আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : বরিশালের গৌরনদীতে পৃথক স্থান থেকে তিনজনের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এরমধ্যে দুইজন হত্যাকান্ডের শিকার এবং অপরজন আত্মহত্যা করেছে বলে জানিয়েছেন নিহতের পরিবারের সদস্যরা। 

নিহতরা হলেন- উপজেলার খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের কমলাপুর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা জাহাঙ্গীর মাষ্টারের ছেলে ও উপজেলা যুবলীগের সদস্য আমিনুল ইসলাম (৪২), নলচিড়া ইউনিয়নের চররমজানপুর গ্রামের সুধাংশু মন্ডলের স্ত্রী সবিতা মন্ডল (৬০) ও নলচিড়া ইউনিয়নের বদরপুর গ্রামের আক্কাস হাওলাদারের স্ত্রী ইভা বেগম (২১)।

নিহত যুবলীগ নেতা আমিনুলের স্বজনরা অভিযোগ করে বলেন, শনিবার দিবাগত রাত দশটার দিকে হাত-মুখ ধোয়ার কথা বলে বাসা থেকে বের হয় আমিনুল। এরপর আর বাসায় ফিরেনি সে। রোববার সকালে নিহতের বাড়ির সামনের পুকুর থেকে আমিনুলের লাশ উদ্ধার করা হয়। আমিনুলকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন স্বজনরা।

নিহত সবিতা মন্ডলের স্বজনরা অভিযোগ করে বলেন, শনিবার দিবাগত রাতে ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ করে বাসায় একা ঘুমিয়ে ছিলেন সবিতা। রোববার সকালে ঘুম থেকে না উঠায় বাড়ির লোকজন তাকে ডাকতে গিয়ে দেখেন ঘরের দরজা খোলা এবং আসবাবপত্র এলোমেলো। পরবর্তীতে বিছানায় সবিতা মন্ডলের লাশ দেখে থানা পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।

নিহতের স্বজনদের ধারনা, পূর্ব থেকে সংঘবদ্ধ দুর্বৃত্তরা ঘরের মধ্যে লুকিয়ে ছিলো। রাতে সুযোগ বুঝে ঘরের মালামাল লুট করার সময় সবিতা বাঁধা প্রদান করায় তাকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করা হয়েছে। উল্লেখ যে, সবিতা মন্ডলের একমাত্র ছেলে সুকুমার গত কয়েকদিন পূর্বে গ্রীস থেকে দেশে এসেছেন। গতকাল ঘটনার রাতে স্ত্রীকে নিয়ে বোনের বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন।

অপরদিকে শনিবার রাতে নলচিড়া ইউনিয়নের বদরপুর গ্রামের আক্কাস হাওলাদারের চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী ইভা বেগম (২১) বাবার বাড়ি থেকে স্বামীর বাড়িতে ফিরেই পরিবারের সবার অজান্তে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে জানিয়েছেন নিহতের স্বামী আক্কাস। নিহত ইভা মুলাদী উপজেলার কাচির চর গ্রামের আনোয়ার আকনের মেয়ে। গত পাঁচ মাস পূর্বে আক্কাসের সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছিলো। তবে কি কারনে সে আত্মহত্যা করেছে তা জানাতে পারেননি কেউ।

গৌরনদী মডেল থানার ওসি মো. তরিকুল ইসলাম জানিয়েছেন- তিনটি লাশই উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। ময়না তদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে মৃত্যুর সঠিক কারন জানা যাবে। তিনি আরও বলেন, মৃত্যুর কারনগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নিহতের পরিবারের কেউ লিখিত অভিযোগ দিলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

(টিবি/এসপি/নভেম্বর ১৬, ২০২৫)