকে ২০২৫-এর প্রথমার্ধ পর্যন্ত প্রায় *২,৪৪২টি* কমিউনাল হামলার ঘটনা ঘটেছে — যার মধ্যে ছিল গৃহসংহার, মন্দির এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ওপর হামলা, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ এবং নারী সংმ-লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা। ([The Economic Times][2]) একই সময়ে, পুলিশ একটি রিপোর্টে জানায় যে অনেক “সাম্প্রদায়িক” অভিযোগ আসলে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে পাওয়া গেছে — তাদের বিশ্লেষণে ১,২৩৪টি ঘটনার রাজনৈতিক উৎস ছিল, মাত্র ২০টি প্রকৃত কমিউনাল অভিযোগ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

এই তথ্য বিশেষভাবে উদ্বেগের কারণ যে সহনশীলতা শুধু গৃহ হামলা বা মন্দিরের ভাঙচুর আত্মসাৎ করা মানে নয়; এটি রাষ্ট্রীয় ন্যায্যতার চাহিদাও প্রতিফলন করে। অনেক সংখ্যালঘু সম্প্রদায় অভিযোগ করে যে তাদের শোষণ, ভূমি দখল এবং সম্পত্তি লুট করা হচ্ছে রাজনৈতিক শক্তি ও স্থানীয় ক্ষমতার সঙ্গে গাঁথা যায়। ([Vatican News][1]) এমন পরিস্থিতিতে সহনশীলতা শুধু সমাজে পারস্পরিক শ্রদ্ধা গড়ে তোলার বিষয়ে নয়, বরং রাজনৈতিক কাঠামোর অন্তর্নিহিত বৈষম্য এবং ক্ষমতা অস্বচ্ছতার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গঠনের একটি মাপকাঠি।

আরেকটি গুরুত্বপুর্ণ দৃষ্টিকোণ হলো সংবাদ মাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সংখ্যালঘুদের অভিজ্ঞতা ও নিরাপত্তা বিষয়ে প্রতিবেদন-সংলাপ। সাম্প্রতিক গবেষণা দেখায় যে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়গুলো সামাজিক মিডিয়ায় ভয় এবং সায়বার হুমকির সঙ্গে বসবাস করছে, যা তাদের প্রকাশ এবং অংশগ্রহণ সীমিত করে। ([arXiv][4]) মিডিয়ায় নেতিবাচক স্টিরিওটাইপ, ভয়-রাজনীতি এবং তথ্য-অসামঞ্জস্য তাদের সামাজিক অবস্থান আরও সংকীর্ণ করতে পারে। এর ফলে, সহনশীলতার ধারণা কেবল পরিচয়গত শ্রদ্ধার প্রশ্ন হয় না — এটি নিরাপদ তথ্যপ্রদানে, সংলাপ গড়ে তোলার এবং গণতান্ত্রিক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার ক্ষেত্রেও অপরিহার্য।

শিক্ষাগত এবং নীতি-গঠনের মাত্রায়, ইসলামিক ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধা গড়ে তোলার জন্য রাষ্ট্র এবং সুশীল সমাজ উভয় পক্ষের আরও সক্রিয় ভূমিকা দরকার। বাংলাদেশের সংবিধান নাগরিকদের ধর্মনির্বাচন ও ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকার প্রদান করলেও, বাস্তবতায় এই অধিকার আচরণগতভাবে সুরক্ষিত নাও হতে পারে, বিশেষ করে রাজনৈতিক অস্থিরতার সময়। বিশেষভাবে জরুরি একটি সমন্বিত কৌশল, যেখানে শিক্ষা, আইন প্রয়োগের দৃষ্টান্ত, এবং স্থানীয় কমিউনিটি নেতৃত্ব একসাথে কাজ করবে, যাতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় নিজস্ব নিরাপত্তা অনুভবে এবং সহনশীলতা সামাজিক ন্যায্যতার পুরো কাঠামোর অংশ হয়ে উঠতে পারে।

সার্বিকভাবে, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে “সহনশীলতা” আরও বেশি চতুর এবং বহুমাত্রিক ধারণা — এটি রাষ্ট্রীয় ন্যায়ের চাহিদা, গণতান্ত্রিক অংশগ্রহণ, সামাজিক নিরাপত্তা, এবং পারস্পরিক মর্যাদার একটি বাধ্যতামূলক ভিত্তি। সহনশীলতা শুধুমাত্র এক আন্তরিক নৈতিক মূল্যবোধ নয়, বরং সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও প্রতিনিধি মর্যাদাকে নিশ্চিত করার জন্য রাষ্ট্র এবং সমাজ উভয়ের জন্য এক বাস্তব এবং সময়োপযোগী চ্যালেঞ্জ।

সহনশীলতা পালনের উদ্দেশ্য আসলে মানবসমাজের গভীরতম নিরাপত্তা ও শান্তির ভিত্তি নির্মাণ করা—এই উপলব্ধি থেকেই এর প্রয়োজনীয়তা উদ্ভাসিত হয়। ভিন্ন পরিচয়, ভিন্ন ভাষা, ভিন্ন ধর্ম, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শ কিংবা ভিন্ন জীবনযাপন পদ্ধতি—এসব বৈচিত্র্য পৃথিবীর বাস্তব এবং অনিবার্য বৈশিষ্ট্য। এই বৈচিত্র্যকে ভয় বা দ্বন্দ্বের কারণ নয়, বরং মানবসমাজের বুদ্ধিবৃত্তিক, নৈতিক ও সাংস্কৃতিক শক্তি হিসেবে গ্রহণ করানোই সহনশীলতার মূল লক্ষ্য। তাই এই চর্চাকে প্রতিষ্ঠা করা মানে মানুষের মধ্যকার অবিশ্বাস, পূর্বধারণা, জাতিগত বিদ্বেষ কিংবা ধর্মীয় বিভাজনকে জ্ঞানের আলোয় ভেঙে দেওয়া।

এই প্রয়াস মূলত তিনটি স্তরে কার্যকর হয়—একটি নৈতিক-মানসিক স্তর, একটি সামাজিক-রাজনৈতিক স্তর এবং একটি দীর্ঘমেয়াদি মানবিক উন্নয়নের স্তর। নৈতিক স্তরে লক্ষ্য থাকে মানুষকে এমন বোধে অভ্যস্ত করা যাতে তারা অপরকে “অন্য” হিসেবে নয়, বরং “সহাবস্থানকারী মানবসত্তা” হিসেবে দেখতে শেখে। এটি ঘৃণা, হিংসা বা প্রতিশোধের মনোভাবকে দুর্বল করে এবং মানুষকে সহমর্মিতা, ধৈর্য, সংলাপ ও বোঝাপড়ার দিকে নিয়ে যায়।

সামাজিক-রাজনৈতিক স্তরে সহনশীলতার উদ্দেশ্য আরও গভীর। রাষ্ট্র বা সমাজ যত বহুধর্মী ও বহুজাতিক হয়, ততই সংঘাতের সম্ভাবনা বেড়ে যায়—কিন্তু সেই সম্ভাবনাকে নিয়ন্ত্রণ করে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে হলে প্রয়োজন এমন এক সামাজিক কাঠামো, যেখানে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সম্মানিত, এবং রাজনৈতিক বিরোধ বৈরিতা নয় বরং যুক্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে সমাধান পায়। এই কারণে সহনশীলতা আধুনিক রাষ্ট্রনীতির সঙ্গে নাগরিক অধিকার, আইনের শাসন, এবং বহুধর্মী সমাজব্যবস্থা রক্ষার এক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আর দীর্ঘমেয়াদি মানবিক উন্নয়নে সহনশীলতার উদ্দেশ্য হচ্ছে একটি টেকসই ভবিষ্যৎ গড়ে তোলা, যেখানে শিক্ষা, বিজ্ঞান, সংস্কৃতি এবং নৈতিক মূল্যবোধ মানুষের জীবনকে প্রগতির পথে পরিচালিত করবে। অসহিষ্ণুতা শুধু মানবসম্পর্ক নষ্ট করে না; এটি অর্থনীতি, উন্নয়ন, প্রযুক্তি, গবেষণা, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা—সব ক্ষেত্রেই অগ্রগতি ব্যাহত করে। তাই সহনশীলতা গড়ে তোলা মানে অর্থনৈতিক উন্নয়ন, বৌদ্ধিক বিকাশ এবং শান্তিপূর্ণ বৈশ্বিক সম্পর্কের জন্য ভূমি প্রস্তুত করা।

সহনশীলতা পালনের উদ্দেশ্য কোনো আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; এটি মানবসভ্যতার সবচেয়ে মৌলিক বাস্তবতা—এই পৃথিবীতে আমরা ভিন্ন হলেও আমাদের ভবিষ্যৎ পরস্পরনির্ভর। পারস্পরিক সম্মান, ন্যায়বিচার, সহাবস্থান এবং শান্তির ভিত্তিতে টিকে থাকা একটি সমাজ গড়ে তুলতে হলে সহনশীলতার চর্চাকে প্রতিদিনের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ করে তুলতে হবে। অসহিষ্ণুতার প্রতিটি ক্ষুদ্র বীজ থেকে যে সংঘাত, সহিংসতা এবং বৈরিতার ঝড় জন্ম নেয়, সহনশীলতার চর্চাই সেই ঝড় থামানোর সবচেয়ে শক্তিশালী, সবচেয়ে মানবিক উপায়।

উপরোক্ত বিশ্লেষণে যে আন্তর্জাতিক তথ্য, রিপোর্ট, সংবাদ ও গবেষণার উল্লেখ রয়েছে, সেগুলোর অধিকাংশই সাম্প্রতিক বৈশ্বিক ও দেশিক প্রেক্ষাপটে সহনশীলতা, ঘৃণাজনিত সহিংসতা, সংখ্যালঘু নিরাপত্তা ও মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে কাজ করা সংস্থা, গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও সংবাদমাধ্যম থেকে সংগৃহীত। ইউনেস্কোর Declaration of Principles on Tolerance (১৬ নভেম্বর ১৯৯৫) এবং জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের রেজুলেশন 51/95–এর ওপর ভিত্তি করে আন্তর্জাতিক সহনশীলতা দিবসের প্রতিষ্ঠার যে তথ্য দেওয়া হয়েছে, তা ইউনেস্কো এবং জাতিসংঘের সরকারি নথি থেকে সংগৃহীত। ইউনেস্কো সহনশীলতা নিয়ে বার্ষিক প্রতিবেদন, শিক্ষা নির্দেশিকা, এবং “Madanjeet Singh Prize for the Promotion of Tolerance and Non-Violence”–সংক্রান্ত প্রকাশনাগুলোর মাধ্যমে বৈচিত্র্য, অহিংসা, এবং বৈষম্য প্রতিরোধে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি ও নীতিমালা ব্যাখ্যা করেছে—উপস্থাপিত তথ্যগুলো সেই নথিগুলোর ওপর নির্ভরশীল।

বিশ্বব্যাপী ঘৃণাজনিত অপরাধ ও বৈষম্যের পরিসংখ্যান সম্পর্কে যে আলোচনা এসেছে, তার উৎস প্রধানত OSCE–ODIHR–এর (Organization for Security and Co-operation in Europe – Office for Democratic Institutions and Human Rights) বার্ষিক Hate Crime Report. ২০২৩ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী যে ৪৮টি রাষ্ট্রের সরকারি ডেটা সংগ্রহ এবং মৌখিক অপব্যবহার বা হেটস্পিচের উচ্চ হার (প্রায় ৭০ শতাংশ) উল্লেখ করা হয়েছে, তা ODIHR-এর ইনসিডেন্ট ট্র্যাকিং সিস্টেম এবং দেশভিত্তিক রিপোর্টের সূত্রে নেওয়া। এ রিপোর্টে সরকারি তথ্যের পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থা, নাগরিক সংগঠন এবং আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের তথ্যও যুক্ত থাকে।

যুক্তরাষ্ট্রে মুসলিমবিরোধী অভিযোগ বৃদ্ধির যে তথ্য উল্লেখ আছে, তা CAIR (Council on American-Islamic Relations)–এর ২০২৩ সালের Civil Rights Report এবং মার্কিন মুসলিমদের ওপর হয়রানির অভিজ্ঞতা নিয়ে তাদের বার্ষিক জরিপ থেকে নেওয়া। সেখানে ২০২২ সালের তুলনায় অভিযোগ ৫৬ শতাংশ বাড়ার যে তথ্য দেওয়া হয়েছে, তা CAIR-এর প্রকাশিত পরিসংখ্যান। একই সঙ্গে ইহুদি ও মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতি বৈরিতার অনুভবসংক্রান্ত শতাংশের তথ্য যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকারভিত্তিক কিছু গবেষণা এবং সমীক্ষা-ভিত্তিক প্রতিবেদনের ওপর নির্ভর করে, যা ঘৃণাজনিত ঝুঁকি বৃদ্ধির সামগ্রিক চিত্র তুলে ধরে।

বাংলাদেশে সহনশীলতা ও সংখ্যালঘু নিরাপত্তার প্রেক্ষাপটে যেসব পরিসংখ্যান উল্লেখ করা হয়েছে—বিশেষ করে ২০২৪ সালের আগস্ট থেকে ২০২৫ সালের প্রথমার্ধ পর্যন্ত ২,৪৪২টি হামলার তথ্য—তা ভারতীয় সংবাদমাধ্যম The Economic Times প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে সংগ্রহ করা, যেখানে তথ্যসূত্র ছিল বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ (BHBCUC)। সেখানে সংখ্যালঘুদের ওপর গৃহসংহার, মন্দির আক্রমণ, অগ্নিসংযোগ ও নারী নির্যাতনের ঘটনাকে সাম্প্রতিক পরিস্থিতির অংশ হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে। পাশাপাশি বাংলাদেশ পুলিশ যে ১,২৩৪টি অভিযোগ রাজনৈতিক উৎস থেকে এসেছে এবং মাত্র ২০টি প্রকৃত সাম্প্রদায়িক হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে—এই বিশ্লেষণটিও ওই প্রতিবেদনেই উপস্থাপিত।

বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুর অনুপাত (৮–৯ শতাংশ) এবং তাদের অভিজ্ঞতা নিয়ে যে তথ্য এসেছে, তা Vatican News–এর একটি বিশ্লেষণধর্মী রিপোর্ট থেকে নেওয়া, যেখানে সাম্প্রতিক সহিংসতা, ভূমি দখল, রাজনৈতিক প্রভাবাধীন নিপীড়ন এবং ধর্মীয় স্বাধীনতার প্রশ্নে সংখ্যালঘুদের উদ্বেগ তুলে ধরা হয়েছে। এই উৎসগুলো সংখ্যালঘু নিরাপত্তার কাঠামোগত দুর্বলতা ব্যাখ্যা করে, যা সহনশীলতার প্রয়োজনীয়তা আরও স্পষ্ট করে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সংখ্যালঘুদের ওপর ভয়, সায়বার হুমকি এবং তথ্য-অসাম্যতার যে উল্লেখ আছে, তা arXiv-এ প্রকাশিত সাম্প্রতিক গবেষণাপত্রগুলোর ওপর ভিত্তি করে, যেখানে অনলাইন ঘৃণাচর্চা, অ্যালগরিদমিক বৈষম্য এবং সংখ্যালঘু কণ্ঠের দমন নিয়ে একাধিক গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে। এ গবেষণাগুলো দেখায় কীভাবে অনলাইন-পরিবেশ সংখ্যালঘুদের অংশগ্রহণ সীমিত করে এবং নিরাপত্তাহীনতার চাপ তৈরি করে।

আন্তর্জাতিকভাবে বিভিন্ন দেশে সহনশীলতা দিবস ঘিরে যে কার্যক্রমের বর্ণনা এসেছে—ওমানের ধর্ম ও ওয়াকফ মন্ত্রণালয়ের বার্ষিক আন্তঃধর্মীয় সংলাপ, রাশিয়ার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, নরওয়ের Universal Tolerance Cartoon Festival—এসবই সংশ্লিষ্ট দেশের সরকারি ওয়েবসাইট, সংবাদমাধ্যম ও আন্তর্জাতিক সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের ঘোষণাগুলো থেকে সংগৃহীত বর্ণনা।

এভাবে মোট তথ্যগুলো আন্তর্জাতিক সংস্থা (UNESCO, UNGA, OSCE/ODIHR), মানবাধিকার সংস্থা (CAIR), গবেষণা ডেটাবেস (arXiv), আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম (The Economic Times, Vatican News), এবং দেশভিত্তিক সরকারি বিবৃতি থেকে সংগৃহীত। উপস্থাপিত বিশ্লেষণ এই উৎসগুলোর সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান, রিপোর্ট এবং গবেষণা তথ্য একত্র করে সহনশীলতার প্রয়োজনীয়তা, সামাজিক নিরাপত্তা, বৈচিত্র্যের মূল্য এবং সংখ্যালঘুদের বাস্তব অভিজ্ঞতা—সবটি মিলিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রেক্ষাপট তৈরি করেছে।

লেখক : গণমাধ্যমকর্মী।